প্রত্যাশা ডেস্ক: গত শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিয়ে সারলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিজেপির সাবেক সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) ৬১ বছরে পা দিলেন এই নেতা। বিয়ে করলেন দলেরই এক নারী নেত্রী রিঙ্কু মজুমদারকে। ২০২১-এ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে রিঙ্কুর পরিচয়, ২০২৫-এ বিয়ে।
রিঙ্কুর বাড়ি কলকাতার সল্টলেকের নিউটাউনেই। আর দিলীপ ঘোষের আসল বাড়ি ঝাড়গ্রামে থাকলেও তিনি এখন থাকেন কলকাতার সল্টলেকের নিউটাউনের আবাসিক এলাকায়। দিলীপের মা থাকেন গ্রামের বাড়িতে। ৮৫ বছর বয়সী মা অনেকটা একাই গ্রামে থাকতেন। বিয়ের জন্য সপ্তাহখানেক আগে নিউটাউনের ছেলের বাড়িতে এসেছেন, বিয়ে দিয়েছেন।
জানা গেছে, মায়ের পীড়াপীড়িতে দিলীপ ঘোষ রাজি হন বিয়েতে। রাস্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএসের দীক্ষা নেওয়া দিলীপ ঘোষ সংগঠনের রীতি মেনে বিয়ে করেননি এত দিন।
রিঙ্কু আগে বিয়ে করেছিলেন, তবে অনেক দিন আগেই তাঁর ডিভোর্স হয়ে গেছে। তাঁর এক ছেলে রয়েছে সৃঞ্জয় নামে। ছেলে তাঁর মায়ের বিয়েতে সায় দিয়েছেন। তবে বিয়েতে আসতে পারেননি। এখন কাজ করছেন কলকাতার সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের তথ্যপ্রযুক্তি এলাকায়। সৃঞ্জয় বলেছেন, দিলীপ ঘোষকে তিনি বাবা বলেই ডাকবেন।
একেবারে হিন্দু শাস্ত্রমতে বিয়ে করলেন দিলীপ ঘোষ ও রিঙ্কু মজুমদার। ব্যতিক্রম ছিল শুধু একটি। সাধারণত হিন্দু মেয়েদের বিয়ে হয় তাঁদের বাপের বাড়িতে। এ ক্ষেত্রে রিঙ্কুর বিয়ে হয়েছে পাত্র দিলীপ ঘোষের সল্টলেকের বাড়িতে। আগেই রিঙ্কু নিউটাউনের একটি পার্লারে গিয়ে সাজসজ্জা সেরে নববধূর বেশে চলে আসেন দিলীপ ঘোষের বাড়িতে। পরেন হলুদ-সবুজ মিনাখচিত লাল বেনারসি, গলায় সোনার চেইন, কপালে টিকলি, কানে লম্বা দুল, নাকে নথ, মাথায় শোলার মুকুট ও কপালে ছোট টিপ। আর দিলীপ ঘোষ পরেন সাদা ধুতি পাঞ্জাবি, গলায় গেরুয়া উত্তরীয় আর মাথায় শোলার টোপর। আর দুজনের গলায় ছিল লাল গোলাপসহ রজনীগন্ধার বিয়ের মালা। হিন্দু শাস্ত্রমতে দিলীপ–রিঙ্কুর বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ে হয়েছে একেবারে অনাড়ম্বরভাবে। দিলীপ ঘোষের নিকটতম কিছু আত্মীয় আর দলের দু–চারজন নেতার উপস্থিতিতে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। জানা গেছে, দলের কর্মীদের চাপে দিলীপ ঘোষ বিবাহোত্তর এক অনুষ্ঠান করবেন। এই বিয়েতে শুভেচ্ছা জানাতে দিলীপ ঘোষের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাবেক সভাপতি রাহুল সিনহা, শমিক ভট্টাচার্য, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সুনীল বনশল, মঙ্গল পান্ডে, অমিতাভ চক্রবর্তী, শতীশ ঢোল প্রমুখ নেতারা।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফুলের তোড়া এবং সঙ্গে একটি শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়ে দিলীপ ঘোষের বিবাহিত জীবন সুখের ও সুন্দর হওয়ার কামনা করেছেন।
বিয়ের পর দিলীপ ঘোষ বলেছেন, তিনি এক দিনের জন্য ছুটি নিয়েছেন। আজ ভোর থেকেই শুরু হবে তাঁর দলের জন্য কাজকর্ম। কারণ, তিনি এখনো দলের একজন একনিষ্ঠ কর্মী। আরো বলেন, বৃদ্ধ মায়ের চাপে এবং রিঙ্কুর প্রস্তাবে সায় দিয়ে তিনি এই বিয়েতে সম্মত হন।
সাংবাদিকেরা নববিবাহিত স্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কোথায় হবে তাঁদের মধুচন্দ্রিমা? উত্তরে রিঙ্কু বলেন, ঠিক হয়নি। হয়তো কোনো নির্জন জায়গায়। কারণ, জনবহুল এলাকায় দিলীপ ঘোষ গেলে সেখানে প্রচণ্ড ভিড় হয়ে যাবে।