ঢাকা ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

৫৯ শতাংশ উপজেলা হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন নেই : জরিপ

  • আপডেট সময় : ১১:৪১:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : দেশের ৫৯ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে মেশিন নেই। অর্থাৎ বাকি ৪১ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে পরিষেবা পান রোগীরা। ফলে ৫৯ শতাংশ সরকারি হাসপাতালের রোগীদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে এক্স-রে করাতে হয়। তবে জেলা হাসপাতালের ক্ষেত্রে ৮৮ দশমিক ৯ শতাংশ এক্স-রে মেশিনের কার্যক্রম রয়েছে। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিক্স বিভাগের প্রকাশিত এক জরিপ গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে। গবেষণাটি ৯টি জেলা হাসপাতাল ও ১৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওপর করা হয়। গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন গবেষক দলের প্রধান এবং পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান। ফলাফলে উঠে আসে, দেশের শতভাগ জেলা হাসপাতালে রক্ত পরিসঞ্চালন সেবা থাকলেও ৪১ দশমিক ২ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ সেবা পাওয়া যায়নি। এছাড়া ৮৮ দশমিক ৯ শতাংশ জেলা হাসপাতাল এবং ৭৬ দশমিক ৫ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইসিজি পরিষেবা পাওয়া গেছে। আল্ট্রাসনোগ্রাম সুবিধা পাওয়া গেছে ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ জেলা হাসপাতালে এবং ১১ দশমিক ৮ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নারী রোগীদের অথবা অ্যাটেনডেন্টদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা খুবই কম। ৭৮ শতাংশ জেলা হাসপাতাল এবং ৬৫ শতাংশ উপজেলা হাসপাতালে এ ব্যবস্থা নেই। এছাড়া জেলা-উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকের বড় ঘাটতি রয়েছে। গবেষণায় উঠে আসে, জেলা হাসপাতালে ৩০ শতাংশ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬৩ শতাংশ আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদে চিকিৎসক নেই। এছাড়া জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে জেলা হাসপাতালে ৫১ শতাংশ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭৭ শতাংশ পদ শূন্য। জরিপে দেখা গেছে, একটি জেলা হাসপাতালেও চিকিৎসকদের ব্যবহার উপযোগী ডরমিটরি বা কোয়ার্টার নেই। গবেষণা প্রতিবেদনে উপজেলা ও জেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নানা চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়।
অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ : প্রয়োজনের তুলনায় কম, ছোট, পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ সেবাকক্ষ, অপরিচ্ছন্ন টয়লেট এবং নিরাপদ পানির অভাব, অনুপযুক্ত হসপিটাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মেডিকেল অফিসার/ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান/সহায়ক কর্মী সংকট, অতিরিক চাপ, সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সরঞ্জাম প্রযুক্তির অভাবকে অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিকিৎসকরা চিহ্নিত করেছেন।
অন্য সুবিধাভোগীদের প্রভাব ও নিরাপত্তার অভাব সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ : কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতার অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ ও প্রভাব, কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কিছু স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীর অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের সেবাদানকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়।
নীতি সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ : উচ্চশিক্ষা বা প্রশিক্ষণের সুযোগের অভাব, কর্মক্ষেত্রে বদলি বৈষম্য, অর্জিত জ্ঞান বাস্তবায়নে সুযোগের অভাব, বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে বৈষম্য চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ।
পারিপার্শ্বিক পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ : জীর্ণশীর্ণ আবাসন ব্যবস্থা, শিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা সুবিধার অভাব, দুর্বল যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের অবস্থানকে নিরুৎসাহিত করে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

৫৯ শতাংশ উপজেলা হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন নেই : জরিপ

আপডেট সময় : ১১:৪১:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : দেশের ৫৯ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে মেশিন নেই। অর্থাৎ বাকি ৪১ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে পরিষেবা পান রোগীরা। ফলে ৫৯ শতাংশ সরকারি হাসপাতালের রোগীদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে এক্স-রে করাতে হয়। তবে জেলা হাসপাতালের ক্ষেত্রে ৮৮ দশমিক ৯ শতাংশ এক্স-রে মেশিনের কার্যক্রম রয়েছে। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিক্স বিভাগের প্রকাশিত এক জরিপ গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে। গবেষণাটি ৯টি জেলা হাসপাতাল ও ১৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওপর করা হয়। গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন গবেষক দলের প্রধান এবং পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান। ফলাফলে উঠে আসে, দেশের শতভাগ জেলা হাসপাতালে রক্ত পরিসঞ্চালন সেবা থাকলেও ৪১ দশমিক ২ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ সেবা পাওয়া যায়নি। এছাড়া ৮৮ দশমিক ৯ শতাংশ জেলা হাসপাতাল এবং ৭৬ দশমিক ৫ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইসিজি পরিষেবা পাওয়া গেছে। আল্ট্রাসনোগ্রাম সুবিধা পাওয়া গেছে ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ জেলা হাসপাতালে এবং ১১ দশমিক ৮ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নারী রোগীদের অথবা অ্যাটেনডেন্টদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা খুবই কম। ৭৮ শতাংশ জেলা হাসপাতাল এবং ৬৫ শতাংশ উপজেলা হাসপাতালে এ ব্যবস্থা নেই। এছাড়া জেলা-উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকের বড় ঘাটতি রয়েছে। গবেষণায় উঠে আসে, জেলা হাসপাতালে ৩০ শতাংশ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬৩ শতাংশ আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদে চিকিৎসক নেই। এছাড়া জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে জেলা হাসপাতালে ৫১ শতাংশ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭৭ শতাংশ পদ শূন্য। জরিপে দেখা গেছে, একটি জেলা হাসপাতালেও চিকিৎসকদের ব্যবহার উপযোগী ডরমিটরি বা কোয়ার্টার নেই। গবেষণা প্রতিবেদনে উপজেলা ও জেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নানা চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়।
অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ : প্রয়োজনের তুলনায় কম, ছোট, পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ সেবাকক্ষ, অপরিচ্ছন্ন টয়লেট এবং নিরাপদ পানির অভাব, অনুপযুক্ত হসপিটাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মেডিকেল অফিসার/ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান/সহায়ক কর্মী সংকট, অতিরিক চাপ, সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সরঞ্জাম প্রযুক্তির অভাবকে অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিকিৎসকরা চিহ্নিত করেছেন।
অন্য সুবিধাভোগীদের প্রভাব ও নিরাপত্তার অভাব সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ : কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতার অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ ও প্রভাব, কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কিছু স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীর অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের সেবাদানকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়।
নীতি সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ : উচ্চশিক্ষা বা প্রশিক্ষণের সুযোগের অভাব, কর্মক্ষেত্রে বদলি বৈষম্য, অর্জিত জ্ঞান বাস্তবায়নে সুযোগের অভাব, বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে বৈষম্য চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ।
পারিপার্শ্বিক পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ : জীর্ণশীর্ণ আবাসন ব্যবস্থা, শিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা সুবিধার অভাব, দুর্বল যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের অবস্থানকে নিরুৎসাহিত করে।