নিজস্ব প্রতিবেদক : মূল মজুরি ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে পোশাক শ্রমিকদের জন্য সাড়ে ১২ হাজার টাকা সর্বনি¤œ মজুরি নির্ধারণ করেছে সরকার, যা আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি ঘোষণা করেন। তার আগে শ্রম ভবনে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে গঠিত বোর্ডের ষষ্ঠ সভায় এই মজুরি চূড়ান্ত করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আসার আগে শ্রম প্রতিমন্ত্রী সচিবালয়ে তার দপ্তরে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী মালিক ও শ্রমিক পক্ষকে নিয়ে সর্বনি¤œ মজুরি ঘোষণা করা হল। দীর্ঘ দিন শ্রমজীবী মানুষ আন্দোলন করে আসছে মজুরি বৃদ্ধির জন্য। “মালিকদের বলব ফ্যাক্টরি খুলে দেবেন, শ্রমিকদের বলব কাজে যোগদান করতে। ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট বহাল আছে।”
সবশেষ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে পাঁচ বছরের জন্য পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি ঘোষণা করে সরকার। সে অনুযায়ী আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নতুন মজুরি ঘোষণা করার দাবি ছিল শ্রমিকদের। পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতমমজুরি ঠিক করতে গত এপ্রিলে নি¤œতম মজুর বোর্ড গঠন করে সরকার। গত ২২ অক্টোবর এই বোর্ডের চতুর্থ সভায় শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতমমজুরি প্রস্তাব করেন। আর মালিকপক্ষ ১০ হাজার ৪০০ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। ন্যূনতমমজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে– এমন কথা ছড়িয়ে পড়লে ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরে আন্দোলন শুরু করেন পোশাক শ্রমিকরা। পরে তা আশুলিয়া, সাভার ও ঢাকার মিরপুরে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক জায়গায় শ্রমিকরা ভাংচুর শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সংঘাতে এবং এক কারখানায় আগুন দেওয়ার ঘটনায় প্রাণ যায় অন্তত দুইজনের। পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যায়ক্রমে পাঁচ শতাধিক কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকরা মঙ্গলবারও গাজীপুরে দুই বাসে আগুন দিয়ে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
নতুন মজুরি গ্রহণযোগ্য: শ্রমিক প্রতিনিধি: ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে পোশাকশ্রমিকদের নতুন ন্যূনতমমজুরি গ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছেন শ্রমিক প্রতিনিধি। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে মজুরি ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নি¤œতম মজুরি বোর্ডের শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি এ কথা জানান। সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘আমি ৪০ বছর ধরে এ শিল্প খাতে কাজ করছি। আমাদের বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নিতে হবে। শ্রমিকরা যাতে কর্মচ্যুত না হন, তাদের যেন বাড়ি ফিরে যেতে না হয়, তাদের অবস্থা আমাদের দেখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন, সে অনুসারে আমরা মনে করি এটা বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বেঁচে থাকার জন্য মোটামুটি একটা অবস্থায় গিয়ে দাঁড়াবে। এটা গ্রহণযোগ্য।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি রনি বলেন, ‘আমরা খুশির অবস্থায় নেই। রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন পরিস্থিতি মিলিয়ে আমরা এটা মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমরা খুশিও না, বেজারও না। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকলেও আমরা আপাতত এটা মেনে নিয়েছি।’
৫৬.২৫% বাড়িয়ে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২,৫০০ টাকা নির্ধারণ
৫৬.২৫% বাড়িয়ে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২,৫০০ টাকা নির্ধারণ
জনপ্রিয় সংবাদ