ঢাকা ০১:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

৫০ বছরে এই প্রথম চাঁদের নমুনা ‘ধার এল’ যুক্তরাজ্যে

  • আপডেট সময় : ০৭:২৭:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: ৫০ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে আনা চাঁদের পাথরের নমুনা প্রথমবার যুক্তরাজ্যে এসেছে, যেটি ধার দিয়েছে চীন।

অতি ক্ষুদ্র আকারের এসব ধূলিকণা এখন ইংল্যান্ডের মিলটন কেইন্স শহরের এক ইউনিভার্সিটি’র গবেষণাগারে সুরক্ষিত অবস্থায় রাখা আছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

এ দুষ্প্রাপ্য উপাদানটি ধার হিসেবে পেয়েছেন যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানী প্রফেসর মাহেশ আনন্দ। এটিকে ‘সোনার ধূলির চেয়েও দামী’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।

প্রফেসর আনন্দ বলেছেন, এর আগে চীনের এসব নমুনায় বিশ্বের কারোরই প্রবেশাধিকার ছিল না। তাই এটি এক বিরাট সম্মান ও সৌভাগ্যের বিষয়।

এসব ধূলিকণাকে পিষে ও লেজার দিয়ে বিশ্লেষণ করে চাঁদের গঠনের পেছনের মৌলিক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে চাইছে প্রফেসর আনন্দের গবেষণা দলটি এবং এর মাধ্যমে পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কেও তারা জানবেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

চাঁদের এ ধূলিকণার ভেতরে এমন প্রমাণ থাকতে পারে, যা বিজ্ঞানীদের একটি বিশেষ তত্ত্বের সত্যতা জানতে ও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। এ তত্ত্ব বলছে, সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে পৃথিবীর সঙ্গে মঙ্গল গ্রহের আকারের এক গ্রহের সংঘর্ষে ছিটকে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকে তৈরি হয়েছিল চাঁদ।

২০২০ সালে নিজেদের চাঙ’ই-৫ মহাকাশ মিশনের সময় চাঁদের এসব পাথর সংগ্রহ করেছিল চীন। ওই সময় চাঁদের ‘মন্স রুমকার’ নামের এক আগ্নেয়গিরিময় অঞ্চলে অবতরণ করেছিল মহাকাশযানটি। চাঁদের মাটি খুঁড়ে প্রায় ২ কেজি নমুনা সংগ্রহ করে মহাকাশযানটির এক রোবটিক হাত, যা একটি ক্যাপসুলে করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়। চীনের মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে অবতরণ করেছিল ক্যাপসুলটি। ১৯৭৬ সালের সোভিয়েত মিশনের পর চাঁদ থেকে সফলভাবে নমুনা আনার অভিযান এটিই প্রথম, যা চীনকে নতুন মহাকাশ প্রতিযোগিতায় প্রথম সারিতে নিয়ে গিয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
এখন, মহাকাশবিজ্ঞানীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো সাতজন আন্তর্জাতিক গবেষককে চাঁদের ওই নমুনা গবেষণার জন্য দিয়েছে চীন, যাতে নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারেন তারা।
গত সপ্তাহে চীনের বেইজিংয়ে আয়োজিত এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে এসব ক্ষুদ্র কাঁচের শিশি প্রফেসর আনন্দের হাতে তুলে দিয়েছেন চীনের গবেষকরা। এ অনুষ্ঠানে রাশিয়া, জাপান, পাকিস্তান ও ইউরোপের সহকর্মীদের সঙ্গেও দেখা করেছেন আনন্দ। তিনি বলেছেন, এটা যেন একেবারে অন্য এক দুনিয়ার অভিজ্ঞতা ছিল। আর মহাকাশ কর্মসূচিতে বিনিয়োগের দিক থেকে আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে চীন।

যুক্তরাজ্যে এ অমূল্য জিনিসটি নিয়ে ফিরে আসেন আনন্দ। এরপর মিলটন কেইন্স শহরের ‘ওপেন ইউনিভার্সিটি’র গবেষণাগারে উচ্চ নিরাপত্তা সম্পন্ন কক্ষের পরিবেশে একেবারে ধুলাবালিমুক্ত অবস্থায় চাঁদের ধুলিকণার শিশি রেখেছেন তিনি, যাতে করে এতে কোনো রকম দূষণ না ঘটে।

পৃথিবীর উপাদানের সঙ্গে যদি এই মহাজাগতিক ধূলিকণা মিশে যায় তাহলে প্রফেসর আনন্দের গবেষণা দলটির এ নিয়ে বিশ্লেষণ চিরতরে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

চাঁদের ধুলো দেখতে খুব সাধারণ লাগলেও, এর মহাজাগতিক যাত্রাপথের কথা ভাবলে ‘আবেগে মাথা নত হয়ে আসে’। প্রফেসর আনন্দ বলেছেন, তাদের এর চেয়ে বেশি পরিমাণ চাঁদের ধূলিকণার দরকার নেই, সব মিলিয়ে এই ৬০ মিলিগ্রামই যথেষ্ট। তিনি বলেছেন, এতো কম পরিমাণই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এইটুকুই আমাদের আগামী অনেক বছর ব্যস্ত রাখবে, কারণ আমরা ক্ষুদ্র উপাদান নিয়েই দীর্ঘদিনে ধরে গবেষণা করায় পারদর্শী।
এ শিশি খোলার পর চাঁদের ধূলিকণার ওপর সরাসরি কাজ করবেন ‘ওপেন ইউনিভার্সিটি’র গবেষণাগারের টেকনিশিয়ান কাই নাইট। তিনি গত ৩৬ বছর ধরে পাথরের টুকরা কাটা ও ঘষার কাজ করছেন। তবে এই প্রথমবারের মতো এমন কিছুতে কাজ করবেন তিনি যা সরাসরি চাঁদের মাটি থেকে আনা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আমি দারুণ রোমাঞ্চিত। কিন্তু নার্ভাসও লাগছে। কারণ এসব নমুনা খুব বেশি নয়। এগুলো নতুন করে এভাবে সহজে আনাও সম্ভব নয়। তাই ঝুঁকি অনেক।

তিনি এসব নমুনা প্রস্তুত করার পর সেগুলো যাবে আরো দুটি পরীক্ষাগারে। এতে রয়েছে অসংখ্য নল, ভাল্ভ আর তারের জালের মতো সাজানো জটিল যন্ত্র।

এ যন্ত্রটি ১৯৯০-এর দশকের শুরু থেকে তৈরি করে আসছেন ‘ওপেন ইউনিভার্সিটি’র টেকনিশিয়ান সাশা ভারচোভস্কি। তিনি বলেছেন, পরীক্ষাগারের ছোট সিলিন্ডারের মধ্যে এসব ধূলিকণা গরম করা যাবে ১৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায়। এতে কার্বন, নাইট্রোজেন ও নোবল গ্যাস আলাদা করতে পারবেন তারা। এ প্রযুক্তি একেবারেই অনন্য ও আলাদা। প্রফেসর আনন্দ বিশ্বাস করেন, তার ল্যাব যে এসব দুর্লভ নমুনা পাওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছে, এটাই সেইসব কারণের মধ্যে একটি। গবেষণা প্রযুক্তিবিদ জেমস ম্যালি এমন এক যন্ত্র পরিচালনা করেন, যা এসব ধূলিকণার মধ্যে কতটুকু অক্সিজেন রয়েছে তা নির্ণয় করতে পারে।

তিনি বলেছেন, আমি এই ট্রে-এর ওপর থাকা কণাটিকে লেজার দিয়ে আঘাত করব। ওটা জ্বলে উঠবে। আর দেখা যাবে সেটা ভিতরের দিকে কীভাবে গলে যাচ্ছে।

এ গবেষণার জন্য গবেষণা দলটির হাতে সময় আছে এক বছর। তবে গবেষণার শেষ পর্যায়ে গিয়ে এসব মূল্যবান নমুনার বেশিরভাগই ধ্বংস হয়ে যাবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

এদিকে, চাঙ’ই-৫ মিশনের পর চাঁদ অভিযানে আরো এগিয়ে গিয়েছে চীন। ২০২৪ সালে তাদের চাঙ’ই-৬ অভিযান চাঁদের অদেখা ‘ফার সাইড’ থেকে প্রথমবারের মতো নমুনা নিয়ে ফিরে এসেছে। চাঁদের এই অদেখা দিক এক রহস্যময় অঞ্চল, যেখানে হয়তো বহু আগেই থেমে যাওয়া আগ্নেয়গিরির লাভা প্রবাহের প্রমাণ থাকতে পারে।

আমি দৃঢ়ভাবে আশা করি এটা চীন ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতারই সূচনা, বলেছেন প্রফেসর আনন্দ। আমাদের অনেকের ক্যারিয়ার তৈরি হয়েছে অ্যাপোলো মিশনে আনা নমুনা নিয়ে কাজ করে। আমার ধারণা, এটা সত্যিই এক দারুণ ঐতিহ্য। আশা করি বিশ্বের অন্যান্য দেশও এ পথ অনুসরণ করবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বজ্রপাতে একদিনে ১০ জনের মৃত্যু

৫০ বছরে এই প্রথম চাঁদের নমুনা ‘ধার এল’ যুক্তরাজ্যে

আপডেট সময় : ০৭:২৭:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: ৫০ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে আনা চাঁদের পাথরের নমুনা প্রথমবার যুক্তরাজ্যে এসেছে, যেটি ধার দিয়েছে চীন।

অতি ক্ষুদ্র আকারের এসব ধূলিকণা এখন ইংল্যান্ডের মিলটন কেইন্স শহরের এক ইউনিভার্সিটি’র গবেষণাগারে সুরক্ষিত অবস্থায় রাখা আছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

এ দুষ্প্রাপ্য উপাদানটি ধার হিসেবে পেয়েছেন যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানী প্রফেসর মাহেশ আনন্দ। এটিকে ‘সোনার ধূলির চেয়েও দামী’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।

প্রফেসর আনন্দ বলেছেন, এর আগে চীনের এসব নমুনায় বিশ্বের কারোরই প্রবেশাধিকার ছিল না। তাই এটি এক বিরাট সম্মান ও সৌভাগ্যের বিষয়।

এসব ধূলিকণাকে পিষে ও লেজার দিয়ে বিশ্লেষণ করে চাঁদের গঠনের পেছনের মৌলিক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে চাইছে প্রফেসর আনন্দের গবেষণা দলটি এবং এর মাধ্যমে পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কেও তারা জানবেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

চাঁদের এ ধূলিকণার ভেতরে এমন প্রমাণ থাকতে পারে, যা বিজ্ঞানীদের একটি বিশেষ তত্ত্বের সত্যতা জানতে ও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। এ তত্ত্ব বলছে, সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে পৃথিবীর সঙ্গে মঙ্গল গ্রহের আকারের এক গ্রহের সংঘর্ষে ছিটকে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকে তৈরি হয়েছিল চাঁদ।

২০২০ সালে নিজেদের চাঙ’ই-৫ মহাকাশ মিশনের সময় চাঁদের এসব পাথর সংগ্রহ করেছিল চীন। ওই সময় চাঁদের ‘মন্স রুমকার’ নামের এক আগ্নেয়গিরিময় অঞ্চলে অবতরণ করেছিল মহাকাশযানটি। চাঁদের মাটি খুঁড়ে প্রায় ২ কেজি নমুনা সংগ্রহ করে মহাকাশযানটির এক রোবটিক হাত, যা একটি ক্যাপসুলে করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়। চীনের মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে অবতরণ করেছিল ক্যাপসুলটি। ১৯৭৬ সালের সোভিয়েত মিশনের পর চাঁদ থেকে সফলভাবে নমুনা আনার অভিযান এটিই প্রথম, যা চীনকে নতুন মহাকাশ প্রতিযোগিতায় প্রথম সারিতে নিয়ে গিয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
এখন, মহাকাশবিজ্ঞানীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো সাতজন আন্তর্জাতিক গবেষককে চাঁদের ওই নমুনা গবেষণার জন্য দিয়েছে চীন, যাতে নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারেন তারা।
গত সপ্তাহে চীনের বেইজিংয়ে আয়োজিত এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে এসব ক্ষুদ্র কাঁচের শিশি প্রফেসর আনন্দের হাতে তুলে দিয়েছেন চীনের গবেষকরা। এ অনুষ্ঠানে রাশিয়া, জাপান, পাকিস্তান ও ইউরোপের সহকর্মীদের সঙ্গেও দেখা করেছেন আনন্দ। তিনি বলেছেন, এটা যেন একেবারে অন্য এক দুনিয়ার অভিজ্ঞতা ছিল। আর মহাকাশ কর্মসূচিতে বিনিয়োগের দিক থেকে আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে চীন।

যুক্তরাজ্যে এ অমূল্য জিনিসটি নিয়ে ফিরে আসেন আনন্দ। এরপর মিলটন কেইন্স শহরের ‘ওপেন ইউনিভার্সিটি’র গবেষণাগারে উচ্চ নিরাপত্তা সম্পন্ন কক্ষের পরিবেশে একেবারে ধুলাবালিমুক্ত অবস্থায় চাঁদের ধুলিকণার শিশি রেখেছেন তিনি, যাতে করে এতে কোনো রকম দূষণ না ঘটে।

পৃথিবীর উপাদানের সঙ্গে যদি এই মহাজাগতিক ধূলিকণা মিশে যায় তাহলে প্রফেসর আনন্দের গবেষণা দলটির এ নিয়ে বিশ্লেষণ চিরতরে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

চাঁদের ধুলো দেখতে খুব সাধারণ লাগলেও, এর মহাজাগতিক যাত্রাপথের কথা ভাবলে ‘আবেগে মাথা নত হয়ে আসে’। প্রফেসর আনন্দ বলেছেন, তাদের এর চেয়ে বেশি পরিমাণ চাঁদের ধূলিকণার দরকার নেই, সব মিলিয়ে এই ৬০ মিলিগ্রামই যথেষ্ট। তিনি বলেছেন, এতো কম পরিমাণই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এইটুকুই আমাদের আগামী অনেক বছর ব্যস্ত রাখবে, কারণ আমরা ক্ষুদ্র উপাদান নিয়েই দীর্ঘদিনে ধরে গবেষণা করায় পারদর্শী।
এ শিশি খোলার পর চাঁদের ধূলিকণার ওপর সরাসরি কাজ করবেন ‘ওপেন ইউনিভার্সিটি’র গবেষণাগারের টেকনিশিয়ান কাই নাইট। তিনি গত ৩৬ বছর ধরে পাথরের টুকরা কাটা ও ঘষার কাজ করছেন। তবে এই প্রথমবারের মতো এমন কিছুতে কাজ করবেন তিনি যা সরাসরি চাঁদের মাটি থেকে আনা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আমি দারুণ রোমাঞ্চিত। কিন্তু নার্ভাসও লাগছে। কারণ এসব নমুনা খুব বেশি নয়। এগুলো নতুন করে এভাবে সহজে আনাও সম্ভব নয়। তাই ঝুঁকি অনেক।

তিনি এসব নমুনা প্রস্তুত করার পর সেগুলো যাবে আরো দুটি পরীক্ষাগারে। এতে রয়েছে অসংখ্য নল, ভাল্ভ আর তারের জালের মতো সাজানো জটিল যন্ত্র।

এ যন্ত্রটি ১৯৯০-এর দশকের শুরু থেকে তৈরি করে আসছেন ‘ওপেন ইউনিভার্সিটি’র টেকনিশিয়ান সাশা ভারচোভস্কি। তিনি বলেছেন, পরীক্ষাগারের ছোট সিলিন্ডারের মধ্যে এসব ধূলিকণা গরম করা যাবে ১৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায়। এতে কার্বন, নাইট্রোজেন ও নোবল গ্যাস আলাদা করতে পারবেন তারা। এ প্রযুক্তি একেবারেই অনন্য ও আলাদা। প্রফেসর আনন্দ বিশ্বাস করেন, তার ল্যাব যে এসব দুর্লভ নমুনা পাওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছে, এটাই সেইসব কারণের মধ্যে একটি। গবেষণা প্রযুক্তিবিদ জেমস ম্যালি এমন এক যন্ত্র পরিচালনা করেন, যা এসব ধূলিকণার মধ্যে কতটুকু অক্সিজেন রয়েছে তা নির্ণয় করতে পারে।

তিনি বলেছেন, আমি এই ট্রে-এর ওপর থাকা কণাটিকে লেজার দিয়ে আঘাত করব। ওটা জ্বলে উঠবে। আর দেখা যাবে সেটা ভিতরের দিকে কীভাবে গলে যাচ্ছে।

এ গবেষণার জন্য গবেষণা দলটির হাতে সময় আছে এক বছর। তবে গবেষণার শেষ পর্যায়ে গিয়ে এসব মূল্যবান নমুনার বেশিরভাগই ধ্বংস হয়ে যাবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

এদিকে, চাঙ’ই-৫ মিশনের পর চাঁদ অভিযানে আরো এগিয়ে গিয়েছে চীন। ২০২৪ সালে তাদের চাঙ’ই-৬ অভিযান চাঁদের অদেখা ‘ফার সাইড’ থেকে প্রথমবারের মতো নমুনা নিয়ে ফিরে এসেছে। চাঁদের এই অদেখা দিক এক রহস্যময় অঞ্চল, যেখানে হয়তো বহু আগেই থেমে যাওয়া আগ্নেয়গিরির লাভা প্রবাহের প্রমাণ থাকতে পারে।

আমি দৃঢ়ভাবে আশা করি এটা চীন ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতারই সূচনা, বলেছেন প্রফেসর আনন্দ। আমাদের অনেকের ক্যারিয়ার তৈরি হয়েছে অ্যাপোলো মিশনে আনা নমুনা নিয়ে কাজ করে। আমার ধারণা, এটা সত্যিই এক দারুণ ঐতিহ্য। আশা করি বিশ্বের অন্যান্য দেশও এ পথ অনুসরণ করবে।