ঢাকা ০২:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫
সমীক্ষা প্রতিবেদন

৪-৬ বার ইলিশের হাতবদল, প্রতিবার দাম বাড়ে ৬০%

  • আপডেট সময় : ০১:২৮:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে একটা ইলিশ চার থেকে ছয়বার হাতবদল হয় এবং প্রতিবারই ৬০ শতাংশের মতো দাম বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)।

সমীক্ষা প্রতিবেদনের বরাতে ট্যারিফ কমিশন বলছে, ইলিশ আহরণের খরচও বেড়ে গেছে। প্রতি কেজি ইলিশ আহরণে এবার জেলেদের খরচ পড়ছে ৪৮৭ টাকা। এসব কারণে আগের বছরের তুলনায় এবার বাজারে প্রতিকেজি ইলিশের দাম ২০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ার কথা বলছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি।

আগের বছরের তুলনায় এবার নদীর মোহনায়
ইলিশের পরিমাণ দুই-তৃতীয়াংশ কমে গেছে

ট্যারিফ কমিশন সুপারিশ করেছে, ইলিশের খুচরা মূল্য যেন মাছের আকার ও ওজন অনুযায়ী নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
সমীক্ষা প্রতিবেদনটি রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রকাশ করে কমিশন। তবে সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয় বৃহস্পতিবার। প্রতিবেদনে ইলিশের দাম বৃদ্ধির জন্য কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছে কমিশন। এর মধ্যে ভরা মৌসুমে কম দাম কিনে হিমাগাড়ে সংরক্ষণ করে পরে চড়া দামে বিক্রি করার কথাও বলা হয়েছে। এজন্য আড়ৎদারদের দায়ী করেছে কমিশন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইলিশ মাছ রপ্তানি নিষিদ্ধ থাকলেও প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করার সুযোগ থাকায় অভ্যন্তরীণ বাজারে ঘাটতি বেড়েছে।

বাজারে ইলিশের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এর কারণ অনুসন্ধান, সরবরাহ ব্যবস্থা পর্যালোচনা, প্রতি কেজি ইলিশ সংগ্রহে ব্যয়, সংরক্ষণ ব্যয়, সরকারের নীতি সহায়তা, রপ্তানি ও রপ্তানির মূল্য পর্যালোচনা করতে এ সমীক্ষা চালায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের বছরের তুলনায় এবার নদীর মোহনায় ইলিশের পরিমাণ দুই-তৃতীয়াংশ কমেছে। পাশাপাশি গভীর সমুদ্রেও ইলিশের সংগ্রহ কমে গেছে। এতে জেলেদের ট্রলার খরচ একই হলেও মাছ কম পাওয়ায় প্রতি কেজি ইলিশ সংগ্রহের পেছনে গড় ব্যয় বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইলিশ মাছ জেলে থেকে মাছ ঘাট, আড়তদার, পাইকার ও খুচরা বিক্রেতা হয়ে ভোক্তার হাতে যায়। চার থেকে ছয়বার হতবদলের প্রতিবারই দাম বাড়ে ৫৯ থেকে ৬০ শতাংশ।

গত আগস্টের ইলিশের বাজার সম্পর্কে সমীক্ষায় বলা হয়, এই সময়ে বাজারে আড়াইশ গ্রাম থেকে ৪৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ছিল ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা, ৫০০ গ্রাম থেকে ৭৫০ গ্রাম ওজনের এক হাজার ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম থেকে এক কেজির দর এক হাজার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, এক কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের দাম দুই হাজার ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ও দেড় কেজির বেশি ওজনের ইলিশের কেজির মূল্য ছিল দুই হাজার ৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের বছরের আগস্ট মাসে দেড় কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দর ছিল এক হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা।

আর এক কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশের দর ছিল এক হাজার ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। এই দুই শ্রেণির ইলিশের দাম গত বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি অর্থ্যাৎ ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা বেড়েছে। আড়াইশ গ্রাম থেকে এক কেজির কম ওজনের ইলিশের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা প্রতিকেজিতে।

রাষ্ট্রের আরেক সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, রোববার ঢাকার বাজারে আকারভেদে প্রতি ইলিশ বিক্রি হয় ৯০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২০০ টাকা দরে। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরেই ঢাকার বাজারে এই দরে কেনা-বেচা হচ্ছে ইলিশ।
সানা/আপ্র/২৯/০৯/২০২৫

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সমীক্ষা প্রতিবেদন

৪-৬ বার ইলিশের হাতবদল, প্রতিবার দাম বাড়ে ৬০%

আপডেট সময় : ০১:২৮:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে একটা ইলিশ চার থেকে ছয়বার হাতবদল হয় এবং প্রতিবারই ৬০ শতাংশের মতো দাম বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)।

সমীক্ষা প্রতিবেদনের বরাতে ট্যারিফ কমিশন বলছে, ইলিশ আহরণের খরচও বেড়ে গেছে। প্রতি কেজি ইলিশ আহরণে এবার জেলেদের খরচ পড়ছে ৪৮৭ টাকা। এসব কারণে আগের বছরের তুলনায় এবার বাজারে প্রতিকেজি ইলিশের দাম ২০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ার কথা বলছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি।

আগের বছরের তুলনায় এবার নদীর মোহনায়
ইলিশের পরিমাণ দুই-তৃতীয়াংশ কমে গেছে

ট্যারিফ কমিশন সুপারিশ করেছে, ইলিশের খুচরা মূল্য যেন মাছের আকার ও ওজন অনুযায়ী নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
সমীক্ষা প্রতিবেদনটি রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রকাশ করে কমিশন। তবে সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয় বৃহস্পতিবার। প্রতিবেদনে ইলিশের দাম বৃদ্ধির জন্য কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছে কমিশন। এর মধ্যে ভরা মৌসুমে কম দাম কিনে হিমাগাড়ে সংরক্ষণ করে পরে চড়া দামে বিক্রি করার কথাও বলা হয়েছে। এজন্য আড়ৎদারদের দায়ী করেছে কমিশন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইলিশ মাছ রপ্তানি নিষিদ্ধ থাকলেও প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করার সুযোগ থাকায় অভ্যন্তরীণ বাজারে ঘাটতি বেড়েছে।

বাজারে ইলিশের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এর কারণ অনুসন্ধান, সরবরাহ ব্যবস্থা পর্যালোচনা, প্রতি কেজি ইলিশ সংগ্রহে ব্যয়, সংরক্ষণ ব্যয়, সরকারের নীতি সহায়তা, রপ্তানি ও রপ্তানির মূল্য পর্যালোচনা করতে এ সমীক্ষা চালায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের বছরের তুলনায় এবার নদীর মোহনায় ইলিশের পরিমাণ দুই-তৃতীয়াংশ কমেছে। পাশাপাশি গভীর সমুদ্রেও ইলিশের সংগ্রহ কমে গেছে। এতে জেলেদের ট্রলার খরচ একই হলেও মাছ কম পাওয়ায় প্রতি কেজি ইলিশ সংগ্রহের পেছনে গড় ব্যয় বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইলিশ মাছ জেলে থেকে মাছ ঘাট, আড়তদার, পাইকার ও খুচরা বিক্রেতা হয়ে ভোক্তার হাতে যায়। চার থেকে ছয়বার হতবদলের প্রতিবারই দাম বাড়ে ৫৯ থেকে ৬০ শতাংশ।

গত আগস্টের ইলিশের বাজার সম্পর্কে সমীক্ষায় বলা হয়, এই সময়ে বাজারে আড়াইশ গ্রাম থেকে ৪৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ছিল ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা, ৫০০ গ্রাম থেকে ৭৫০ গ্রাম ওজনের এক হাজার ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম থেকে এক কেজির দর এক হাজার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, এক কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের দাম দুই হাজার ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ও দেড় কেজির বেশি ওজনের ইলিশের কেজির মূল্য ছিল দুই হাজার ৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের বছরের আগস্ট মাসে দেড় কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দর ছিল এক হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা।

আর এক কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশের দর ছিল এক হাজার ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। এই দুই শ্রেণির ইলিশের দাম গত বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি অর্থ্যাৎ ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা বেড়েছে। আড়াইশ গ্রাম থেকে এক কেজির কম ওজনের ইলিশের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা প্রতিকেজিতে।

রাষ্ট্রের আরেক সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, রোববার ঢাকার বাজারে আকারভেদে প্রতি ইলিশ বিক্রি হয় ৯০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২০০ টাকা দরে। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরেই ঢাকার বাজারে এই দরে কেনা-বেচা হচ্ছে ইলিশ।
সানা/আপ্র/২৯/০৯/২০২৫