ঢাকা ০৮:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা

  • আপডেট সময় : ০৫:৪০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনসহ সময় বাড়ানোর দাবিতে টানা আন্দোলনের পর অবশেষে পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন, পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সুযোগ না দেওয়া, পুরোনো ও নতুন পরীক্ষার্থীর মধ্যে বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি তৈরি এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দমন–পীড়নের কারণে ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত হয়েছে।

পরীক্ষার্থীদের দাবি, লিখিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি না বদলানোয় বহু শিক্ষার্থী বাস্তবিকভাবে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। তাই ‘মানবিক বিবেচনা’ থেকে পরীক্ষাটি পিছিয়ে নেওয়ার আহ্বান আর গুরুত্ব পায়নি বলেই তারা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার্থী ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাইফ মুরাদ। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করলেও তাদের অবস্থার প্রকৃত চিত্র অনেকেই জানেন না। জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ ঠিক নয়। অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষাটি বর্জন করবেন। পরীক্ষায় অস্বাভাবিকভাবে কম উপস্থিতি হলে পরবর্তী সময়ে পুনরায় পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলনে নামার কথাও জানান তিনি।

সাইফ মুরাদ বলেন, গত ৩০ দিন ধরে তারা বিভিন্ন সময় পিএসসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দরজায় গিয়ে সমস্যার সমাধান চেয়েছেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছি। আমরা প্রথম ৩০ দিন রাস্তায় যাইনি। মানুষ জানতেও পারেনি আমরা আন্দোলন করছি। কিন্তু দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় শেষ দিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কর্মসূচি দিতে হয়েছে। এতে মানুষকে কিছুটা ভোগান্তিতে ফেলতে হয়েছে—এর জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।

তিনি বলেন, দেশে এমন একটি সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে যেখানে পেশিশক্তির ওপর ভিত্তি করে বহু অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া হয়। অথচ তাদের দাবি ছিল শুধু সময়। যাতে নতুন পরীক্ষার্থীরা প্রস্তুতির সুযোগ পায় এবং পুরোনো পরীক্ষার্থীদের তুলনায় প্রতিযোগিতায় বৈষম্যে না পড়েন।

লিখিত পরীক্ষার রুটিন নিয়ে তিনি বলেন, পুরোনো পরীক্ষার্থীরা মাত্র তিন মাস আগে আরেকটি লিখিত পরীক্ষা দিয়ে এসেছেন। ফলে তারা প্রস্তুত থাকতে পারেন। কিন্তু নতুন পরীক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। এটিকে ‘বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।

এ-সময় সাইফ মুরাদ অভিযোগ করেন, তাদের আন্দোলনের সময় ৪০–৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। কারও মাথায় ১০ টিরও বেশি সেলাই লেগেছে। আহত অবস্থায় পরীক্ষায় বসা অসম্ভব হলেও পিএসসি বা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধিই খোঁজ নেননি বলে দাবি তার।

তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক কোনো স্লোগান দিইনি। আমরা শুধু ন্যায্য প্রতিযোগিতার সুযোগ চেয়েছি। কিন্তু পিএসসির চেয়ারম্যান নিজের রোডম্যাপের জেদে পরীক্ষাটা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন।

অপরদিকে, এখন পর্যন্ত আগের সিদ্ধান্তেই অটল রয়েছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। কমিশন জানিয়েছে, ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামীকাল ২৭ নভেম্বরই শুরু হবে।

দেশের ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ—এই আটটি কেন্দ্রে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে পদ–সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয় পরীক্ষা শুধুমাত্র ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়েছে।

এসি/আপ্র/২৬/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা

আপডেট সময় : ০৫:৪০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনসহ সময় বাড়ানোর দাবিতে টানা আন্দোলনের পর অবশেষে পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন, পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সুযোগ না দেওয়া, পুরোনো ও নতুন পরীক্ষার্থীর মধ্যে বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি তৈরি এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দমন–পীড়নের কারণে ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত হয়েছে।

পরীক্ষার্থীদের দাবি, লিখিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি না বদলানোয় বহু শিক্ষার্থী বাস্তবিকভাবে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। তাই ‘মানবিক বিবেচনা’ থেকে পরীক্ষাটি পিছিয়ে নেওয়ার আহ্বান আর গুরুত্ব পায়নি বলেই তারা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার্থী ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাইফ মুরাদ। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করলেও তাদের অবস্থার প্রকৃত চিত্র অনেকেই জানেন না। জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ ঠিক নয়। অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষাটি বর্জন করবেন। পরীক্ষায় অস্বাভাবিকভাবে কম উপস্থিতি হলে পরবর্তী সময়ে পুনরায় পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলনে নামার কথাও জানান তিনি।

সাইফ মুরাদ বলেন, গত ৩০ দিন ধরে তারা বিভিন্ন সময় পিএসসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দরজায় গিয়ে সমস্যার সমাধান চেয়েছেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছি। আমরা প্রথম ৩০ দিন রাস্তায় যাইনি। মানুষ জানতেও পারেনি আমরা আন্দোলন করছি। কিন্তু দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় শেষ দিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কর্মসূচি দিতে হয়েছে। এতে মানুষকে কিছুটা ভোগান্তিতে ফেলতে হয়েছে—এর জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।

তিনি বলেন, দেশে এমন একটি সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে যেখানে পেশিশক্তির ওপর ভিত্তি করে বহু অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া হয়। অথচ তাদের দাবি ছিল শুধু সময়। যাতে নতুন পরীক্ষার্থীরা প্রস্তুতির সুযোগ পায় এবং পুরোনো পরীক্ষার্থীদের তুলনায় প্রতিযোগিতায় বৈষম্যে না পড়েন।

লিখিত পরীক্ষার রুটিন নিয়ে তিনি বলেন, পুরোনো পরীক্ষার্থীরা মাত্র তিন মাস আগে আরেকটি লিখিত পরীক্ষা দিয়ে এসেছেন। ফলে তারা প্রস্তুত থাকতে পারেন। কিন্তু নতুন পরীক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। এটিকে ‘বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।

এ-সময় সাইফ মুরাদ অভিযোগ করেন, তাদের আন্দোলনের সময় ৪০–৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। কারও মাথায় ১০ টিরও বেশি সেলাই লেগেছে। আহত অবস্থায় পরীক্ষায় বসা অসম্ভব হলেও পিএসসি বা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধিই খোঁজ নেননি বলে দাবি তার।

তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক কোনো স্লোগান দিইনি। আমরা শুধু ন্যায্য প্রতিযোগিতার সুযোগ চেয়েছি। কিন্তু পিএসসির চেয়ারম্যান নিজের রোডম্যাপের জেদে পরীক্ষাটা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন।

অপরদিকে, এখন পর্যন্ত আগের সিদ্ধান্তেই অটল রয়েছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। কমিশন জানিয়েছে, ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামীকাল ২৭ নভেম্বরই শুরু হবে।

দেশের ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ—এই আটটি কেন্দ্রে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে পদ–সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয় পরীক্ষা শুধুমাত্র ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়েছে।

এসি/আপ্র/২৬/১১/২০২৫