ঢাকা ১০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

৩৬ বার অপারেশন, ৯৭ দিন পর ঘরে ফিরলো মাইলস্টোনের সেই শিক্ষার্থী

  • আপডেট সময় : ০৭:৫৯:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনার ৯৭ দিন পর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাভিদ নেওয়াজ (১৩)।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা তাকে ছাড়পত্র দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক ডা. মারুফুল ইসলাম বলেন, গত ২১ জুলাই ওই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নাভিদের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। ঘটনার পরদিন সিএমএইচ থেকে তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়। সে সময় ক্রমাগত তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। তাই পরিবারকে পরপর দুইবার মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছিল—যেকোনো সময় দুঃসংবাদ আসতে পারে।

তবে চিকিৎসকরা হাল ছাড়েননি জানিয়ে তিনি বলেন, মোট ২২ দিন নাভিদ আইসিইউতে ভর্তি ছিল। এর মধ্যে ১০ দিন তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। এরপর ৩৫ দিন ছিল হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ)। পরবর্তীতে ৪০ দিন কেবিনে থাকার পর সোমবার সুস্থ হয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছে সে।

ডা. মারুফুল ইসলাম আরও বলেন, নাভিদের মোট ৩৬ বার ছোট-বড় অপারেশন হয়েছে। শরীরের ক্ষতস্থানে চামড়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে ৮ বার, যা এই দুর্ঘটনায় অন্য কোনো দগ্ধ রোগীর ক্ষেত্রে হয়নি।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, নাভিদকে যেদিন এখানে আনা হয়, সেদিন সে বারবার বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিল, ‘আমাকে বাঁচান, আমি কি বাঁচব?’ দুর্ঘটনায় পুড়ে যাওয়ার পর তার ফুসফুসে পানি জমেছিল। এজন্য তাকে উপুড় করে শুইয়ে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসা দিতে হয়েছে, যা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল। সেই অবস্থা থেকে সে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে।

তিনি আরও জানান, ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় এখনো পাঁচজন দগ্ধ শিক্ষার্থী ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছে। তবে তারাও ভালো আছে। আশা করা যাচ্ছে, সপ্তাহখানেকের মধ্যেই তারাও বাড়ি ফিরবে।

দীর্ঘ ৯৭ দিন পর ছেলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নাভিদের বাবা মিজানুর রহমান। পাশাপাশি তিনি দেশবাসীর কাছে ছেলেসহ ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য দোয়া চেয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুর সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই দাউ দাউ করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। সেদিনের সেই আগুনে পুড়ে ও ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়ে স্কুলের বহু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রাণ হারান।

ওআ/আপ্র/২৭/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান ফায়ার সার্ভিস ডিজির

৩৬ বার অপারেশন, ৯৭ দিন পর ঘরে ফিরলো মাইলস্টোনের সেই শিক্ষার্থী

আপডেট সময় : ০৭:৫৯:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনার ৯৭ দিন পর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাভিদ নেওয়াজ (১৩)।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা তাকে ছাড়পত্র দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক ডা. মারুফুল ইসলাম বলেন, গত ২১ জুলাই ওই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নাভিদের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। ঘটনার পরদিন সিএমএইচ থেকে তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়। সে সময় ক্রমাগত তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। তাই পরিবারকে পরপর দুইবার মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছিল—যেকোনো সময় দুঃসংবাদ আসতে পারে।

তবে চিকিৎসকরা হাল ছাড়েননি জানিয়ে তিনি বলেন, মোট ২২ দিন নাভিদ আইসিইউতে ভর্তি ছিল। এর মধ্যে ১০ দিন তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। এরপর ৩৫ দিন ছিল হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ)। পরবর্তীতে ৪০ দিন কেবিনে থাকার পর সোমবার সুস্থ হয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছে সে।

ডা. মারুফুল ইসলাম আরও বলেন, নাভিদের মোট ৩৬ বার ছোট-বড় অপারেশন হয়েছে। শরীরের ক্ষতস্থানে চামড়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে ৮ বার, যা এই দুর্ঘটনায় অন্য কোনো দগ্ধ রোগীর ক্ষেত্রে হয়নি।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, নাভিদকে যেদিন এখানে আনা হয়, সেদিন সে বারবার বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিল, ‘আমাকে বাঁচান, আমি কি বাঁচব?’ দুর্ঘটনায় পুড়ে যাওয়ার পর তার ফুসফুসে পানি জমেছিল। এজন্য তাকে উপুড় করে শুইয়ে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসা দিতে হয়েছে, যা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল। সেই অবস্থা থেকে সে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে।

তিনি আরও জানান, ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় এখনো পাঁচজন দগ্ধ শিক্ষার্থী ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছে। তবে তারাও ভালো আছে। আশা করা যাচ্ছে, সপ্তাহখানেকের মধ্যেই তারাও বাড়ি ফিরবে।

দীর্ঘ ৯৭ দিন পর ছেলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নাভিদের বাবা মিজানুর রহমান। পাশাপাশি তিনি দেশবাসীর কাছে ছেলেসহ ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য দোয়া চেয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুর সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই দাউ দাউ করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। সেদিনের সেই আগুনে পুড়ে ও ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়ে স্কুলের বহু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রাণ হারান।

ওআ/আপ্র/২৭/১০/২০২৫