ঢাকা ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫

৩০ বছর আগের ভ্রূণ থেকে শিশুর জন্ম

  • আপডেট সময় : ০১:০৪:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক:যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে এক দম্পতির ঘরে জন্ম নিয়েছে এক শিশু, যার ভ্রূণ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিমায়িত অবস্থায় সংরক্ষিত ছিল। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় সংরক্ষিত থাকা ভ্রূণ থেকে জীবিত শিশু জন্মের নতুন রেকর্ড। ৩৫ বছর বয়সি লিন্ডসি ও তার স্বামী ৩৪ বছর বয়সি টিম পিয়ার্স সম্প্রতি তাদের সন্তান থাডিয়াস ড্যানিয়েল পিয়ার্সের জন্মের খবর জানান। ভ্রূণটি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৪ সালে, ৬২ বছর বয়সি লিন্ডা আর্চার্ড ও তার তখনকার স্বামীর আইভিএফ চিকিৎসার মাধ্যমে। লিন্ডার শর্ত ছিল ভ্রূণটি যেন যুক্তরাষ্ট্রেই থাকে এবং তা কোনো বিবাহিত শ্বেতাঙ্গ খ্রিষ্টান দম্পতির হাতে যায়।

গত সপ্তাহে এক মার্কিন দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিমায়িত অবস্থায় থাকা একটি ভ্রূণ থেকে জন্ম হয় তার।

লিন্ডসে এবং টিম পিয়ার্স দম্পতি বহু বছর ধরে একটি সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অবশেষে সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান দিয়েছেন। তারা দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সংরক্ষণ করা একটি ভ্রূণ দত্তক নেন। শনিবার তাদের পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। পিয়ার্সের চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই ভ্রূণটি একটি শিশু হিসেব জন্ম নেওয়ার আগে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষিত থাকার রেকর্ড করেছে।

১৯৯০ সাল থেকেই এই ধারণার প্রচলন হয়। কিছু ক্লিনিক এবং আইনি সংস্থা ভ্রূণ নষ্ট করে ফেলার বিরোধিতা করায় ভ্রূণ দান করার বিষয়টি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাদের বিশ্বাস, গর্ভধারণের সময় বা তার কাছাকাছি সময়েই একটি জীবন শুরু হয় এবং সব ভ্রূণকে শিশুর মতোই ভাবা উচিত যাদের একটি আশ্রয়ের প্রয়োজন।

১৯৯৪ সালে এই ভ্রূণটি দান করেছিলেন লিন্ডা আর্চার্ড। তার বয়স এখন ৬২ বছর। তিনি বলেন, আমি সবসময়ই অনুভব করতাম যে, এই ছোট ভ্রূণগুলো আমার মেয়ের মতোই বেঁচে থাকার যোগ্য।

মূলত আইভিএফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে ভ্রূণটির জন্ম হয়। ১৯৯৪ সালে লিন্ডা আর্চার্ড এবং তার স্বামী আইভিএফ পদ্ধতিতে মোট চারটি ভ্রূণের জন্ম দেন। এর মধ্যে একটি থেকে জন্ম নেয় তার বর্তমান ৩০ বছর বয়সী মেয়ে। বাকি তিনটি ভ্রূণ হিমায়িত অবস্থায় সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেলেও লিন্ডা বাকি ভ্রূণগুলো নষ্ট করতে চাননি। এই ভ্রূণগুলো সংরক্ষণের জন্য তিনি প্রতিবছর হাজার হাজার ডলার খরচ করেছেন। লিন্ডা চাচ্ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত, বিবাহিত, শ্বেতাঙ্গ ও খ্রিষ্টান একটি দম্পতির ঘরে এই ভ্রূণটি থেকে সন্তান জন্ম নেবে। তিনি চাননি ভ্রূণটি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য কোনো দেশে অন্য কোনো পরিবারে চলে যাক।

শেষ পর্যন্ত তার ভ্রূণ লিন্ডসি ও টিম পিয়ার্স দম্পতির সঙ্গে মিলে যায়। লিন্ডসি পিয়ার্স বলেন, তারা কোনো রেকর্ড ভাঙতে চাননি। তারা শুধু একটি সন্তান চেয়েছিলেন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দুই শতাংশ শিশুর জন্ম ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের বা দান করা ভ্রূণ থেকে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ১৫ লাখ হিমায়িত ভ্রূণ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে অনেকগুলোই অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। কারণ বাবা-মা আইভিএফ ল্যাবে তৈরি তাদের অবশিষ্ট ভ্রূণগুলো কী করবেন তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

বিষয়টিকে আরও জটিল করে তোলে ২০২৪ সালের আলাবামা সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়। সেখানে বলা হয়েছিল যে, হিমায়িত ভ্রূণ শিশু হিসেবে আইনি মর্যাদার অধিকার রাখে।

এসি/

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ হাসিনাকে কোনোদিনই বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দেবো না: মির্জা ফখরুল

৩০ বছর আগের ভ্রূণ থেকে শিশুর জন্ম

আপডেট সময় : ০১:০৪:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে এক দম্পতির ঘরে জন্ম নিয়েছে এক শিশু, যার ভ্রূণ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিমায়িত অবস্থায় সংরক্ষিত ছিল। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় সংরক্ষিত থাকা ভ্রূণ থেকে জীবিত শিশু জন্মের নতুন রেকর্ড। ৩৫ বছর বয়সি লিন্ডসি ও তার স্বামী ৩৪ বছর বয়সি টিম পিয়ার্স সম্প্রতি তাদের সন্তান থাডিয়াস ড্যানিয়েল পিয়ার্সের জন্মের খবর জানান। ভ্রূণটি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৪ সালে, ৬২ বছর বয়সি লিন্ডা আর্চার্ড ও তার তখনকার স্বামীর আইভিএফ চিকিৎসার মাধ্যমে। লিন্ডার শর্ত ছিল ভ্রূণটি যেন যুক্তরাষ্ট্রেই থাকে এবং তা কোনো বিবাহিত শ্বেতাঙ্গ খ্রিষ্টান দম্পতির হাতে যায়।

গত সপ্তাহে এক মার্কিন দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিমায়িত অবস্থায় থাকা একটি ভ্রূণ থেকে জন্ম হয় তার।

লিন্ডসে এবং টিম পিয়ার্স দম্পতি বহু বছর ধরে একটি সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অবশেষে সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান দিয়েছেন। তারা দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সংরক্ষণ করা একটি ভ্রূণ দত্তক নেন। শনিবার তাদের পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। পিয়ার্সের চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই ভ্রূণটি একটি শিশু হিসেব জন্ম নেওয়ার আগে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষিত থাকার রেকর্ড করেছে।

১৯৯০ সাল থেকেই এই ধারণার প্রচলন হয়। কিছু ক্লিনিক এবং আইনি সংস্থা ভ্রূণ নষ্ট করে ফেলার বিরোধিতা করায় ভ্রূণ দান করার বিষয়টি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাদের বিশ্বাস, গর্ভধারণের সময় বা তার কাছাকাছি সময়েই একটি জীবন শুরু হয় এবং সব ভ্রূণকে শিশুর মতোই ভাবা উচিত যাদের একটি আশ্রয়ের প্রয়োজন।

১৯৯৪ সালে এই ভ্রূণটি দান করেছিলেন লিন্ডা আর্চার্ড। তার বয়স এখন ৬২ বছর। তিনি বলেন, আমি সবসময়ই অনুভব করতাম যে, এই ছোট ভ্রূণগুলো আমার মেয়ের মতোই বেঁচে থাকার যোগ্য।

মূলত আইভিএফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে ভ্রূণটির জন্ম হয়। ১৯৯৪ সালে লিন্ডা আর্চার্ড এবং তার স্বামী আইভিএফ পদ্ধতিতে মোট চারটি ভ্রূণের জন্ম দেন। এর মধ্যে একটি থেকে জন্ম নেয় তার বর্তমান ৩০ বছর বয়সী মেয়ে। বাকি তিনটি ভ্রূণ হিমায়িত অবস্থায় সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেলেও লিন্ডা বাকি ভ্রূণগুলো নষ্ট করতে চাননি। এই ভ্রূণগুলো সংরক্ষণের জন্য তিনি প্রতিবছর হাজার হাজার ডলার খরচ করেছেন। লিন্ডা চাচ্ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত, বিবাহিত, শ্বেতাঙ্গ ও খ্রিষ্টান একটি দম্পতির ঘরে এই ভ্রূণটি থেকে সন্তান জন্ম নেবে। তিনি চাননি ভ্রূণটি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য কোনো দেশে অন্য কোনো পরিবারে চলে যাক।

শেষ পর্যন্ত তার ভ্রূণ লিন্ডসি ও টিম পিয়ার্স দম্পতির সঙ্গে মিলে যায়। লিন্ডসি পিয়ার্স বলেন, তারা কোনো রেকর্ড ভাঙতে চাননি। তারা শুধু একটি সন্তান চেয়েছিলেন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দুই শতাংশ শিশুর জন্ম ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের বা দান করা ভ্রূণ থেকে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ১৫ লাখ হিমায়িত ভ্রূণ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে অনেকগুলোই অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। কারণ বাবা-মা আইভিএফ ল্যাবে তৈরি তাদের অবশিষ্ট ভ্রূণগুলো কী করবেন তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

বিষয়টিকে আরও জটিল করে তোলে ২০২৪ সালের আলাবামা সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়। সেখানে বলা হয়েছিল যে, হিমায়িত ভ্রূণ শিশু হিসেবে আইনি মর্যাদার অধিকার রাখে।

এসি/