প্রযুক্তি ডেস্ক : দেশের ৩০ ইউনিয়নে আট হাজারের বেশি ডিজিটাল সেন্টারকে সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ‘ওয়ান স্টপ সেবা কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করবে এসএমই ফাউন্ডেশন ও এটুআই। এর মধ্যে ৩০টি ডিজিটাল সেন্টারে পাইলট কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশনের সম্মেলন কক্ষে এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩০টি ডিজিটাল সেন্টারে পাইলট কর্মসূচি উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এটুআইয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান ও এটুআইয়ের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর সমঝোতা স্মারকে সই করেন। ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে শ্রমঘন ও স্বল্প পুঁজিনির্ভর সিএমএসএমই খাতের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অষ্টম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের বিকাশে সব জেলা-উপজেলায় এসএমই পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশনা দেন। তার অনুশাসন মোতাবেক দেশের সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য তথ্য, পরামর্শ ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং এ খাতের উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে সব ইউনিয়ন/উপজেলা ডিজিটাল সেন্টারকে ‘ওয়ান স্টপ সেবা কেন্দ্র’ হিসেবে স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং এটুআই। তিনি বলেন, চলতি বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বরে ঢাকাসহ পাঁচ বিভাগের সম্ভাবনাময় ইউডিসি উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে কর্মশালা আয়োজন করা হয়। প্রাথমিকভাবে ২২ জেলার ২৭ উপজেলায় ৩০টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে পাইলট কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন ও এটুআই। এসব কেন্দ্র এসএমই শিল্পের প্রসারে ‘ওয়ান স্টপ সেবা কেন্দ্র’ হিসেবে কাজ করবে। উদ্যোক্তারা এখানে ব্যবসা স্থাপন থেকে শুরু করে ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যবসায়িক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ সহায়তা, পরামর্শক সেবা নিতে পারবেন। ড. মো. মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক মো. জাকের হোসেন। সম্মানীয় অতিথি ছিলেন এটুআইয়ের পলিসি অ্যাডভাইজর আনির চৌধুরি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজিম হাসান সাত্তার।
২০১০ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের চার হাজার ৫০১টি ইউনিয়নে একযোগে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র (ইউডিসি) উদ্বোধন করেন। ২০১৩ সালে ৩২৮টি পৌরসভায় পৌর রপো ৪৬৫টি ওয়ার্ডে নগর ডিজিটাল সেন্টার (সিডিসি), ২০১৮ সালে বিশেষ জনগোষ্ঠীর চাহিদার আলোকে ছয়টি স্পেশালাইজড ডিজিটাল সেন্টার-এসডিসি (গার্মেন্টস কর্মীদের জন্য গাজীপুরে পাঁচটি এবং মৎসজীবী শ্রমিকদের জন্য খুলনার রূপসায় একটি) এবং সৌদি আরবে ১৫টি এক্সপাট্রিয়েট ডিজিটাল সেন্টার (ইডিসি) চালু করা হয়েছে। বর্তমানে দেশব্যাপী আট হাজার ২৯৭টি ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত ১৬ হাজার ৮৭ জন উদ্যোক্তা ব্যাংকিং এবং ই-কমার্স সেবাসহ ৩২০-এর বেশি সরকারি-বেসরকারি সেবা দিচ্ছেন। ডিজিটাল সেন্টার থেকে ২০২০ সাল নাগাদ মোট সেবা দেওয়া হয়েছে ৬৮ দশমিক ৪ কোটি। সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে নাগরিকদের এক দশমিক৬৮ বিলিয়ন সমপরিমাণ কর্ম ঘণ্টা, নয় দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ খরচ এবং শূন্য দশমিক পাঁচ বিলিয়ন সমপরিমাণ যাতায়াত সাশ্রয় হয়েছে। নাগরিকদের জীবনমান পরিবর্তনে ইতিবাচক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডিজিটাল সেন্টার ২০১৪ সালে ই-গভর্নমেন্ট ক্যাটাগরিতে জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডাব্লিউএসআইএস) অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছে।
৩০ ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টার হচ্ছে ‘ওয়ান স্টপ সেবা কেন্দ্র’
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ