ক্রীড়া প্রতিবেদক : আগের দিনের চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তার ইনিংসকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিলেন নাঈম ইসলাম। তাতে ঘরের মাঠে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডটি নিজের করে নিলেন তিনি। তার কীর্তি গড়ার দিনে লম্বা সময় পর এই সংস্করণে তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পেলেন মুমিনুল হক। কক্সবাজারে বিসিএলের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে শনিবার ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে বিসিবি উত্তরাঞ্চলের হয়ে ১০৭ রান করেন নাঈম। তার ৩০০ বলের ইনিংসটি সাজানো ৯ চারে। বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩০তম শতকে নাঈম ছাড়িয়ে যান তুষার ইমরানকে। ঘরের মাঠে ১৪৫ ম্যাচে ২৯ সেঞ্চুরি করে রেকর্ডটি এতদিন ছিল সাবেক এই ব্যাটসম্যানের। নাঈমের সেঞ্চুরি ও সানজামুল ইসলামের ফিফটিতে ৯ উইকেটে ৩৭৮ রান করে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে উত্তরাঞ্চল। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে মুমিনুলের শতকে ২ উইকেটে ২১৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে পূর্বাঞ্চল। এখনও তারা পিছিয়ে ১৬১ রানে। ১ ছক্কা ও ১৪ চারে ১০৩ রানে অপরাজিত আছেন মুমিনুল। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৯ ইনিংস পর সেঞ্চুরির দেখা পেলেন বাংলাদেশের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক। সবশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি ২০২১ সালের জাতীয় ক্রিকেট লিগে, চট্টগ্রাম বিভাগের হয়ে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে। এই সংস্করণে এটি তার যৌথভাবে দীর্ঘতম সেঞ্চুরি খরা। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২৯ ইনিংসে তিন অঙ্কের দেখা পাননি।
৬ উইকেটে ২৮৮ রান নিয়ে খেলতে নামা উত্তরাঞ্চলকে ভালো শুরু এনে দেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান নাঈম ও সানজামুল। প্রথম ঘন্টা দারুণ ব্যাটিংয়ে কাটিয়ে দেন তারা। ৮৭ রানের এই জুটি ভাঙে সানজামুলের বিদায়ে। ৭ রান নিয়ে খেলতে নামা ব্যাটসম্যান ১ ছক্কা ও ১০ চারে ৫৮ রান করে ফেরেন। তানজিম হাসান সাকিবও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ৭৫ রান নিয়ে খেলতে নেমে নাঈম সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ২০৮ বলে। তার ধৈর্যশীল ইনিংসটি থামে আবু জায়েদ রাহির বলে বোল্ড হয়ে। এরপর ইনিংস ঘোষণা করে দেয় উত্তরাঞ্চল। ব্যাটিংয়ে নেমে রনি তালুকদারের ব্যাটে দারুণ শুরু পায় পূর্বাঞ্চল। এক প্রান্তে তাকে সঙ্গ দিয়ে যান মোহাম্মদ আশরাফুল। ৪৪ বলে ৭ রান করা আশরাফুলকে কট বিহাইন্ড করে ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তানজিম। এরপর মুমিনুলের সঙ্গে ৩৭ রানের জুটি গড়েন রনি। ফিফটির দুয়ারে গিয়ে রানআউটে কাটা পড়েন তিনি। করেন ৭ চারে ৪৭ রান। জহুরুল ইসলামকে নিয়ে দিনের বাকিটা কাটিয়ে দেন মুমিনুল। চমৎকার ব্যাটিংয়ে ১৩৬ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেন তারা। ফর্ম খরায় জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া মুমিনুল সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ১৪৭ বলে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার ২৬তম শতক। এই সংস্করণে ৪৭ তম ফিফটি করে জহুরুল অপরাজিত আছেন ১ ছক্কা ও ৫ চারে ঠিক ৫০ রান করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বিসিবি উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৮৮/৬) ১১৭ ওভারে ৩৭৮/৯ ডিক্লে. (নাঈম ১০৭, সানজামুল ৫৮, তানজিম ৬, শাকিল ০, নাঈম আহমেদ ০; আবু জায়েদ ১৬-৩-৯৩-৪, রিপন ১৮-৩-৬০-০, এনামুল ১৬-৫-৬১-১, তানভির ৪৩-১৩-৯২-৩, মুমিনুল ১০-১-২৬-০, আশরাফুল ১৪-৩-৩৯-১)
ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৬০ ওভারে ২১৭/২ (রনি ৪৭, আশরাফুল ৭, মুমিনুল ১০৩, জহুরুল ৫০; শাকিল ৬-১-২৭-০, তানজিম ১১-৪-৩৩-১, সানজামুল ১৭-১-৭৩-০, নাঈম ১১-০-৩০-০, নাসির ১১-১-৩০-০, আমিনুল ৪-০-১৭-০)
২৯ ইনিংস পর মুমিনুলের সেঞ্চুরি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ