ঢাকা ১০:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

২৭ জুলাই কী হবে ঢাকায়?

  • আপডেট সময় : ০২:২২:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুলাই ২০২৩
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার কী হতে চলেছে ঢাকায়? প্রশ্ন আর আশঙ্কা রাজনৈতিক মহল ও জনমনে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ডাকা ২৭ জুলাইয়ের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার আশঙ্কা করছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যুবলীগের কর্মসূচি ছিল ২৪ জুলাই। আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করার পর যুবলীগ তাদের কর্মসূচি ২৭ জুলাইয়ে নিয়ে গেছে। সংঘাতপূর্ণ অবস্থা সৃষ্টি করতে তারা এটা করেছে, তা পরিষ্কার। কোনো ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।’
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে এক যৌথ সভা শেষে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন, কয়েক দিন ধরে সরকারের মন্ত্রীরা হুমকি দিচ্ছেন। তাঁরা এমন কথাও বলছেন, ছেঁকে ছেঁকে তোলা হবে। তাঁদের যে ভাষা, তা সন্ত্রাসী ভাষা। সরকারের বিশেষ বিশেষ ব্যক্তি উসকানিমূলক কথা বলছেন, একই সঙ্গে তাঁরা উসকানিমূলক কাজও করছেন বলে দাবি করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি এ সময় যুবলীগের ২৪ জুলাইয়ের কর্মসূচি ২৭ জুলাইয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ আনেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমরা এখন পর্যন্ত যতগুলো আন্দোলন করেছি, প্রতিটি আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল। আপনারা দেখেছেন, আমাদের দুজন লোক নিহত হয়েছেন, নয় হাজার মিথ্যা মামলা করেছে, তারপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করব, ভয়াবহ সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি পরিহার করবে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ এবং সরকার এটা নিশ্চিত করবে।’
মহাসমাবেশ থেকে কী বার্তা দিতে চান, এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, বার্তা একটাই—পদত্যাগ। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করা হবে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, যারা যুগপৎ আন্দোলনে নেই, তারাও পরিষ্কারভাবে বলছে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। এই দেশে এখন কোনো রাজনৈতিক দল অবশিষ্ট নেই, যারা মনে করে, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। মহাসমাবেশ করার জন্য স্থান বরাদ্দের অনুমোদন চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আশা করি, আজকের মধ্যেই আমাদের স্থানের ব্যাপারে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।’
সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।’ তিনি বলেন, ‘সময় এসেছে বাংলাদেশের মানুষের নিজেদের অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলনের। আমাদের এই আন্দোলন সফল হবে।’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কথা বলার আগে সূচনা বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম প্রমুখ।
বিএনপির হামলার প্রতিবাদে ‘শান্তি সমাবেশ’ করবে আ.লীগের তিন সংগঠন: রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম গেটে আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ‘তারুণ্যের জয়যাত্রার সমাবেশ’ ডেকেছিল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। তবে এ কর্মসূচির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই কর্মসূচিতে যোগ দেবে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম আরও দুই সংগঠন।
সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপি হামলা করছে দাবি করে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ আয়োজনে ‘শান্তি সমাবেশ’ ডাকা হয়েছে। সোমবার (২৪ জুলাই) এ নিয়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিন সংগঠন। এতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হবেন, ১টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিকাল ৩টা থেকে সমাবেশ শুরু হবে। গত ২২ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ থেকে ২৭ জুলাই ঢাকায় ‘মহাসমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। অন্যদিকে আজ সোমবার বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ-পশ্চিম গেটে ‘তারুণ্যের জয়যাত্রার সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছিল যুবলীগ। তবে সেই সিদ্ধান্ত রোববারই পরিবর্তন করে সংগঠনটি। তারা জানায়, বৃহস্পতিবার এ কর্মসূচি পালন করবে যুবলীগ, যেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীতে বিএনপির কর্মসূচির দিন ‘শান্তি সমাবেশ’ নামে কর্মসূচি পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। এতদিন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালন করা হচ্ছিল। গত ২২ জুলাই প্রথমবারের মতো যুবলীগ আলাদা কর্মসূচি পালন করে। ওইদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজ জেলা নোয়াখালীতে ‘শান্তি সমাবেশে’ ছিলেন। বিএনপির সমাবেশের পাল্টা সমাবেশ করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল আজ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। রাজনৈতিক দল হিসেবে সহাবস্থানে থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করবো।’
সাপ্তাহিক কর্মব্যস্তার দিনে দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি স্থান জানালাম। পরবর্তীতে স্পট পরিবর্তন করতে পারি।’
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত লিখিত বক্তব্যে মাঈনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এই বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন হবে। নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে দেশবিরোধী চক্র, প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠি আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। অগ্নিহত্যার ড্রেস রিহার্সেল হিসাবে তারা ঢাকা শহরে অন্যতম বিদ্যাপীঠ বাংলা কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে জ্ঞানের আলো লাইব্রেরি ভাঙচুরসহ ছাত্রীদের ওপর হামলা ও শ্লীলতাহানী করে। যার ধারাবাহিকতায় বগুড়ায় একই দিনে ইয়াকুবিয়া বালিকা বিদ্যালয়ে হামলা করে শতাধিক ছাত্রীকে আহত করে। খাগড়াছড়ি ও লক্ষ্মীপুরে শান্তি সমাবেশে হামলা করে শতাধিক মানুষকে আহত করে।’
তিনি বলেন, গত ২১ জুলাই যুবলীগের খুলনা বিভাগীয় ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নড়াইলের পেরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আজাদ শেখকে ওঁৎপেতে থাকা বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করে। একই দিনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত ১২ ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা শেখ ওয়ালিউল্লাহ রুবেলকেও নির্মমভাবে হত্যা করে। গত ৩০ এপ্রিল, তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. জামাল হোসেন এবং গত ৩০ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন পাটোয়ারীকে নির্মমভাবে হত্যা করে বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা। তিনি আরও দাবি করেন, গত ২৫ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান ও যুবলীগ নেতা রাকিব ইমামের হত্যাকা-ের সঙ্গেও বিএনপি-জামায়াতের সম্পৃক্ততা রয়েছে। গত ২১ জুন কুমিল্লা জেলার লাকসাম পৌরসভা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইফতেখার অনিক বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলায় নিহত হন। যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এর আগে বগুড়া শহর শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাহিদ হাসান ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. রমজান আলীকে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করে। সংবাদ সম্মেলনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক অফজালুর রহমান বাবু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ছিলেন।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা হতাশ-ক্ষুব্ধ, ‘পদত্যাগ’ নিয়ে আলোচনা

২৭ জুলাই কী হবে ঢাকায়?

আপডেট সময় : ০২:২২:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার কী হতে চলেছে ঢাকায়? প্রশ্ন আর আশঙ্কা রাজনৈতিক মহল ও জনমনে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ডাকা ২৭ জুলাইয়ের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার আশঙ্কা করছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যুবলীগের কর্মসূচি ছিল ২৪ জুলাই। আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করার পর যুবলীগ তাদের কর্মসূচি ২৭ জুলাইয়ে নিয়ে গেছে। সংঘাতপূর্ণ অবস্থা সৃষ্টি করতে তারা এটা করেছে, তা পরিষ্কার। কোনো ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।’
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে এক যৌথ সভা শেষে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন, কয়েক দিন ধরে সরকারের মন্ত্রীরা হুমকি দিচ্ছেন। তাঁরা এমন কথাও বলছেন, ছেঁকে ছেঁকে তোলা হবে। তাঁদের যে ভাষা, তা সন্ত্রাসী ভাষা। সরকারের বিশেষ বিশেষ ব্যক্তি উসকানিমূলক কথা বলছেন, একই সঙ্গে তাঁরা উসকানিমূলক কাজও করছেন বলে দাবি করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি এ সময় যুবলীগের ২৪ জুলাইয়ের কর্মসূচি ২৭ জুলাইয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ আনেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমরা এখন পর্যন্ত যতগুলো আন্দোলন করেছি, প্রতিটি আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল। আপনারা দেখেছেন, আমাদের দুজন লোক নিহত হয়েছেন, নয় হাজার মিথ্যা মামলা করেছে, তারপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করব, ভয়াবহ সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি পরিহার করবে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ এবং সরকার এটা নিশ্চিত করবে।’
মহাসমাবেশ থেকে কী বার্তা দিতে চান, এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, বার্তা একটাই—পদত্যাগ। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করা হবে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, যারা যুগপৎ আন্দোলনে নেই, তারাও পরিষ্কারভাবে বলছে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। এই দেশে এখন কোনো রাজনৈতিক দল অবশিষ্ট নেই, যারা মনে করে, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। মহাসমাবেশ করার জন্য স্থান বরাদ্দের অনুমোদন চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আশা করি, আজকের মধ্যেই আমাদের স্থানের ব্যাপারে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।’
সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।’ তিনি বলেন, ‘সময় এসেছে বাংলাদেশের মানুষের নিজেদের অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলনের। আমাদের এই আন্দোলন সফল হবে।’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কথা বলার আগে সূচনা বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম প্রমুখ।
বিএনপির হামলার প্রতিবাদে ‘শান্তি সমাবেশ’ করবে আ.লীগের তিন সংগঠন: রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম গেটে আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ‘তারুণ্যের জয়যাত্রার সমাবেশ’ ডেকেছিল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। তবে এ কর্মসূচির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই কর্মসূচিতে যোগ দেবে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম আরও দুই সংগঠন।
সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপি হামলা করছে দাবি করে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ আয়োজনে ‘শান্তি সমাবেশ’ ডাকা হয়েছে। সোমবার (২৪ জুলাই) এ নিয়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিন সংগঠন। এতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হবেন, ১টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিকাল ৩টা থেকে সমাবেশ শুরু হবে। গত ২২ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ থেকে ২৭ জুলাই ঢাকায় ‘মহাসমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। অন্যদিকে আজ সোমবার বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ-পশ্চিম গেটে ‘তারুণ্যের জয়যাত্রার সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছিল যুবলীগ। তবে সেই সিদ্ধান্ত রোববারই পরিবর্তন করে সংগঠনটি। তারা জানায়, বৃহস্পতিবার এ কর্মসূচি পালন করবে যুবলীগ, যেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীতে বিএনপির কর্মসূচির দিন ‘শান্তি সমাবেশ’ নামে কর্মসূচি পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। এতদিন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালন করা হচ্ছিল। গত ২২ জুলাই প্রথমবারের মতো যুবলীগ আলাদা কর্মসূচি পালন করে। ওইদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজ জেলা নোয়াখালীতে ‘শান্তি সমাবেশে’ ছিলেন। বিএনপির সমাবেশের পাল্টা সমাবেশ করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল আজ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। রাজনৈতিক দল হিসেবে সহাবস্থানে থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করবো।’
সাপ্তাহিক কর্মব্যস্তার দিনে দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি স্থান জানালাম। পরবর্তীতে স্পট পরিবর্তন করতে পারি।’
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত লিখিত বক্তব্যে মাঈনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এই বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন হবে। নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে দেশবিরোধী চক্র, প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠি আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। অগ্নিহত্যার ড্রেস রিহার্সেল হিসাবে তারা ঢাকা শহরে অন্যতম বিদ্যাপীঠ বাংলা কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে জ্ঞানের আলো লাইব্রেরি ভাঙচুরসহ ছাত্রীদের ওপর হামলা ও শ্লীলতাহানী করে। যার ধারাবাহিকতায় বগুড়ায় একই দিনে ইয়াকুবিয়া বালিকা বিদ্যালয়ে হামলা করে শতাধিক ছাত্রীকে আহত করে। খাগড়াছড়ি ও লক্ষ্মীপুরে শান্তি সমাবেশে হামলা করে শতাধিক মানুষকে আহত করে।’
তিনি বলেন, গত ২১ জুলাই যুবলীগের খুলনা বিভাগীয় ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নড়াইলের পেরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আজাদ শেখকে ওঁৎপেতে থাকা বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করে। একই দিনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত ১২ ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা শেখ ওয়ালিউল্লাহ রুবেলকেও নির্মমভাবে হত্যা করে। গত ৩০ এপ্রিল, তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. জামাল হোসেন এবং গত ৩০ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন পাটোয়ারীকে নির্মমভাবে হত্যা করে বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা। তিনি আরও দাবি করেন, গত ২৫ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান ও যুবলীগ নেতা রাকিব ইমামের হত্যাকা-ের সঙ্গেও বিএনপি-জামায়াতের সম্পৃক্ততা রয়েছে। গত ২১ জুন কুমিল্লা জেলার লাকসাম পৌরসভা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইফতেখার অনিক বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলায় নিহত হন। যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এর আগে বগুড়া শহর শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাহিদ হাসান ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. রমজান আলীকে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করে। সংবাদ সম্মেলনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক অফজালুর রহমান বাবু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ছিলেন।