ঢাকা ০১:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

২৭ ঘণ্টা পর দাফন করা হলো মরদেহ

  • আপডেট সময় : ০৭:৪০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংবাদদাতা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় দ্বিতীয় স্ত্রী ও মেয়েদেরকে সম্পত্তি বঞ্চিত করে বাবার জমি চার ছেলে নিজেদের নামে লিখে নেওয়ার ঘটনার মীমাংসা হয়েছে। গ্রাম্য সালিসে বিষয়টি মীমাংসার মধ্য দিয়ে মৃত মাজেদ বিশ্বাসের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়। গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে সুন্দরপুর ইউনিয়নের একটি গোরস্থানে জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মাস্টার বলেন, মাজেদ বিশ্বাসের মরদেহ আটকানোর ঘটনায় আমরা গ্রাম্য সালিসে বসেছিলাম।

সেখানে তার দুই ছেলে সালিসি বৈঠকে স্বীকার করেন তার বাবাকে প্ররোচনা দিয়ে তারা তার সৎ মা হামফুল বেগমকে তালাক দেওয়ান এবং জালিয়াতি করে বাবার সম্পত্তি তারা তিন ভাই ও এক ভাতিজার নামে লিখে নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় সালিসি বৈঠকে তারা ক্ষমা চান এবং পরে সালিসে সিদ্ধান্ত হয় যে, তারা যে সম্পত্তি লিখে নিয়েছে তা সহ তার বাবার সকল সম্পত্তি আইন অনুযায়ী সবার মাঝে সমানভাবে বণ্টন হবে এবং জমি রেজিস্ট্রির পর দাফন সম্পন্ন হবে। কিন্তু জমি রেজিস্ট্রি করতে হলে আবার নতুন করে খারিজ করতে হবে, যা করতে কমপক্ষে একমাসের মতো সময় লাগবে। আর এতদিন লাশ রাখা সম্ভব নয়। এজন্য মরা পাগলা এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান ইয়াসিন আলীর ছেলে মো. কামরুল ইসলামের কাছে ফাঁকা চেক জমা রাখার সিদ্ধান্ত হয় এবং খারিজ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর আইন অনুযায়ী সব অংশীদারের মাঝে জমি সমবণ্টন করার পর মাজেদ বিশ্বাসের ছেলেদের কাছে ফাঁকা চেক ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মাজেদ বিশ্বাসের দাফন সম্পন্ন হয়। হামফুল বেগমের ভাতিজি জামাই আলী হায়দার বলেন, সালিসে আইন অনুয়ায়ী আমার ফুফা শ্বশুরের জমি অংশীদারদের মাঝে সমবণ্টনের সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং জমির খারিজ কাজ সম্পন্ন করার পর অংশীদারের মাঝে রেজিস্ট্রি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

এজন্য সালিসদারের জামানতে একটি ফাঁকা চেক জমা দেওয়া হয়েছে এবং স্ট্যাম্পে এই বিষয়ে লেখা হয়েছে। আমার ফুফু শাশুড়ি বর্তমানে মৃত ফুফা শ্বশুরের বাসায় আছেন। আমরা এই সালিসে বৈঠকের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট এবং শেষ পর্যন্ত এটির বাস্তবায়ন চাই। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে দুই পক্ষের বিষয়টি সুরাহা হয়েছে এবং মৃত ব্যক্তির মরদেহ দাফনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ছে। এছাড়া উক্ত এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। প্রসঙ্গত, গত রোববার (২৭ এপ্রিল) মাজেদ বিশ্বাস রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মাজেদ বিশ্বাসের প্রথম স্ত্রীর চার ছেলে ও ছয় মেয়ে। দ্বিতীয় স্ত্রীর কোনো সন্তান নেই। মরদেহ দাফনের জন্য ছেলেরা গ্রামের বাড়ি নিয়ে এলে মাজেদ বিশ্বাসের দ্বিতীয় স্ত্রী হামফুল বেগম ও মেয়েরা এলাকবাসীকে সাথে নিয়ে দাফনে বাধা দেন। পরে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিসি বৈঠকে বসেন এবং সুরাহা শেষে মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

২৭ ঘণ্টা পর দাফন করা হলো মরদেহ

আপডেট সময় : ০৭:৪০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংবাদদাতা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় দ্বিতীয় স্ত্রী ও মেয়েদেরকে সম্পত্তি বঞ্চিত করে বাবার জমি চার ছেলে নিজেদের নামে লিখে নেওয়ার ঘটনার মীমাংসা হয়েছে। গ্রাম্য সালিসে বিষয়টি মীমাংসার মধ্য দিয়ে মৃত মাজেদ বিশ্বাসের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়। গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে সুন্দরপুর ইউনিয়নের একটি গোরস্থানে জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মাস্টার বলেন, মাজেদ বিশ্বাসের মরদেহ আটকানোর ঘটনায় আমরা গ্রাম্য সালিসে বসেছিলাম।

সেখানে তার দুই ছেলে সালিসি বৈঠকে স্বীকার করেন তার বাবাকে প্ররোচনা দিয়ে তারা তার সৎ মা হামফুল বেগমকে তালাক দেওয়ান এবং জালিয়াতি করে বাবার সম্পত্তি তারা তিন ভাই ও এক ভাতিজার নামে লিখে নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় সালিসি বৈঠকে তারা ক্ষমা চান এবং পরে সালিসে সিদ্ধান্ত হয় যে, তারা যে সম্পত্তি লিখে নিয়েছে তা সহ তার বাবার সকল সম্পত্তি আইন অনুযায়ী সবার মাঝে সমানভাবে বণ্টন হবে এবং জমি রেজিস্ট্রির পর দাফন সম্পন্ন হবে। কিন্তু জমি রেজিস্ট্রি করতে হলে আবার নতুন করে খারিজ করতে হবে, যা করতে কমপক্ষে একমাসের মতো সময় লাগবে। আর এতদিন লাশ রাখা সম্ভব নয়। এজন্য মরা পাগলা এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান ইয়াসিন আলীর ছেলে মো. কামরুল ইসলামের কাছে ফাঁকা চেক জমা রাখার সিদ্ধান্ত হয় এবং খারিজ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর আইন অনুযায়ী সব অংশীদারের মাঝে জমি সমবণ্টন করার পর মাজেদ বিশ্বাসের ছেলেদের কাছে ফাঁকা চেক ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মাজেদ বিশ্বাসের দাফন সম্পন্ন হয়। হামফুল বেগমের ভাতিজি জামাই আলী হায়দার বলেন, সালিসে আইন অনুয়ায়ী আমার ফুফা শ্বশুরের জমি অংশীদারদের মাঝে সমবণ্টনের সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং জমির খারিজ কাজ সম্পন্ন করার পর অংশীদারের মাঝে রেজিস্ট্রি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

এজন্য সালিসদারের জামানতে একটি ফাঁকা চেক জমা দেওয়া হয়েছে এবং স্ট্যাম্পে এই বিষয়ে লেখা হয়েছে। আমার ফুফু শাশুড়ি বর্তমানে মৃত ফুফা শ্বশুরের বাসায় আছেন। আমরা এই সালিসে বৈঠকের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট এবং শেষ পর্যন্ত এটির বাস্তবায়ন চাই। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে দুই পক্ষের বিষয়টি সুরাহা হয়েছে এবং মৃত ব্যক্তির মরদেহ দাফনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ছে। এছাড়া উক্ত এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। প্রসঙ্গত, গত রোববার (২৭ এপ্রিল) মাজেদ বিশ্বাস রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মাজেদ বিশ্বাসের প্রথম স্ত্রীর চার ছেলে ও ছয় মেয়ে। দ্বিতীয় স্ত্রীর কোনো সন্তান নেই। মরদেহ দাফনের জন্য ছেলেরা গ্রামের বাড়ি নিয়ে এলে মাজেদ বিশ্বাসের দ্বিতীয় স্ত্রী হামফুল বেগম ও মেয়েরা এলাকবাসীকে সাথে নিয়ে দাফনে বাধা দেন। পরে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিসি বৈঠকে বসেন এবং সুরাহা শেষে মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়।