ঢাকা ০১:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশের অনুমতি দিল পুলিশ

  • আপডেট সময় : ০২:৫৩:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর ২০২২
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর নয়াপল্টনে আগামী ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে চেয়ে বিএনপি যে আবেদন করেছিল, ‘যানজট ও নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি’র কারণ দেখিয়ে তা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল মঙ্গলবার এ অনুমতি দিলেও ডিএমপির চিঠিতে বলা হয়েছে, এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
মঙ্গলবার বিএনপিকে দেওয়া চিঠিতে সমাবেশের জন্য ২৬টি শর্ত জুড়ে দিয়েছে ডিএমপি। ডিএমডপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের পক্ষে মঙ্গলবার ডিএমপির সদর দপ্তর ও প্রশাসন বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আব্দুল মোমেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে অনুমতি দেওয়া হয়। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়।
যেসব শর্তে অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো: ১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। ২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে। ৩. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। ৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে। ৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। ৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশগেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ঠবযরপষব ঝপধহহবৎ/ঝবধৎপয গরৎৎড়ৎ–এর মাধ্যমে সমাবেশস্থলে আসা সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা রাখতে হবে। ৯. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বা সড়কের পাশে মাইক/সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না। ১০. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না। ১১. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমাবেত হওয়া যাবে না। ১২. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময়ে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ১৩. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে, এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না। ১৪. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে। ১৫. সমাবেশ শুরুর ২ (দুই) ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে। ১৬. সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থাতেই সমবেত হওয়াসহ যান ও জন চলাচলে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। ১৭. পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা, রড ব্যবহার করা যাবে না। ১৮. আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী ও জননিরাপত্তা বিঘিœত হয়, এমন কার্যকলাপ করা যাবে না। ১৯. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না। ২০. উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না। ২১. মিছিলসহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না। ২২. পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না। ২৩. সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। ২৪. স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সমাবেশ পরিচালনা করতে হবে। ২৫. উল্লিখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে। ২৬. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
গত ২০ নভেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপির কাছে আবেদন করেন রুহুল কবির রিজভী। পরে ২২ নভেম্বর দলটির পক্ষ থেকে কয়েকজন নেতা ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে সমাবেশ করার বিষয়ে জানান।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, নয়াপল্টনেই বিএনপি সমাবেশ করবে: রিজভী : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, নয়াপল্টনেই বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ মূলত জনস্বার্থের সমাবেশ। এটি হারানো গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার সমাবেশ।’
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি, পানির দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি; সব মিলিয়ে নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। এর প্রতিবাদে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। চলমান দুর্ভোগ সরকারের সৃষ্টি।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘সরকারের গণবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলন করে আসছে। দেশের ১০ বিভাগের ভেতর ৮টিতে বিএনপির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে সমাবেশ হবে; এরপর ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগে হবে।’ ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বর্তমান গণবিরোধী সরকার চক্রান্ত করে যাচ্ছে। যেটা তাদের চিরচেনা অভ্যাস। সেই পুরোনো গায়েবি মামলা ও নিজেরাই ষড়যন্ত্র করে ককটেল বিস্ফোরণ করে, গাড়ি ভাঙচুর করে। আবার ককটেল বিস্ফোরণও হয়নি তবুও মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে অনেক বিএনপি নেতাকর্মী নামে। যারা এলাকায় নেই তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এই মিথ্যা মামলাগুলো দেওয়ার উদ্দেশ্য আগের ন্যায় জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা। এই দূরভিসন্ধিমূলক চক্রান্ত এবং এই ঘৃণ্য মাস্টার প্ল্যান। রিজভী বলেন, স্বচ্ছ নির্বাচন না করার জন্য তারা ফের পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। এগুলোকে ঢাকা দেওয়ার জন্যই বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া ও ঘরছাড়া করতেছে। কিন্তু তাদের দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসা চ-নীতি যখন দেখছে তারা সফল হচ্ছে না। বিএনপির কোনো সমাবেশে জনস্রোত থামানো যাচ্ছে না। তখন তারা মিথ্যা আশ্রয় নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে। রিজভী আরও বলেন, গতকাল আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীমের ধানমন্ডির বাসায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন; তখন পুলিশ অতর্কিতভাবে তার বাসায় হামলা ও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। জামালপুর জেলার মেলানদহ বিএনপির নেতা আমিরুল ইসলাম রেনু ও আব্দুল আজিজ এবং মো. নবীনসহ ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন মিয়ার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ভোলায় চরফ্যাশন উপজেলার যুবদল ও চরফ্যাশন পৌর যুবদলের শান্তিপূর্ণ মিছিলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নৃশংস হামলায় চালিয়েছে। সেখানকার এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে এলাকা থেকে পালিয়েছে। চরফ্যাশন উপজেলা যুবদলের নবনির্বাচিত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম প্রিন্স ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফ ফরাজীসহ শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আরও ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের মো. আব্দুর রহিম, যুবদলের সাবেক নেতা এসএম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যে ভাইকে জেল থেকে বের করেছি, সেই আমার স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করল…

২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশের অনুমতি দিল পুলিশ

আপডেট সময় : ০২:৫৩:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর নয়াপল্টনে আগামী ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে চেয়ে বিএনপি যে আবেদন করেছিল, ‘যানজট ও নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি’র কারণ দেখিয়ে তা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল মঙ্গলবার এ অনুমতি দিলেও ডিএমপির চিঠিতে বলা হয়েছে, এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
মঙ্গলবার বিএনপিকে দেওয়া চিঠিতে সমাবেশের জন্য ২৬টি শর্ত জুড়ে দিয়েছে ডিএমপি। ডিএমডপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের পক্ষে মঙ্গলবার ডিএমপির সদর দপ্তর ও প্রশাসন বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আব্দুল মোমেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে অনুমতি দেওয়া হয়। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়।
যেসব শর্তে অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো: ১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। ২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে। ৩. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। ৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে। ৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। ৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশগেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ঠবযরপষব ঝপধহহবৎ/ঝবধৎপয গরৎৎড়ৎ–এর মাধ্যমে সমাবেশস্থলে আসা সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা রাখতে হবে। ৯. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বা সড়কের পাশে মাইক/সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না। ১০. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না। ১১. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমাবেত হওয়া যাবে না। ১২. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময়ে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ১৩. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে, এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না। ১৪. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে। ১৫. সমাবেশ শুরুর ২ (দুই) ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে। ১৬. সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থাতেই সমবেত হওয়াসহ যান ও জন চলাচলে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। ১৭. পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা, রড ব্যবহার করা যাবে না। ১৮. আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী ও জননিরাপত্তা বিঘিœত হয়, এমন কার্যকলাপ করা যাবে না। ১৯. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না। ২০. উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না। ২১. মিছিলসহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না। ২২. পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না। ২৩. সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। ২৪. স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সমাবেশ পরিচালনা করতে হবে। ২৫. উল্লিখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে। ২৬. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
গত ২০ নভেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপির কাছে আবেদন করেন রুহুল কবির রিজভী। পরে ২২ নভেম্বর দলটির পক্ষ থেকে কয়েকজন নেতা ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে সমাবেশ করার বিষয়ে জানান।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, নয়াপল্টনেই বিএনপি সমাবেশ করবে: রিজভী : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, নয়াপল্টনেই বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ মূলত জনস্বার্থের সমাবেশ। এটি হারানো গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার সমাবেশ।’
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি, পানির দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি; সব মিলিয়ে নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। এর প্রতিবাদে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। চলমান দুর্ভোগ সরকারের সৃষ্টি।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘সরকারের গণবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলন করে আসছে। দেশের ১০ বিভাগের ভেতর ৮টিতে বিএনপির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে সমাবেশ হবে; এরপর ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগে হবে।’ ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বর্তমান গণবিরোধী সরকার চক্রান্ত করে যাচ্ছে। যেটা তাদের চিরচেনা অভ্যাস। সেই পুরোনো গায়েবি মামলা ও নিজেরাই ষড়যন্ত্র করে ককটেল বিস্ফোরণ করে, গাড়ি ভাঙচুর করে। আবার ককটেল বিস্ফোরণও হয়নি তবুও মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে অনেক বিএনপি নেতাকর্মী নামে। যারা এলাকায় নেই তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এই মিথ্যা মামলাগুলো দেওয়ার উদ্দেশ্য আগের ন্যায় জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা। এই দূরভিসন্ধিমূলক চক্রান্ত এবং এই ঘৃণ্য মাস্টার প্ল্যান। রিজভী বলেন, স্বচ্ছ নির্বাচন না করার জন্য তারা ফের পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। এগুলোকে ঢাকা দেওয়ার জন্যই বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া ও ঘরছাড়া করতেছে। কিন্তু তাদের দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসা চ-নীতি যখন দেখছে তারা সফল হচ্ছে না। বিএনপির কোনো সমাবেশে জনস্রোত থামানো যাচ্ছে না। তখন তারা মিথ্যা আশ্রয় নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে। রিজভী আরও বলেন, গতকাল আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীমের ধানমন্ডির বাসায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন; তখন পুলিশ অতর্কিতভাবে তার বাসায় হামলা ও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। জামালপুর জেলার মেলানদহ বিএনপির নেতা আমিরুল ইসলাম রেনু ও আব্দুল আজিজ এবং মো. নবীনসহ ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন মিয়ার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ভোলায় চরফ্যাশন উপজেলার যুবদল ও চরফ্যাশন পৌর যুবদলের শান্তিপূর্ণ মিছিলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নৃশংস হামলায় চালিয়েছে। সেখানকার এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে এলাকা থেকে পালিয়েছে। চরফ্যাশন উপজেলা যুবদলের নবনির্বাচিত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম প্রিন্স ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফ ফরাজীসহ শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আরও ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের মো. আব্দুর রহিম, যুবদলের সাবেক নেতা এসএম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল উপস্থিত ছিলেন।