ঢাকা ০৪:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

২৪ ঘণ্টায় ৭৭ মৃত্যু, শনাক্তের হার ২২.৫০

  • আপডেট সময় : ০১:৫৩:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১
  • ১১৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বিতীয় সংক্রমণের ঢেউয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ১৫ দিনেই এক হাজার রোগীর মৃত্যুতে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে।
গত ১১ জুন ১৩ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল ২৬ জুন শনিবার এই সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৩ জনে পৌঁছার তথ্য আসে। বছর গড়িয়ে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত এপ্রিলে পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার পর ১০ দিনেই ১ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। তারপর এখনই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যার ফলে সোমবার থেকে কঠোর বিধি-নিষেধে দেশ অচল রেখে সংক্রমণ রোখার পদক্ষেপ নিতে হয়েছে সরকারকে।
গতকাল শনিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে বিশ্বে মৃত্যু ৩৯ লাখ ছাড়িয়েছে, এই সময়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ১৮ কোটিতে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ; প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রথম মৃত্যুর আড়াই মাস পর গত বছরের ১০ জুন মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়ায়। এরপর ৫ জুলাই ২ হাজার, ২৮ জুলাই ৩ হাজার, ২৫ আগস্ট ৪ হাজার, ২২ সেপ্টেম্বর ৫ হাজার ছাড়ায় মৃতের সংখ্যা। এরপর কমে আসে দৈনিক মৃত্যু। ৪ নভেম্বর ৬ হাজার, ১২ ডিসেম্বর ৭ হাজারের ঘর ছাড়ায় মৃত্যুর সংখ্যা। এ বছরের ২৩ জানুয়ারি ৮ হাজার এবং ৩১ মার্চ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়ায়। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর ১৫ দিনেই এক হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটলে গত ১৫ এপ্রিল মৃতের মোট সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর পরের এক হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটাতে মাত্র দশ দিন সময় নেয় করোনাভাইরাস; মোট মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে যায় ২৫ এপ্রিল। তার ১৬ দিন পর ১১ মে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার এক মাস পর ১১ জুন তা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছিল। দিনে মৃত্যুর রেকর্ডও হয়েছে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে। ১৯ এপ্রিল ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে সময় টানা চার দিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল একশর ওপরে। শুক্রবার আবার দৈনিক মৃত্যু শত ছাড়িয়ে ১০৮ এ গিয়ে পৌঁছায়। শনিবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৭৭ জনের।
২৪ ঘণ্টায় ৭৭ মৃত্যু, শনাক্তের হার ২২.৫০ : দেশে গত এক দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৭৭ জন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মারা গেলেন ১৪ হাজার ৫৩ জন। এদিকে গত এক দিনে করোনা শনাক্তের হার আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। উল্লেখিত সময়ে শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৩৩৪ জন। শনাক্তের হার ২২.৫০ শতাংশ। গতকাল শনিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ২৬২টি নমুনা পরীক্ষায় ৪ হাজার ৩৩৪ জন শনাক্ত হন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত ৮ লাখ ৮৩ হাজার ১৩৮ জন। পরীক্ষা বিবেচনায় এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৩.৬২ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৪৮ জন ও নারী ২৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৭ জন ও ষাটোর্ধ্ব ৩৮ জন রয়েছেন।
এদিকে গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৯৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৮৫৮ জন। দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদ- অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা হয়। এরমধ্যে গত ১৬ এপ্রিল দেশে দৈনিক মৃত্যু একশো ছাড়ায়। সেদিন ও তার পরদিন ১৭ এপ্রিল ১০১ করে মৃত্যু হয় করোনায়। ১৮ এপ্রিল ১০২ জন ও ১৯ এপ্রিল ১১২ জন মারা যান, যা একদিনে সর্বোচ্চ। বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

২৪ ঘণ্টায় ৭৭ মৃত্যু, শনাক্তের হার ২২.৫০

আপডেট সময় : ০১:৫৩:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বিতীয় সংক্রমণের ঢেউয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ১৫ দিনেই এক হাজার রোগীর মৃত্যুতে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে।
গত ১১ জুন ১৩ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল ২৬ জুন শনিবার এই সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৩ জনে পৌঁছার তথ্য আসে। বছর গড়িয়ে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত এপ্রিলে পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার পর ১০ দিনেই ১ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। তারপর এখনই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যার ফলে সোমবার থেকে কঠোর বিধি-নিষেধে দেশ অচল রেখে সংক্রমণ রোখার পদক্ষেপ নিতে হয়েছে সরকারকে।
গতকাল শনিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে বিশ্বে মৃত্যু ৩৯ লাখ ছাড়িয়েছে, এই সময়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ১৮ কোটিতে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ; প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রথম মৃত্যুর আড়াই মাস পর গত বছরের ১০ জুন মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়ায়। এরপর ৫ জুলাই ২ হাজার, ২৮ জুলাই ৩ হাজার, ২৫ আগস্ট ৪ হাজার, ২২ সেপ্টেম্বর ৫ হাজার ছাড়ায় মৃতের সংখ্যা। এরপর কমে আসে দৈনিক মৃত্যু। ৪ নভেম্বর ৬ হাজার, ১২ ডিসেম্বর ৭ হাজারের ঘর ছাড়ায় মৃত্যুর সংখ্যা। এ বছরের ২৩ জানুয়ারি ৮ হাজার এবং ৩১ মার্চ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়ায়। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর ১৫ দিনেই এক হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটলে গত ১৫ এপ্রিল মৃতের মোট সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর পরের এক হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটাতে মাত্র দশ দিন সময় নেয় করোনাভাইরাস; মোট মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে যায় ২৫ এপ্রিল। তার ১৬ দিন পর ১১ মে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার এক মাস পর ১১ জুন তা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছিল। দিনে মৃত্যুর রেকর্ডও হয়েছে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে। ১৯ এপ্রিল ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে সময় টানা চার দিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল একশর ওপরে। শুক্রবার আবার দৈনিক মৃত্যু শত ছাড়িয়ে ১০৮ এ গিয়ে পৌঁছায়। শনিবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৭৭ জনের।
২৪ ঘণ্টায় ৭৭ মৃত্যু, শনাক্তের হার ২২.৫০ : দেশে গত এক দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৭৭ জন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মারা গেলেন ১৪ হাজার ৫৩ জন। এদিকে গত এক দিনে করোনা শনাক্তের হার আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। উল্লেখিত সময়ে শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৩৩৪ জন। শনাক্তের হার ২২.৫০ শতাংশ। গতকাল শনিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ২৬২টি নমুনা পরীক্ষায় ৪ হাজার ৩৩৪ জন শনাক্ত হন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত ৮ লাখ ৮৩ হাজার ১৩৮ জন। পরীক্ষা বিবেচনায় এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৩.৬২ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৪৮ জন ও নারী ২৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৭ জন ও ষাটোর্ধ্ব ৩৮ জন রয়েছেন।
এদিকে গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৯৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৮৫৮ জন। দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদ- অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা হয়। এরমধ্যে গত ১৬ এপ্রিল দেশে দৈনিক মৃত্যু একশো ছাড়ায়। সেদিন ও তার পরদিন ১৭ এপ্রিল ১০১ করে মৃত্যু হয় করোনায়। ১৮ এপ্রিল ১০২ জন ও ১৯ এপ্রিল ১১২ জন মারা যান, যা একদিনে সর্বোচ্চ। বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে।