ঢাকা ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

২৪০ কিমি. গতিতে লুইজিয়ানায় ‘আইদা’র আঘাত : অন্ধকারে ৭ লাখ মানুষ

  • আপডেট সময় : ১২:৫৪:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ অগাস্ট ২০২১
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

default

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হ্যারিকেন হেনরি আছড়ে পড়ার কয়েকদিনের মাথায় এবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল গতিতে আঘাত হেনেছে হ্যারিকেন আইদা। স্থানীয় সময় গত রোববার দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য লুইজিয়ানায় আছড়ে পড়ে এই হ্যারিকেন। প্রবল শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়া এই হ্যারিকেনের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫০ মাইল (২৪০ কিলোমিটার)। গতকাল সোমবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, হ্যারিকেন আইদার আঘাতের পর নিউ অরলিন্স শহর পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। সেখানে এখন কেবল জেনারেটর কাজ করছে।
এছাড়া পূর্বাভাস সত্ত্বেও যেসব মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাননি, তাদেরকে নিজের বাড়িতেই নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, হ্যারিকেন আইদা আঘাত হানার পর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের সাড়ে সাত লাখেরও বেশি মানুষ এখন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এছাড়া হ্যারিকেন আইদা লুইজিয়ানায় বন্যা প্রতিরোধে নির্মিত অবকাঠামোরও পরীক্ষা নেবে। ২০০৫ সালে হ্যারিকেন ক্যাটরিনার আঘাতের পর এসব বাধ ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছিল। ভয়ঙ্কর সেই ঝড়ে সেসময় ১ হাজার ৮০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
নিউ অরলিন্স শহরের বাসিন্দা তানইয়া গালিভার গ্রাসিয়া সেন্টার অব ডিজাস্টার ফিলানথ্রোপি নামক একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। বিবিসিকে তিনি বলছেন, ‘আমি খুবই আতঙ্কিত। আমার ধারণার চেয়েও শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়। বহু বছর ধরে দুর্যোগের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। কিন্তু হ্যারিকেন আইদার আঘাতের সময় আমার অভিজ্ঞতা একেবারে ভিন্ন।’ এদিকে এক টুইট বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দফতর এনডব্লিউএস নিউ অরলিন্সের বাসিন্দাদেরকে নিরাপদে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে। টুইটে বলা হয়েছে, ‘বাড়ির ভেতরের কোনো একটি ঘরে অবস্থান করুন। অথবা এমন ছোট ঘরে থাকুন যেখানে জানালা নেই। আপাতত এই সময়ে সেখানেই অবস্থান করুন।’
এর আগে হ্যারিকেন আইদার কারণে লুইজিয়ানার বিপদাপন্ন মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় স্থানীয় প্রশাসন। এরপর অঙ্গরাজ্যটির বেশ কয়েকটি মোটরওয়েতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। লুইজিয়ানার গভর্নর জন বেল এডওয়ার্ডস জানান, হ্যারিকেন আইদা এতোটাই শক্তিশালী যে গত ১৫০ বছরের মধ্যে এই ঝড়টি সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের সৃষ্টি করতে পারে।
জন বেল এডওয়ার্ডস জানিয়েছেন, ১৮৫০ সালের পর থেকে সম্ভবত এমন ভয়ঙ্কর ঝড় আগে আছড়ে পড়েনি। ঝড়ের গতিবেগ যে ক্রমশ চরমে পৌঁছাচ্ছে সেই সতর্কবার্তাও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া পার্শ্ববর্তী মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ১৬ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চলেই আছড়ে পড়েছিল হ্যারিকেন ক্যাটরিনা। ভয়াবহ সেই দুর্যোগে ক্ষতিও হয়েছিল অনেক বেশি। সেই ভয়াবহ স্মৃতি এখনও যথেষ্ট আতঙ্কের কারণ। সেসময় নিউ অরলিন্স শহরের ৮০ শতাংশ অঞ্চল ভেসে যায় বন্যায়, মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ৮০০ মানুষের। ভয়াবহ সেই ঝড়ে ক্ষতিও হয়েছিল কোটি কোটি টাকার।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নতুন আপদ ‘মব সন্ত্রাস’, আতঙ্কে সারা দেশ

২৪০ কিমি. গতিতে লুইজিয়ানায় ‘আইদা’র আঘাত : অন্ধকারে ৭ লাখ মানুষ

আপডেট সময় : ১২:৫৪:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ অগাস্ট ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হ্যারিকেন হেনরি আছড়ে পড়ার কয়েকদিনের মাথায় এবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল গতিতে আঘাত হেনেছে হ্যারিকেন আইদা। স্থানীয় সময় গত রোববার দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য লুইজিয়ানায় আছড়ে পড়ে এই হ্যারিকেন। প্রবল শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়া এই হ্যারিকেনের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫০ মাইল (২৪০ কিলোমিটার)। গতকাল সোমবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, হ্যারিকেন আইদার আঘাতের পর নিউ অরলিন্স শহর পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। সেখানে এখন কেবল জেনারেটর কাজ করছে।
এছাড়া পূর্বাভাস সত্ত্বেও যেসব মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাননি, তাদেরকে নিজের বাড়িতেই নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, হ্যারিকেন আইদা আঘাত হানার পর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের সাড়ে সাত লাখেরও বেশি মানুষ এখন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এছাড়া হ্যারিকেন আইদা লুইজিয়ানায় বন্যা প্রতিরোধে নির্মিত অবকাঠামোরও পরীক্ষা নেবে। ২০০৫ সালে হ্যারিকেন ক্যাটরিনার আঘাতের পর এসব বাধ ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছিল। ভয়ঙ্কর সেই ঝড়ে সেসময় ১ হাজার ৮০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
নিউ অরলিন্স শহরের বাসিন্দা তানইয়া গালিভার গ্রাসিয়া সেন্টার অব ডিজাস্টার ফিলানথ্রোপি নামক একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। বিবিসিকে তিনি বলছেন, ‘আমি খুবই আতঙ্কিত। আমার ধারণার চেয়েও শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়। বহু বছর ধরে দুর্যোগের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। কিন্তু হ্যারিকেন আইদার আঘাতের সময় আমার অভিজ্ঞতা একেবারে ভিন্ন।’ এদিকে এক টুইট বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দফতর এনডব্লিউএস নিউ অরলিন্সের বাসিন্দাদেরকে নিরাপদে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে। টুইটে বলা হয়েছে, ‘বাড়ির ভেতরের কোনো একটি ঘরে অবস্থান করুন। অথবা এমন ছোট ঘরে থাকুন যেখানে জানালা নেই। আপাতত এই সময়ে সেখানেই অবস্থান করুন।’
এর আগে হ্যারিকেন আইদার কারণে লুইজিয়ানার বিপদাপন্ন মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় স্থানীয় প্রশাসন। এরপর অঙ্গরাজ্যটির বেশ কয়েকটি মোটরওয়েতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। লুইজিয়ানার গভর্নর জন বেল এডওয়ার্ডস জানান, হ্যারিকেন আইদা এতোটাই শক্তিশালী যে গত ১৫০ বছরের মধ্যে এই ঝড়টি সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের সৃষ্টি করতে পারে।
জন বেল এডওয়ার্ডস জানিয়েছেন, ১৮৫০ সালের পর থেকে সম্ভবত এমন ভয়ঙ্কর ঝড় আগে আছড়ে পড়েনি। ঝড়ের গতিবেগ যে ক্রমশ চরমে পৌঁছাচ্ছে সেই সতর্কবার্তাও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া পার্শ্ববর্তী মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ১৬ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চলেই আছড়ে পড়েছিল হ্যারিকেন ক্যাটরিনা। ভয়াবহ সেই দুর্যোগে ক্ষতিও হয়েছিল অনেক বেশি। সেই ভয়াবহ স্মৃতি এখনও যথেষ্ট আতঙ্কের কারণ। সেসময় নিউ অরলিন্স শহরের ৮০ শতাংশ অঞ্চল ভেসে যায় বন্যায়, মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ৮০০ মানুষের। ভয়াবহ সেই ঝড়ে ক্ষতিও হয়েছিল কোটি কোটি টাকার।