নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’, এমন মন্তব্যে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া বিতর্কিত অডিও ক্লিপটি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারই। এ সংক্রান্ত ফরেনসিক প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এর ভিত্তিতে বুধবার (৩০ এপ্রিল) শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আদালতকে জানান, তদন্ত সংস্থা অডিওটির ফরেনসিক পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছে যে, এটি শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বর। এই অডিও ক্লিপটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
এদিকে, এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে হত্যার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এছাড়া আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর আগে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকেও আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। জনরোষের ভয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান দলটির প্রধান শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের হিসাব মতে, অভ্যুত্থানের সময় হাসিনার সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী ও তার দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলাসহ সহিংসতায় ১৪শ’ মানুষ খুন হয়েছেন।
৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হয়, যেখানে শেখ হাসিনাসহ তার সরকার, দল ও জোটের অনেক সহযোগীর বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। ভারতে আশ্রিত হাসিনার বক্তব্য বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাঝেমধ্যে কিছু অডিও ফাঁস হয়। এসব বক্তব্যের বেশিরভাগই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতাকে দেখে নেওয়ার হুমকি বলে প্রতীয়মান হয়। এমনই একটি অডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি। ’