নিজস্ব প্রতিবেদক : একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাওয়ার পথ ঠিক করে দিয়েছে ‘একুশে উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি’।
গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সংবাদ সম্মেলনে এ পথনির্দেশনা তুলে ধরেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবারও শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য লোকসমাগম সীমিত রেখে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহীদ মিনারে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জনসাধারণকে পলাশী মোড় দিয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং জগন্নাথ হলের পাশের রাস্তা হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যেতে হবে। শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ শেষে সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর এবং পেছনের রাস্তা দিয়ে চানখাঁরপুল হয়ে বের হওয়া যাবে।
সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ দুইজন একসঙ্গে শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। এসময় সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে।
উপাচার্য বলেন, “যেহেতু কোভিড পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি, তাই গতবারের মতো এবারও কিছু নিয়ম নীতি মেনে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করব।
“এর মানে এই নয় যে, বেশি মানুষ ফুল দিতে পারবে না। সবার জন্য এটা অবারিত থাকবে, তবে নিয়মানুযায়ী স্লটে স্লটে ভাগ করে।”
তিনি জানান, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পলাশী মোড় থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত সড়কে তিন ফুট পর পর চিহ্ন দেওয়া থাকবে। এই চিহ্ন অনুসরণ করে পর্যায়ক্রমে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে হবে।
এক্ষেত্রে যথাযথভাবে রুটম্যাপ অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে আখতারুজ্জামান বলেন, “বিভিন্ন প্রবেশপথে স্বেচ্ছাসেবকরা হ্যান্ড মাইক দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে প্রচারণা চালাবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টিও তারা মনিটর করবেন।”
শহীদ মিনারে যাওয়া সকলকে কোভিড টিকার সনদ সঙ্গে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
উপাচার্য বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র্যানডমলি যে কারও কোভিড সনদ চেক করতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, যারাই শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসবেন, সবারই টিকা নেওয়া হয়েছে।” প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে অতিথিদের জন্য অভ্যর্থনার ব্যবস্থা থাকলেও এ বছর পরিস্থিতি বিবেচনায় তা থাকছে না বলে জানান তিনি।
রাষ্ট্রীয় আচার অনুযায়ী, ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহর ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি, এরপর প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক, বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২২ উদযাপনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, রাজনৈতিক দল, সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থা ও সর্বসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেছে একুশে উদযাপন কমিটি।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, অমর একুশে উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সমন্বয়কারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ, যুগ্ম-সমন্বয়কারী শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, যুগ্ম-সমন্বয়কারী শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া এবং প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী উপস্থিত ছিলেন।
২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে যাওয়ার পথনির্দেশ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ