ঢাকা ০২:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

২০ লাখ ইয়াবা আটক, ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা

  • আপডেট সময় : ০১:৫২:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : সাড়ে পাঁচ বছর আগে গভীর সাগরে মাছ ধরার ট্রলার থেকে ২০ লাখ ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে চট্টগ্রামের একটি আদালত।
গতকাল রোববার চট্টগ্রাম চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরিফুল আলম ভুঁইয়ার আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ বলেন, “১৭ আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৮ জনের প্রত্যেকেকে ১৫ বছর করে কারাদ-, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। “অন্য তিন আসামিকে ৫ বছর করে কারাদ-, ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদ- দেয়া হয়েছে। রায়ে খালাস পেয়েছেন ৬ জন।”
১৫ বছর করে কারাদ- পাওয়া আটজন হলেন- মো. মকতুল হোসেন, মো. নূর, হেলাল উদ্দিন, আব্দুল খালেক ওরফে বুদইন্যা, মো. জানে আলম, মো. লোকমান, মো. এনায়েতুল্লাহ ও নুরুল মোস্তফা। এই আটজনকে ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল ট্রলার থেকে ২০ লাখ ইয়াবা উদ্ধারের দিনই গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব। পাঁচ বছর করে কারাদ-ে দ-িত তিন আসামির মধ্যে মো. মোজাহার মিয়া হলেন ওই ইয়াবা চক্রের হোতা ও চালানটির মালিক। তাকেও পাঁচ বছর আগে গরীর পাঁচলাইশ থানার সুগন্ধা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পাঁচ বছরের সাজায় দ-িত অন্য দুই আসামি আব্দুল নূর ও আব্দুল জলিল শুরু থেকেই পলাতক আছেন। দ-িতদের মধ্যে ৯ জনকে রায় ঘোষণার পর কারাগারে পাঠানো হয়। আর খালাস পাওয়া ছয় জন হলেন- আহমদ ছফা, আবুল কাশেম ওরফে একে খান, আমির হোসেন, নূল আলম ওরফে বাবুল ওরফে নুরুল আলম, মো. কফিল ও মো. মানিক। এদের মধ্যে আহমদ ছফা ছাড়া বাকিরা পলাতক। ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল ভোরে গভীর সাগরে এফভি মোহছেন আউলিয়া নামের মাছ ধরার ট্রলারটি থেকে ২০ লাখ ইয়াবাসহ আটজনকে গ্রেপ্তারের পরদিন মামলা করে র‌্যাব। র‌্যাব-৭ এর ডিএডি অমল চন্দ বাদী হয়ে নগরীর পতেঙ্গা থানায় মামলাটি করেন। তাতে সেদিন পর্যন্ত গ্রেপ্তার ১২ জন এবং মিয়ানমারের নাগরিক পলাতক ৩ ব্যক্তি শুক্কুর, লাল ও মগ সেন্সুকে আসামি করা হয়। এই মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের এপ্রিলে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাতে ১৭ জনকে আসামি করা হয়। তবে তিন মিয়ানমারের নাগরিকের সম্পৃক্ততা পেলেও তাদের নাম-ঠিকানা না পাওয়া তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয় অভিযোগপত্রে। অভিযোগপত্র দেওয়ার দুই বছর পর ২০২০ সালের ১০ মার্চ চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে ১৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। আসামিদের মধ্যে ছয়জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আদালতে। মামলায় ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার রায় এল।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সে সময়ের র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে সে সময় জানিয়েছিলেন, মোজাহার ওই ইয়াবা চালানের মালিক এবং এই চক্রের অন্যতম হোতা। দ-িতদের মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফ থানার মকতুল হোসেন হলেন মোজাহারের ম্যানেজার। নূর এই ইয়াবা চালানের মালিকদের একজন। বাকিরা ট্রলারের মাঝি-মাল্লা। র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন ওই ট্রলারের মালিক জলিলকে (লবণ জলিল) গ্রেপ্তার করা যায়নি। এই চক্রের সাথে মিয়ানমারের কয়েকজন নাগরিকও জড়িত জানিয়ে তাদের কাছ থেকে সাগর পথে ওই চালানটি সংগ্রহ করা হয় বলে জানিয়েছিল র‌্যাব কর্মকর্তারা।
৪ মাসে ৭৬ লাখ ইয়াবা খালাস : ২০ লাখ ইয়াবার চালানসহ মাছ ধরার ট্রলারটি সেদিন আটক হলেও এর আগের চার মাসে মোট ৭৬ লাখ ইয়াবার চারটি চালান ওই চক্র খালাস করেছিল বলে র‌্যাব জানায়। তখন জানান র‌্যাব-৭ প্রধান মিফতাহ উদ্দিন জানান মোজাহার, জলিল ও নূর মিলে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ১৬ লাখ এবং ২০১৭ সালের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে তিন চালানের প্রতিটিতে ২০ লাখ করে আরও ৬০ লাখ ইয়াবা খালাস করেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

২০ লাখ ইয়াবা আটক, ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা

আপডেট সময় : ০১:৫২:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : সাড়ে পাঁচ বছর আগে গভীর সাগরে মাছ ধরার ট্রলার থেকে ২০ লাখ ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে চট্টগ্রামের একটি আদালত।
গতকাল রোববার চট্টগ্রাম চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরিফুল আলম ভুঁইয়ার আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ বলেন, “১৭ আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৮ জনের প্রত্যেকেকে ১৫ বছর করে কারাদ-, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। “অন্য তিন আসামিকে ৫ বছর করে কারাদ-, ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদ- দেয়া হয়েছে। রায়ে খালাস পেয়েছেন ৬ জন।”
১৫ বছর করে কারাদ- পাওয়া আটজন হলেন- মো. মকতুল হোসেন, মো. নূর, হেলাল উদ্দিন, আব্দুল খালেক ওরফে বুদইন্যা, মো. জানে আলম, মো. লোকমান, মো. এনায়েতুল্লাহ ও নুরুল মোস্তফা। এই আটজনকে ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল ট্রলার থেকে ২০ লাখ ইয়াবা উদ্ধারের দিনই গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব। পাঁচ বছর করে কারাদ-ে দ-িত তিন আসামির মধ্যে মো. মোজাহার মিয়া হলেন ওই ইয়াবা চক্রের হোতা ও চালানটির মালিক। তাকেও পাঁচ বছর আগে গরীর পাঁচলাইশ থানার সুগন্ধা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পাঁচ বছরের সাজায় দ-িত অন্য দুই আসামি আব্দুল নূর ও আব্দুল জলিল শুরু থেকেই পলাতক আছেন। দ-িতদের মধ্যে ৯ জনকে রায় ঘোষণার পর কারাগারে পাঠানো হয়। আর খালাস পাওয়া ছয় জন হলেন- আহমদ ছফা, আবুল কাশেম ওরফে একে খান, আমির হোসেন, নূল আলম ওরফে বাবুল ওরফে নুরুল আলম, মো. কফিল ও মো. মানিক। এদের মধ্যে আহমদ ছফা ছাড়া বাকিরা পলাতক। ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল ভোরে গভীর সাগরে এফভি মোহছেন আউলিয়া নামের মাছ ধরার ট্রলারটি থেকে ২০ লাখ ইয়াবাসহ আটজনকে গ্রেপ্তারের পরদিন মামলা করে র‌্যাব। র‌্যাব-৭ এর ডিএডি অমল চন্দ বাদী হয়ে নগরীর পতেঙ্গা থানায় মামলাটি করেন। তাতে সেদিন পর্যন্ত গ্রেপ্তার ১২ জন এবং মিয়ানমারের নাগরিক পলাতক ৩ ব্যক্তি শুক্কুর, লাল ও মগ সেন্সুকে আসামি করা হয়। এই মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের এপ্রিলে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাতে ১৭ জনকে আসামি করা হয়। তবে তিন মিয়ানমারের নাগরিকের সম্পৃক্ততা পেলেও তাদের নাম-ঠিকানা না পাওয়া তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয় অভিযোগপত্রে। অভিযোগপত্র দেওয়ার দুই বছর পর ২০২০ সালের ১০ মার্চ চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে ১৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। আসামিদের মধ্যে ছয়জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আদালতে। মামলায় ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার রায় এল।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সে সময়ের র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে সে সময় জানিয়েছিলেন, মোজাহার ওই ইয়াবা চালানের মালিক এবং এই চক্রের অন্যতম হোতা। দ-িতদের মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফ থানার মকতুল হোসেন হলেন মোজাহারের ম্যানেজার। নূর এই ইয়াবা চালানের মালিকদের একজন। বাকিরা ট্রলারের মাঝি-মাল্লা। র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন ওই ট্রলারের মালিক জলিলকে (লবণ জলিল) গ্রেপ্তার করা যায়নি। এই চক্রের সাথে মিয়ানমারের কয়েকজন নাগরিকও জড়িত জানিয়ে তাদের কাছ থেকে সাগর পথে ওই চালানটি সংগ্রহ করা হয় বলে জানিয়েছিল র‌্যাব কর্মকর্তারা।
৪ মাসে ৭৬ লাখ ইয়াবা খালাস : ২০ লাখ ইয়াবার চালানসহ মাছ ধরার ট্রলারটি সেদিন আটক হলেও এর আগের চার মাসে মোট ৭৬ লাখ ইয়াবার চারটি চালান ওই চক্র খালাস করেছিল বলে র‌্যাব জানায়। তখন জানান র‌্যাব-৭ প্রধান মিফতাহ উদ্দিন জানান মোজাহার, জলিল ও নূর মিলে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ১৬ লাখ এবং ২০১৭ সালের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে তিন চালানের প্রতিটিতে ২০ লাখ করে আরও ৬০ লাখ ইয়াবা খালাস করেন।