ঢাকা ১২:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

২০৫০ সালের মধ্যে দেশের সোয়া কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুতের আশঙ্কা

  • আপডেট সময় : ০২:৪৯:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সোয়া কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রতি আটজনে একজন এবং এক বিলিয়ন লোকের মধ্যে ২৮১ মিলিয়ন অভিবাসী এবং কয়েক মিলিয়ন ব্যক্তি রাষ্ট্রহীন অবস্থায় রয়েছে। এ বছর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ৭ দশমিক ১ মিলিয়নেরও (৭০ লাখেরও বেশি) বেশি বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ১৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৩৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানে শেরাটন হোটেলে ডব্লিউএইচও আয়োজিত চার দিনব্যাপী ‘তৃতীয় গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি এসব তথ্য জানায়। ডব্লিউএইচও জানায়, জলবায়ু পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, দ্বন্দ্ব, বাণিজ্য এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি এই বাস্তুচ্যুত ও অভিবাসন সমস্যাকে প্রকট করে তুলছে। ১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশ তিনটি বড় ধরনের অভিবাসী সমস্যা প্রত্যক্ষ করেছে। যেখানে মিয়ানমারের নাগরিকদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, যাদের প্রত্যেকের উপযুক্ত চিকিৎসা ও বাসস্থান প্রয়োজন। শরণার্থী ও অভিবাসী স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোকে ভালোভাবে মোকাবিলা, পেশাদার দক্ষতা ও সক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য দেশ ও অঞ্চলগুলোকে সহায়তার লক্ষ্যে চার দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক ড. টেডরস আধানম গেব্রিয়াসেস বলেন, অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুতি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার ওপর গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পার্থক্য, আর্থিক বাধা, কুসংস্কার এবং বৈষম্য সবই উদ্বাস্তু ও অভিবাসীদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের এ বাধা অতিক্রম করতে সাহায্য করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শরণার্থী গ্লোবাল স্কুলের মাধ্যমে শরণার্থী এবং অভিবাসীদের আরও ভালো সেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা তৈরি করাও একটি লক্ষ্য। ডব্লিউএইচও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, স্বাস্থ্যের অধিকার এমন একটি অধিকার, যা সর্বত্র সব মানুষের, বিশেষ করে উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের জন্য প্রসারিত। কারণ, সত্যিকার অর্থে সম্মানিত, সুরক্ষিত এবং পরিপূর্ণ হতে হলে স্বাস্থ্যের অধিকার অবশ্যই সবচেয়ে প্রান্তিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ভালোভাবে দিতে হবে। ডব্লিউএইচওর এই আঞ্চলিক পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ শুধু বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার অ্যাক্সেসই দেয়নি- করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনও দিয়েছে। এছাড়া এটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং আইনি দুর্বলতাগুলো মোকাবিলার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা করেছে।
বাস্তুহীন এবং অভিবাসীদের স্বাস্থ্য ও অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক ডা. সান্তিনো সেভেরোনি বলেন, বার্ষিক গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ হল ডব্লিউএইচও হেলথ অ্যান্ড মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের একটি ফ্ল্যাগশিপ এবং প্রচারের জন্য গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান। যা বাস্তবায়নের দিকে উদ্বাস্তু ও অভিবাসী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আঞ্চলিক এবং দেশীয় অফিসগুলোর সঙ্গে কৌশলগত এবং অপারেশনাল সহযোগিতা জোরদার করার একটি সুযোগ। চার দিনব্যাপী এ আয়োজনে গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বেসরকারি সংস্থা, যুব প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা অংশ নেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

২০৫০ সালের মধ্যে দেশের সোয়া কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুতের আশঙ্কা

আপডেট সময় : ০২:৪৯:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সোয়া কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রতি আটজনে একজন এবং এক বিলিয়ন লোকের মধ্যে ২৮১ মিলিয়ন অভিবাসী এবং কয়েক মিলিয়ন ব্যক্তি রাষ্ট্রহীন অবস্থায় রয়েছে। এ বছর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ৭ দশমিক ১ মিলিয়নেরও (৭০ লাখেরও বেশি) বেশি বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ১৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৩৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানে শেরাটন হোটেলে ডব্লিউএইচও আয়োজিত চার দিনব্যাপী ‘তৃতীয় গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি এসব তথ্য জানায়। ডব্লিউএইচও জানায়, জলবায়ু পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, দ্বন্দ্ব, বাণিজ্য এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি এই বাস্তুচ্যুত ও অভিবাসন সমস্যাকে প্রকট করে তুলছে। ১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশ তিনটি বড় ধরনের অভিবাসী সমস্যা প্রত্যক্ষ করেছে। যেখানে মিয়ানমারের নাগরিকদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, যাদের প্রত্যেকের উপযুক্ত চিকিৎসা ও বাসস্থান প্রয়োজন। শরণার্থী ও অভিবাসী স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোকে ভালোভাবে মোকাবিলা, পেশাদার দক্ষতা ও সক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য দেশ ও অঞ্চলগুলোকে সহায়তার লক্ষ্যে চার দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক ড. টেডরস আধানম গেব্রিয়াসেস বলেন, অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুতি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার ওপর গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পার্থক্য, আর্থিক বাধা, কুসংস্কার এবং বৈষম্য সবই উদ্বাস্তু ও অভিবাসীদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের এ বাধা অতিক্রম করতে সাহায্য করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শরণার্থী গ্লোবাল স্কুলের মাধ্যমে শরণার্থী এবং অভিবাসীদের আরও ভালো সেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা তৈরি করাও একটি লক্ষ্য। ডব্লিউএইচও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, স্বাস্থ্যের অধিকার এমন একটি অধিকার, যা সর্বত্র সব মানুষের, বিশেষ করে উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের জন্য প্রসারিত। কারণ, সত্যিকার অর্থে সম্মানিত, সুরক্ষিত এবং পরিপূর্ণ হতে হলে স্বাস্থ্যের অধিকার অবশ্যই সবচেয়ে প্রান্তিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ভালোভাবে দিতে হবে। ডব্লিউএইচওর এই আঞ্চলিক পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ শুধু বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার অ্যাক্সেসই দেয়নি- করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনও দিয়েছে। এছাড়া এটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং আইনি দুর্বলতাগুলো মোকাবিলার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা করেছে।
বাস্তুহীন এবং অভিবাসীদের স্বাস্থ্য ও অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক ডা. সান্তিনো সেভেরোনি বলেন, বার্ষিক গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ হল ডব্লিউএইচও হেলথ অ্যান্ড মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের একটি ফ্ল্যাগশিপ এবং প্রচারের জন্য গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান। যা বাস্তবায়নের দিকে উদ্বাস্তু ও অভিবাসী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আঞ্চলিক এবং দেশীয় অফিসগুলোর সঙ্গে কৌশলগত এবং অপারেশনাল সহযোগিতা জোরদার করার একটি সুযোগ। চার দিনব্যাপী এ আয়োজনে গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বেসরকারি সংস্থা, যুব প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা অংশ নেন।