নিজস্ব প্রতিবেদক : মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করীম বলেছেন, দেশে ৪১ কোটি গবাদিপশু রয়েছে এবং ১ কোটি ১৯ লক্ষ পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে। তিনি গত রোববার ঢাকায় অনলাইনে চালু হওয়া ডিজিটাল পশুর হাটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিগত বছরের ন্যায় এবারো দেশের বাইরে থেকে গরু আমদানির প্রয়োজন নেই। চামড়া সংরক্ষণ ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য বিজ্ঞানসম্মত ও আধুনিক কসাইখানা তৈরির উদ্যোগ নেবে সরকার।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অধীনে এবারের ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন করছে ই-কমার্স আসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এবং বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)। সহযোগিতায় রয়েছে বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল, এটুআই-একশপ। অনলাইনে আয়োজিত ডিজিটাল কোরবানির পশুর হাটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র আতিকুল ইসলাম। অনলাইন পশুর হাটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি জুমে আয়োজন করা হয়।
করোনার কারণে এবার অনলাইনে পশু বিক্রিকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলা হয় সারাদেশের বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে গতবছর ২৭ হাজার পশু বিক্রি হয়েছে এবার লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ পশু।
অনলাইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো যুক্ত ছিলেন এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দীন, আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ডব্লিওটিও সেল-এর মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর আহমেদ জামাল।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারি সেবা নে দিনে আধুনিক হচ্ছে এবং সেটির সুফল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে। করোনা মহামারি থেকে সুরক্ষা পেতে মানুষ বড় ধরনের একটা সহযোগিতা পাবে অনলাইনে পশু ক্রয়ের মাধ্যমে।
মন্ত্রী ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা দামের একটি গরু কিনে ডিজিটাল হাটের উদ্বোধন করেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জাব্বার বলেন, আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল সেবা কোরবানি গরু বিক্রি পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ যে প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে পারে তার একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এই ডিজিটাল গরু হাট।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ক্রেতা ও বিক্রেতার আস্থা ও নিরাপত্তা বিধানের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও একশপ এর মাধ্যমে আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টাও অন্তভূক্ত করছি। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ই-কমার্স দিন দিন জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যেহেতু সরকারি-বেসরকারি সক্ষমতা ও দক্ষতা একসাথে যুক্ত হয়ে কাজ করছে। সেহেতু এখানে ক্রেতা বিক্রেতার জন্য নিরাপদ পদ্ধতি মনে হচ্ছে। এই সেবার সাথে যতবেশী মানুষকে যুক্ত করা যাবে ততই ডিজিটাল বাংলাদেশ এর সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সেবার কারণে দেশ বদলে যাচ্ছে। ১০ কোটি মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং করছে। সারাদেশে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি জেলায় কোরবানী পশু বিক্রির প্লাটফর্ম তৈরী হয়েছে। সব প্লাটফর্মকে একই সূত্রে গেঁথে মানুষকে জানিয়ে দিতে হবে। তিনি ডিজিটাল কোরবানি হাটে অভিযোগ আসলে তা দ্রুত সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানান। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক একটি গরু কেনেন। এটিকে দ্ররিদ্র জনগোষ্ঠির মাঝে বিতরণ করার ঘোষণা দেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দীন বলেন, করোনার এই দু:সময়ে ঘরে বসে কোরবানি পশু হাটে না গিয়ে অনলাইনে কেনাকাটা করা জনসাধারণের জন্য এটি একটি আশীর্বাদ। জনগনকে এর সুফলের কথা জানিয়ে দেয়ার জন্য তিনি অনুরোধ করেন।
আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম বলেন, গতবারের সফলতার কারণে এবার ডিজিটাল হাট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নীতি পলিসি তৈরী করা যেমন সহজ হয়েছে তেমনি এর প্রতি ক্রেতাদেরও তুলনামুলক বেশি আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর আহমেদ জামাল বলেন, ডিজিটাল লেনদেন এর নিরাপত্তা এবং গ্রাহকের আস্থা অর্জনে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি ও কৌশলগত সহযোগিতা করবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ই-কমার্স সেক্টরে শৃংখলা বজায় রাখতে স্ক্রো সেবা বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে। ডব্লিওটিও সেল এর মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান বলেছেন, এবারের ডিজিটাল হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতার নিরাপত্তার স্বার্থে একটি গাইড লাইন প্রনয়ন করা হয়েছে। অভিজ্ঞতার আলোকে ভবিষ্যতে এটিকে আরো সময়োপোযোগী করা হবে। ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন গতবার ৪৫টি মেম্বারসহ মোট ৬০ জন মার্চেন্ট এবং এবার ই-ক্যাব ও ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশন মিলে ১০০এর বেশী মার্চেন্ট । গতবছর দেশব্যাপী ২৭ হাজার গরু বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এবার তা আরো অনেক বাড়বে বলে আমরা মনে করি। তিনি জড়িত সকল পক্ষসমূহকে ধন্যবাদ জানান। ডিজিটাল হাটের লিংক: যঃঃঢ়ং://ফরমরঃধষযধধঃ.হবঃ/
১ কোটি ১৯ লাখ পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ