ঢাকা ১১:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

১৯৭১-এর এইদিনে যা ঘটেছিল

  • আপডেট সময় : ১০:০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২
  • ১২৫ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মার্চ মাস ছিল উত্তাল ঘটনাবহুল মাস। ১৯৭১ সালের ১৫ মার্চের আজকের দিনে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করতে ঢাকা আসেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। তবে ইয়াহিয়ার এই আগমন ছিল গোপনে।
ইয়াহিয়া কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ঢাকা পৌঁছান। বিমানবন্দরে সামরিক গভর্নর লে. জেনারেল টিক্কা খান তাকে স্বাগত জানান। কোন সাংবাদিক ও বাঙালিকে এসময় বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় নি। বঙ্গবন্ধু তার সাদা গাড়িতে কালো পতাকা উড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ভবনে যান ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠক করতে। বৈঠকে তাজউদ্দিন আহমেদসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন
এদিন খুলনায় আয়োজিত এক সমাবেশে ছাত্র সমাজের নেত্রী হাসিনা বানু শিরিন বলেন, মহান স্বাধীনতার আন্দোলনে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও যুদ্ধ করতে প্রস্তুত। ঢাকাতেও দিনভর অনুষ্ঠিত হয় সভা-সমাবেশ এবং মিছিল। কবি সুফিয়া কামালের সভাপতিত্বে তোপখানা রোডে মহিলাদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতার ও টিভি শিল্পীবৃন্দ দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে গণসঙ্গীত, পথনাটক পরিবেশন করেন। সরকারি-বেসরকারি ভবনের পাশাপাশি যানবাহনেও ওড়ে কালো পতাকা।
এদিন নতুন সামরিক বিধি জারির প্রতিবাদে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ বায়তুল মোকারম প্রাঙ্গণে ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করে। সভায় ছাত্র নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানান। এতে মুক্তি সংগ্রামে অস্ত্র নিয়ে সব নাগরিককে প্রস্তুত থাকার আহবান জানানো হয়।
একাত্তরের আজকের দিনে খুলনার হাদিস পার্কের জনসভায় বাংলা জাতীয় লীগ প্রধান আতাউর রহমান খান বলেন, বাংলার প্রতিটি মানুষ আজ বঙ্গবন্ধুর পেছনে একতাবদ্ধ। অন্যদিকে পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে নতুন দাবি উথ্থাপন করেন। তিনি বলেন, দেশে আওয়ামী লীগ ও পিপলস পার্টির সমন্বয়ে কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে হবে। করাচীতে এক জনসভায় কয়েকজন প্রখ্যাত রাজনীতিক বলেন, ভুট্টো পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অনেক কথাই বলেছেন। কিন্তু তিনি ভুলে গেছেন তার পিপলস পার্টি এই অঞ্চলে শতকরা আটত্রিশ ভাগ ভোটও পায়নি। তারা বলেন ক্ষমতা গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগই একমাত্র দল। একাত্তরের আজকের দিনে আ.স.ম. রব এক সমাবেশে বলেন যে, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। আমাদের উপর সামরিক বিধি জারি করার ক্ষমতা কারো নেই। বাংলাদেশের মানুষ একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশেই চলবে। এদিন প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ এক বিবৃতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনে জনগণের নিরঙ্কুশ সাড়া পাওয়া গেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

১৯৭১-এর এইদিনে যা ঘটেছিল

আপডেট সময় : ১০:০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মার্চ মাস ছিল উত্তাল ঘটনাবহুল মাস। ১৯৭১ সালের ১৫ মার্চের আজকের দিনে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করতে ঢাকা আসেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। তবে ইয়াহিয়ার এই আগমন ছিল গোপনে।
ইয়াহিয়া কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ঢাকা পৌঁছান। বিমানবন্দরে সামরিক গভর্নর লে. জেনারেল টিক্কা খান তাকে স্বাগত জানান। কোন সাংবাদিক ও বাঙালিকে এসময় বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় নি। বঙ্গবন্ধু তার সাদা গাড়িতে কালো পতাকা উড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ভবনে যান ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠক করতে। বৈঠকে তাজউদ্দিন আহমেদসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন
এদিন খুলনায় আয়োজিত এক সমাবেশে ছাত্র সমাজের নেত্রী হাসিনা বানু শিরিন বলেন, মহান স্বাধীনতার আন্দোলনে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও যুদ্ধ করতে প্রস্তুত। ঢাকাতেও দিনভর অনুষ্ঠিত হয় সভা-সমাবেশ এবং মিছিল। কবি সুফিয়া কামালের সভাপতিত্বে তোপখানা রোডে মহিলাদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতার ও টিভি শিল্পীবৃন্দ দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে গণসঙ্গীত, পথনাটক পরিবেশন করেন। সরকারি-বেসরকারি ভবনের পাশাপাশি যানবাহনেও ওড়ে কালো পতাকা।
এদিন নতুন সামরিক বিধি জারির প্রতিবাদে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ বায়তুল মোকারম প্রাঙ্গণে ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করে। সভায় ছাত্র নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানান। এতে মুক্তি সংগ্রামে অস্ত্র নিয়ে সব নাগরিককে প্রস্তুত থাকার আহবান জানানো হয়।
একাত্তরের আজকের দিনে খুলনার হাদিস পার্কের জনসভায় বাংলা জাতীয় লীগ প্রধান আতাউর রহমান খান বলেন, বাংলার প্রতিটি মানুষ আজ বঙ্গবন্ধুর পেছনে একতাবদ্ধ। অন্যদিকে পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে নতুন দাবি উথ্থাপন করেন। তিনি বলেন, দেশে আওয়ামী লীগ ও পিপলস পার্টির সমন্বয়ে কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে হবে। করাচীতে এক জনসভায় কয়েকজন প্রখ্যাত রাজনীতিক বলেন, ভুট্টো পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অনেক কথাই বলেছেন। কিন্তু তিনি ভুলে গেছেন তার পিপলস পার্টি এই অঞ্চলে শতকরা আটত্রিশ ভাগ ভোটও পায়নি। তারা বলেন ক্ষমতা গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগই একমাত্র দল। একাত্তরের আজকের দিনে আ.স.ম. রব এক সমাবেশে বলেন যে, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। আমাদের উপর সামরিক বিধি জারি করার ক্ষমতা কারো নেই। বাংলাদেশের মানুষ একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশেই চলবে। এদিন প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ এক বিবৃতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনে জনগণের নিরঙ্কুশ সাড়া পাওয়া গেছে।