নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী ও সমর্থক ধনকুবের হয়েছেন, তারা বাংলাদেশের ব্যাংক খাত থেকে ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লুট করে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ ২ লাখ কোটি টাকারও বেশি। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে যুক্ত টাইকুনদের বিরুদ্ধে তার শাসনামলে ব্যাংকিং খাত থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ করেছেন।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো দখলে নেয়ার পর আনুমানিক ২ ট্রিলিয়ন বা ১ হাজার ৬৭০ কোটি মার্কিন ডলার লুট করা হয়েছে। মূলত ব্যাংক দখলে নেয়ার পর নতুন শেয়ার হোল্ডারদের ঋণ দেওয়া এবং আমদানি চালান স্ফীত করার মতো পদ্ধতি ব্যবহার করে এই অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়েছে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, যেকোনো আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এটিই সবচেয়ে বড়, সর্বোচ্চ ব্যাংক লুটপাট। বিশ্বের আর কোথাও এই পরিমাণ লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। এর পেছনে তৎকালীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। তিনি বলেন, শিল্পগোষ্ঠী এস আলমের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার সহযোগীরা ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ন্যূনতম ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিনিয়ে নিয়েছে। প্রতিদিনই তারা নিজেদের ঋণ দিত।
আইএমএফের সাবেক এ কর্মকর্তা বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে নেতৃস্থানীয় ব্যাংকের বোর্ড সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। তার মিত্রদের বৈদেশিক সম্পদের তদন্তের জন্য যুক্তরাজ্যের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দেউলিয়া হওয়া প্রায় ডজন খানেক ব্যাংকের অডিট শেষ করে চুরি হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়েছে বাংলাদেশ। আমরা সেই অডিটটি আন্তর্জাতিক এবং দেশের আদালতে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করতে চাই।