ঢাকা ০৭:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

১৬’র কম বয়সীদের সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ চায় ইইউ পার্লামেন্ট

  • আপডেট সময় : ০৭:১১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রযুক্তি ডেস্ক: শিশু সুরক্ষার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বয়স সীমা নির্ধারণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।

গত বুধবার ইইউ-এর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বলেছে, সামাজিক মাধ্যমে শিশুদের প্রবেশের জন্য ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করা হোক। এর মূল কারণ, টিনএজারদের মধ্যে অতিরিক্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ফলে যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে তা কমানো।

এ চাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এ আহ্বান এমন সময়ে এল যখন ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য এ ডিসেম্বরে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি ডেনমার্ক ও মালয়েশিয়াও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা করছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

এর আগে ইইউকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ অনুরোধ করেছিলেন, ১৫ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধের নিয়ম করা হোক। তবে বিষয়টি ঠিক কীভাবে কার্যকর হবে তা স্পষ্ট নয়। কারণ ইইউ’র প্রতিটি সদস্য দেশেরই নিজ দেশে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে বয়সসীমা নির্ধারণের ক্ষমতা রয়েছে।

পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি চারশ ৮৩ ভোটের সমর্থনে পাশ হয়েছে, যেখানে ৯২ জন বিরোধিতা করেছেন ও ৮৬ জন ভোট দেননি। ১৬ বছরের কম বয়সীদের মা-বাবার অনুমতি ছাড়া অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ভিডিও শেয়ারিং সাইট ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়ার এবং ১৩ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

গত মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) পার্লামেন্টে আলোচনায় এ প্রস্তাবটির প্রধান উদ্যোক্তা ডেনিশ আইনপ্রণেতা ক্রিস্টেল শালডেমোস বলেছেন, আমরা এমন এক পরীক্ষার মধ্যে রয়েছি, যেখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই আমেরিকান ও চীনা বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি প্রতিদিন আমাদের শিশু ও টিনএজারদের মনোযোগ প্রায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে সীমাহীনভাবে ব্যবহার করে চলেছে।

শালডেমোস বলেছেন, এ পরীক্ষায় পেছনের কারিগরদের মধ্যে রয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর প্রধান ইলন মাস্ক, মার্কিন সামাজিক মাধ্যম জায়ান্ট মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গ, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও তাদের প্রযুক্তি শাখা শর্ট ভিডিও সাইট টিকটক।

শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ওপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব এখন বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, মানসিক স্বাস্থ্য সংকট তৈরিতে ভূমিকা রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে মামলার মুখোমুখি হচ্ছে টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট, গুগল এবং ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল কোম্পানি মেটা।

পার্লামেন্টে শিশুদের জন্য ‘লুট বক্স’ বা অর্থ দিয়ে জেতা বা কেনা যায় এমন ভার্চুয়াল পণ্য নিষিদ্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া শিশুদের জন্য এ ধরনের সাজেশন অ্যালগরিদম বন্ধের ও বয়স অনুসারে উপযোগী কনটেন্ট তৈরিতে আইন প্রণয়নেরও আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। শ্যালডেমোস বলেছেন, এ রিপোর্টের মাধ্যমে অবশেষে আমরা একটি সীমারেখা টেনেছি। আমরা স্পষ্টভাবে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মকে বলছি, ‘আপনাদের সেবা শিশুদের জন্য তৈরি নয় এবং এই এক্সপেরিমেন্ট যেন এখানেই শেষ হয়।

সানা/ওআ/আপ্র/২৮/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

১৬’র কম বয়সীদের সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ চায় ইইউ পার্লামেন্ট

আপডেট সময় : ০৭:১১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: শিশু সুরক্ষার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বয়স সীমা নির্ধারণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।

গত বুধবার ইইউ-এর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বলেছে, সামাজিক মাধ্যমে শিশুদের প্রবেশের জন্য ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করা হোক। এর মূল কারণ, টিনএজারদের মধ্যে অতিরিক্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ফলে যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে তা কমানো।

এ চাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এ আহ্বান এমন সময়ে এল যখন ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য এ ডিসেম্বরে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি ডেনমার্ক ও মালয়েশিয়াও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা করছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

এর আগে ইইউকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ অনুরোধ করেছিলেন, ১৫ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধের নিয়ম করা হোক। তবে বিষয়টি ঠিক কীভাবে কার্যকর হবে তা স্পষ্ট নয়। কারণ ইইউ’র প্রতিটি সদস্য দেশেরই নিজ দেশে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে বয়সসীমা নির্ধারণের ক্ষমতা রয়েছে।

পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি চারশ ৮৩ ভোটের সমর্থনে পাশ হয়েছে, যেখানে ৯২ জন বিরোধিতা করেছেন ও ৮৬ জন ভোট দেননি। ১৬ বছরের কম বয়সীদের মা-বাবার অনুমতি ছাড়া অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ভিডিও শেয়ারিং সাইট ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়ার এবং ১৩ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

গত মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) পার্লামেন্টে আলোচনায় এ প্রস্তাবটির প্রধান উদ্যোক্তা ডেনিশ আইনপ্রণেতা ক্রিস্টেল শালডেমোস বলেছেন, আমরা এমন এক পরীক্ষার মধ্যে রয়েছি, যেখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই আমেরিকান ও চীনা বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি প্রতিদিন আমাদের শিশু ও টিনএজারদের মনোযোগ প্রায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে সীমাহীনভাবে ব্যবহার করে চলেছে।

শালডেমোস বলেছেন, এ পরীক্ষায় পেছনের কারিগরদের মধ্যে রয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর প্রধান ইলন মাস্ক, মার্কিন সামাজিক মাধ্যম জায়ান্ট মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গ, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও তাদের প্রযুক্তি শাখা শর্ট ভিডিও সাইট টিকটক।

শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ওপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব এখন বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, মানসিক স্বাস্থ্য সংকট তৈরিতে ভূমিকা রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে মামলার মুখোমুখি হচ্ছে টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট, গুগল এবং ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল কোম্পানি মেটা।

পার্লামেন্টে শিশুদের জন্য ‘লুট বক্স’ বা অর্থ দিয়ে জেতা বা কেনা যায় এমন ভার্চুয়াল পণ্য নিষিদ্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া শিশুদের জন্য এ ধরনের সাজেশন অ্যালগরিদম বন্ধের ও বয়স অনুসারে উপযোগী কনটেন্ট তৈরিতে আইন প্রণয়নেরও আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। শ্যালডেমোস বলেছেন, এ রিপোর্টের মাধ্যমে অবশেষে আমরা একটি সীমারেখা টেনেছি। আমরা স্পষ্টভাবে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মকে বলছি, ‘আপনাদের সেবা শিশুদের জন্য তৈরি নয় এবং এই এক্সপেরিমেন্ট যেন এখানেই শেষ হয়।

সানা/ওআ/আপ্র/২৮/১১/২০২৫