ঢাকা ০৪:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শহীদ মিনারে সমাবেশ

১৫ জানুয়ারির মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ দাবি

  • আপডেট সময় : ০৭:২৯:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিতে যোগ দেন হাজারো মানুষ। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে এ দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

এ সমাবেশ থেকেই ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপের মধ্যে গত সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সরকারের পক্ষ থেকে শিগগিরই ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজকের এ কর্মসূচির নাম দেয় ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা)। এ কর্মসূচি উপলক্ষে সারা দেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা–কর্মীরা আজ শহীদ মিনারে সমবেত হন।

সন্ধ্যায় সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এত দিন পর্যন্ত আমাদের এই জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের কোনো ঘোষণাপত্র ছিল না। আমরা বলতে চাই, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে আমাদের এই জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।’

উপস্থিত নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আপনারা জেলায় জেলায়, পাড়া–মহল্লায় এই ঘোষণাপত্রের পক্ষে মানুষের কাছে যাবেন, মানুষের কথা শুনবেন। তারা কী বলতে চায়, সেই কথাগুলো উঠিয়ে নিয়ে আসবেন।’

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিপক্ষে, মুজিববাদীদের বিপক্ষে, যারা এমন ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েম করেছে, তাদের বিপক্ষে আমাদের এই লড়াই জারি থাকবে।’ বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে আবার দেখা হবে ১৫ জানুয়ারিতে আমাদের ঘোষণাপত্র নিয়ে।’

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন ‘জুলাইয়ের প্রোক্লেমেশন’ নিয়ে রাজপথে জমায়েত করার ঘোষণা দিয়েছে, তখন সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে, সব রাজনৈতিক পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে সরকার ঘোষণাপত্র পাঠ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

স্লোগানে উত্তাল শহীদ মিনারে শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি

 

সরকারের এ সিদ্ধান্তকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক অন্যতম বিজয় হিসেবে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই, অবিলম্বে জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে এই জুলাইয়ের প্রোক্লেমেশন ঘোষণা করতে হবে।’

১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রোক্লেমেশন ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনও। তিনি বলেন, জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে জুলাই প্রোক্লেমেশন ঘোষণা না করলে ছাত্র–জনতা আবারও রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।

সামান্তা শারমিন বলেন, ছাত্র-জনতার প্রতি অনুরোধ, আপনারা বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত না করে রাজপথ ছাড়বেন না।

নিরাপত্তায় ২৭০০ পুলিশ: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘিরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকার নিরাপত্তায় ২ হাজার ৭০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুলিশ সদস্যরা শহীদ মিনারসহ আশপাশের এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম। তিনি বলেন, “এমন ধরনের প্রোগ্রাম হলে সার্বিক দিক বিবেচনায় যেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, আজও তেমনটি রয়েছে। শহীদ মিনারের তিন দিকের পয়েন্টসহ দোয়েল চত্বর, টিএসসির মত আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। আমাদের আশপাশের সড়কগুলোতে চেকপোস্ট রয়েছে। এছাড়া মোবাইল টিমগুলো মোটরসাইকেলে ও গাড়িতে পেট্রোল করছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকল ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের।
‘মার্চ ফর ইউনিটি’র মূল কর্মসূচি বিকাল ৪টায় শুরু হলেও সারা দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসতে শুরু করেন। এ কর্মসূচি থেকেই মঙ্গলবার ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের কথা ছিল। তবে আগের রাতে জরুরি বৈঠক শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষণা দেয়, অন্তর্বর্তী সরকারই ওই ঘোষণাপত্র দেবে, তাতে তাদের সমর্থন থাকবে।

ঘোষণাপত্র দেওয়া পেছালেও শহীদ মিনারে সমবেত হওয়ার কর্মসূচি বহাল রাখা হয়। জানানো হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রটি কেমন হবে তা শহীদ মিনারের কর্মসূচিতে তুলে ধরা হয়।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শহীদ মিনারে সমাবেশ

১৫ জানুয়ারির মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ দাবি

আপডেট সময় : ০৭:২৯:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে এ দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

এ সমাবেশ থেকেই ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপের মধ্যে গত সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সরকারের পক্ষ থেকে শিগগিরই ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজকের এ কর্মসূচির নাম দেয় ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা)। এ কর্মসূচি উপলক্ষে সারা দেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা–কর্মীরা আজ শহীদ মিনারে সমবেত হন।

সন্ধ্যায় সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এত দিন পর্যন্ত আমাদের এই জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের কোনো ঘোষণাপত্র ছিল না। আমরা বলতে চাই, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে আমাদের এই জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।’

উপস্থিত নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আপনারা জেলায় জেলায়, পাড়া–মহল্লায় এই ঘোষণাপত্রের পক্ষে মানুষের কাছে যাবেন, মানুষের কথা শুনবেন। তারা কী বলতে চায়, সেই কথাগুলো উঠিয়ে নিয়ে আসবেন।’

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিপক্ষে, মুজিববাদীদের বিপক্ষে, যারা এমন ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েম করেছে, তাদের বিপক্ষে আমাদের এই লড়াই জারি থাকবে।’ বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে আবার দেখা হবে ১৫ জানুয়ারিতে আমাদের ঘোষণাপত্র নিয়ে।’

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন ‘জুলাইয়ের প্রোক্লেমেশন’ নিয়ে রাজপথে জমায়েত করার ঘোষণা দিয়েছে, তখন সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে, সব রাজনৈতিক পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে সরকার ঘোষণাপত্র পাঠ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

স্লোগানে উত্তাল শহীদ মিনারে শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি

 

সরকারের এ সিদ্ধান্তকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক অন্যতম বিজয় হিসেবে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই, অবিলম্বে জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে এই জুলাইয়ের প্রোক্লেমেশন ঘোষণা করতে হবে।’

১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রোক্লেমেশন ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনও। তিনি বলেন, জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে জুলাই প্রোক্লেমেশন ঘোষণা না করলে ছাত্র–জনতা আবারও রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।

সামান্তা শারমিন বলেন, ছাত্র-জনতার প্রতি অনুরোধ, আপনারা বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত না করে রাজপথ ছাড়বেন না।

নিরাপত্তায় ২৭০০ পুলিশ: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘিরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকার নিরাপত্তায় ২ হাজার ৭০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুলিশ সদস্যরা শহীদ মিনারসহ আশপাশের এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম। তিনি বলেন, “এমন ধরনের প্রোগ্রাম হলে সার্বিক দিক বিবেচনায় যেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, আজও তেমনটি রয়েছে। শহীদ মিনারের তিন দিকের পয়েন্টসহ দোয়েল চত্বর, টিএসসির মত আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। আমাদের আশপাশের সড়কগুলোতে চেকপোস্ট রয়েছে। এছাড়া মোবাইল টিমগুলো মোটরসাইকেলে ও গাড়িতে পেট্রোল করছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকল ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের।
‘মার্চ ফর ইউনিটি’র মূল কর্মসূচি বিকাল ৪টায় শুরু হলেও সারা দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসতে শুরু করেন। এ কর্মসূচি থেকেই মঙ্গলবার ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের কথা ছিল। তবে আগের রাতে জরুরি বৈঠক শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষণা দেয়, অন্তর্বর্তী সরকারই ওই ঘোষণাপত্র দেবে, তাতে তাদের সমর্থন থাকবে।

ঘোষণাপত্র দেওয়া পেছালেও শহীদ মিনারে সমবেত হওয়ার কর্মসূচি বহাল রাখা হয়। জানানো হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রটি কেমন হবে তা শহীদ মিনারের কর্মসূচিতে তুলে ধরা হয়।