নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় শোক দিবসে বিএনপি এবারও খালেদা জিয়ার ‘ভুয়া জন্মদিন’ পালন করবে কি না, সেই প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্যে এই প্রশ্ন রাখেন তিনি।।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দিনে বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্মদিন উদযাপন নিয়ে সমালোচনা দীর্ঘদিনের; যেখানে তার আরও জন্মদিনের খবর পাওয়া যায়। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বারবার আমাদের কষ্টের ক্ষতকে উস্কে দিতে ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন আপনারা পালন করেন। ১৯৯৫ সাল থেকে এই ভুয়া জন্মদিবসের সূচনা। কেক কেটে আমাদের বেদনার ক্ষতকে উস্কে দিতে উৎসব করে ১৫ আগস্ট আপনারা পালন করেছেন।
‘মির্জা ফখরুল সাহেব (বিএনপি মহাসচিব), আপনার কাছে জানতে চাই, এই সত্য কেন বারবার এড়িয়ে যাচ্ছেন? কীভাবে করবেন এবার ১৫ আগস্ট? কর্মসূচি পরিবর্তন করবেন? কেক কাটবেন, না মিলাদ মাহফিল করবেন?’
১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করে বিএনপি জাতির সঙ্গে ‘তামাশা’ করছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
‘ফখরুল সাহেবের কাছে আমি জানতে চাই, একজন মানুষের কয়টা জন্মদিন থাকতে পারে? মেট্রিকুলেশন-এসএসসি সনদ অনুযায়ী ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৬; ম্যারিড সার্টিফিকেট অনুযায়ী ৯ আগস্ট ১৯৪৪; প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকারি নথিপত্রে ১৯ আগস্ট, ১৯৪৫; পাসপোর্টে ৫ আগস্ট ১৯৪৬; ১৯৯৫ সালের পর থেকে ১৫ আগস্ট। সর্বশেষ বেগম জিয়ার করোনা পরীক্ষায় ৮ মে ১৯৪৬। একজন মানুষের, যাকে আপনারা দেশনেত্রী বলেন, জন্মদিন কয়টি?’
ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তব্যের শুরুতে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে নিহতদের স্মরণ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে এত মর্মান্তিক, এত নৃশংসতম হত্যাকা- আর একটিও সংগঠিত হয়নি। এই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় দেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছিল শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে।’
এদেশে ‘হত্যা রাজনীতির কুশীলব’রা এখনও সক্রিয় জানিয়ে বলে সবাইকে সতর্ক করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই কারণেই তারা উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে অপপ্রচার করছে। মিথ্যা রটনাকারীদের হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী বলেই এত রক্তপাতের পরও আপনারা এদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পাচ্ছেন। বড় বড় কথা বলার সাহস পাচ্ছেন। অশ্রাব্য ভাষায় প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেও আপনারা রেহাই পাচ্ছেন। তারপরও বলেন দেশে গণতন্ত্র নেই!’
সরকার নানা সীমাবদ্ধতা নিয়েও করোনাভাইরাস মহামারী সফলভাবে মোকাবেলা করছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সামনের সারি যোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসকদের ভূমিকার ভূয়সি প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘মানব সেবাকে ব্রত হিসেবে নিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করার এই জাতীয় বীরদের আমি আন্তারিক অভিনন্দন জানাই। জাতি চিরদিন আপনাদের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।’
কোভিড টিকারি সঙ্কট থাকছে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণটিকাদান কর্মসূচিতে মানুষের স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতি, মানুষের আগ্রহ এটা অনেকে মেনে নিতে পারছে না। তারা সবকিছুতে ইস্যু খুঁজে বেড়ায়। গণটিকায়ও তারা রাজনৈতিক ইস্যু খুঁজতে চায়।
‘পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, শেখ হাসিনার সরকার সবকিছুই সামাল দিয়ে যাচ্ছে। আগামী দিনের পরিস্থিতি খারাপও হতে পারে, ভয়াবহও হতে পারে। সবকিছু মাথায় রেখে টিকা কার্যক্রমের রোডম্যাপ তৈরি করা আছে, যাতে দেশের সকল মানুষকে টিকা দেওয়া যায়।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. শরফুদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে এই সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এছাড়াও বিএসএমএমইউতে বক্তব্য রাখেন স্বাচিপের সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সলান, সাধারণ সম্পাদক ডা. এম এ আজিজ, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা।
১৫ আগস্ট নিয়ে ফখরুলের কাছে ওবায়দুল কাদেরের জিজ্ঞাসা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ