ঢাকা ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

১৫৩ কিলোমিটারে বল করে তোলপাড় ফেলে দিলেন হায়দরাবাদের এই পেসার

  • আপডেট সময় : ১০:৫৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : তার বলে গতি আছে, এটা আগের ম্যাচগুলোতেও দেখিয়েছেন। তবে বুধবার রাতে গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ১৫৩ কিলোমিটার গতিতে বল করে রীতিমত তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের এই তরুণ পেসার।
১৫৩ কিলোমিটার গতিতে করা বলটি দিয়ে উমরান মালিক বোল্ড করে দেন গুজরাটের সর্বোচ্চ স্কোরার ঋদ্ধিমান সাহাকে। শুধু ঋদ্ধির উইকেট নেয়াই নয়, ম্যাচে গুজরাটের যে ৫টি উইকেটে পড়েছে, তার সবগুলোই দখল করেছেন উমরান মালিক। মূলতঃ তার গতির সামনেই উড়ে গেছে ওই ৫ ব্যাটারের উইকেট।
আইপিএলে এমন গতিময় দাপুটে বোলিং সচরাচর দেখা যায় না। এমনটা নয় যে, সেনা (ঝঊঘঅ- ঝড়ঁঃয অভৎরপধ, ঊহমষধহফ, ঘবি তবধষধহফ ধহফ অঁংঃৎধষরধ) দেশের গতিময় বাউন্সি উইকেটে বল করছেন কোনও প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পেসার।
বরং মুম্বাইয়ের বাইশগজে ভারতের এই উঠতি ঘরোয়া ক্রিকেট তারকা যেভাবে নিজের গতিতে বিধ্বস্ত করলেন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানদের, তাতে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা উচ্ছ্বসিত, দীর্ঘদিন পর একজন জেনুইন পেসারের দেখা পেয়েছে তারা!
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দর্শকরা চার-ছক্কা দেখতেই মাঠে আসেন। তবে উমরান পরিচিত সেই ছবিটা বদলে দিলেন মুহূর্তে। তার আগুনে বোলিং ওয়াংখেড়ের গ্যালারিকে সম্মোহিত করে রেখেছিল পুরোপুরি।
আক্ষরিক অর্থেই বাইশগজে আগুন ঝরালেন উমরান। গুজরাটের প্রতিষ্ঠিত পেসার লকি ফার্গুসনের মতো তারকাকে যেভাবে পরপর চার-ছক্কায় হেনস্থা হতে হয়, সেখানে উমরানের এমন আগুন ঝরানো বোলিংকে কুর্নিশ জানানো ছাড়া উপায় নেই।
১৯৫ রান করে বোলারদের হাতে পর্যাপ্ত রসদ তুলে দিতে পেরেছিলেন সানরাইজার্সের ব্যাটসম্যানরা। যদিও ঋদ্ধিমান সাহা এবং শুভমান গিল যেভাবে গুজরাট ইনিংসের শুরু করেন, তাতে বড় রান তাড়া করে ম্যাচ জেতা সহজই দেখাচ্ছিল। এমন ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে উমরান একাই ৫ উইকেট নিয়ে হায়দরাবাদকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বাকি বোলাররা তাকে সেভাবে সঙ্গ দিতে পারেননি।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবার বল করতে আসেন উমরান। সেই ওভারের চতুর্থ বলে (৭.৪ ওভার) তিনি বোল্ড করেন শুভমান গিলকে। ভাঙ্গেন উদ্বোধনী জুটি। এক্ষেত্রে অফ-স্ট্যাম্পের লাইনে ১৪৪ কিটোমিটার প্রতি ঘণ্টার ডেলিভারি অযথা লেগ সাইডে সরে গিয়ে খেলার চেষ্টা করেন গিল। ব্যাটসম্যানের ভুলের সুযোগ নিয়ে উমরান স্ট্যাম্প ছিটকে দিতে ভুল করেননি।
ইনিংসের দশম ওভারে উমরান দ্বিতীয়বার বল করতে আসেন। সেই ওভারের দ্বিতীয় বলে তিনি তুলে নেন হার্দিক পান্ডিয়ার উইকেট। ৯.২ ওভারে অধিনায়কের পরিকল্পনা মতোই শর্ট পিচড ডেলিভারিতে হার্দিককে পরাস্ত করেন উমরান।
তিন ওভার পর আবারও আক্রমণে আসেন উমরান এবং আবারও উইকেট এনে দেন দলকে। ১৩.২ ওভারে ঋদ্ধিমান সাহাকে ১৫৩ কিলোমিটার গতির ইয়র্কারে বোল্ড করেন তিনি।
নিজের শেষ ওভারে উমরান আর ২টি উইকেট তুলে নেন। ১৫.৫ ওভারে ১৪৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার বলে তিনি বোল্ড করেন ডেভিড মিলারকে।
১৫.৬ ওভারে ১৪৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার ডেলিভারিতে উমরান ছিটকে দেন অভিনব মনোহরের স্টাম্প। সব মিলিয়ে ৪ ওভার বল করে ২৫ রানের বিনিময়ে ৫টি উইকেট দখল করেন মালিক। চারজন ব্যাটসম্যানকে তিনি বোল্ড করেন, যার মধ্যে ঋদ্ধিমান সাহার উইকেটটি ছিল নিঃসন্দেহে সেরা।
যদিও উমরানের এমন দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সের পরেও সানরাইজার্স ম্যাচ হেরে বসে। ফলে ট্র্যাজিক হিরো হয়েই থেকে যেতে হয় তাকে।
জিততে না পারলেও গতি দিয়ে বাজিমাত করা উমরান জানান দিলেন, আগামীতে ১৫৫ কিলোমিটার গতিতেও বল করতে পারবেন তিনি। ম্যাচের পর উমরান বলেন, ‘টাইটানসকে আটকাতে যতটা সম্ভব দ্রুত গতির বল করতে চেয়েছিলাম। মাঠ কিছুটা ছোট। তাই স্ট্যাম্পে বল রাখতে চেয়েছিলাম। গতির সঙ্গে স্ট্যাম্প লক্ষ্য করে বল করার চেষ্টা করে গেছি (১৫৫ কিমি প্রতি ঘণ্টায় টার্গেট করে)। সৃষ্টিকর্তা চাইলে, একদিন আমি ১৫৫ কিলোমিটার গতিতেও বল করব। তবে এই মুহুর্তে আমি যা করতে চাই তা হল ভালো বোলিং।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউনূস-রুবিও ফোনালাপ, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা বাড়াতে জোর

১৫৩ কিলোমিটারে বল করে তোলপাড় ফেলে দিলেন হায়দরাবাদের এই পেসার

আপডেট সময় : ১০:৫৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২

ক্রীড়া ডেস্ক : তার বলে গতি আছে, এটা আগের ম্যাচগুলোতেও দেখিয়েছেন। তবে বুধবার রাতে গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ১৫৩ কিলোমিটার গতিতে বল করে রীতিমত তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের এই তরুণ পেসার।
১৫৩ কিলোমিটার গতিতে করা বলটি দিয়ে উমরান মালিক বোল্ড করে দেন গুজরাটের সর্বোচ্চ স্কোরার ঋদ্ধিমান সাহাকে। শুধু ঋদ্ধির উইকেট নেয়াই নয়, ম্যাচে গুজরাটের যে ৫টি উইকেটে পড়েছে, তার সবগুলোই দখল করেছেন উমরান মালিক। মূলতঃ তার গতির সামনেই উড়ে গেছে ওই ৫ ব্যাটারের উইকেট।
আইপিএলে এমন গতিময় দাপুটে বোলিং সচরাচর দেখা যায় না। এমনটা নয় যে, সেনা (ঝঊঘঅ- ঝড়ঁঃয অভৎরপধ, ঊহমষধহফ, ঘবি তবধষধহফ ধহফ অঁংঃৎধষরধ) দেশের গতিময় বাউন্সি উইকেটে বল করছেন কোনও প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পেসার।
বরং মুম্বাইয়ের বাইশগজে ভারতের এই উঠতি ঘরোয়া ক্রিকেট তারকা যেভাবে নিজের গতিতে বিধ্বস্ত করলেন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানদের, তাতে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা উচ্ছ্বসিত, দীর্ঘদিন পর একজন জেনুইন পেসারের দেখা পেয়েছে তারা!
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দর্শকরা চার-ছক্কা দেখতেই মাঠে আসেন। তবে উমরান পরিচিত সেই ছবিটা বদলে দিলেন মুহূর্তে। তার আগুনে বোলিং ওয়াংখেড়ের গ্যালারিকে সম্মোহিত করে রেখেছিল পুরোপুরি।
আক্ষরিক অর্থেই বাইশগজে আগুন ঝরালেন উমরান। গুজরাটের প্রতিষ্ঠিত পেসার লকি ফার্গুসনের মতো তারকাকে যেভাবে পরপর চার-ছক্কায় হেনস্থা হতে হয়, সেখানে উমরানের এমন আগুন ঝরানো বোলিংকে কুর্নিশ জানানো ছাড়া উপায় নেই।
১৯৫ রান করে বোলারদের হাতে পর্যাপ্ত রসদ তুলে দিতে পেরেছিলেন সানরাইজার্সের ব্যাটসম্যানরা। যদিও ঋদ্ধিমান সাহা এবং শুভমান গিল যেভাবে গুজরাট ইনিংসের শুরু করেন, তাতে বড় রান তাড়া করে ম্যাচ জেতা সহজই দেখাচ্ছিল। এমন ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে উমরান একাই ৫ উইকেট নিয়ে হায়দরাবাদকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বাকি বোলাররা তাকে সেভাবে সঙ্গ দিতে পারেননি।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবার বল করতে আসেন উমরান। সেই ওভারের চতুর্থ বলে (৭.৪ ওভার) তিনি বোল্ড করেন শুভমান গিলকে। ভাঙ্গেন উদ্বোধনী জুটি। এক্ষেত্রে অফ-স্ট্যাম্পের লাইনে ১৪৪ কিটোমিটার প্রতি ঘণ্টার ডেলিভারি অযথা লেগ সাইডে সরে গিয়ে খেলার চেষ্টা করেন গিল। ব্যাটসম্যানের ভুলের সুযোগ নিয়ে উমরান স্ট্যাম্প ছিটকে দিতে ভুল করেননি।
ইনিংসের দশম ওভারে উমরান দ্বিতীয়বার বল করতে আসেন। সেই ওভারের দ্বিতীয় বলে তিনি তুলে নেন হার্দিক পান্ডিয়ার উইকেট। ৯.২ ওভারে অধিনায়কের পরিকল্পনা মতোই শর্ট পিচড ডেলিভারিতে হার্দিককে পরাস্ত করেন উমরান।
তিন ওভার পর আবারও আক্রমণে আসেন উমরান এবং আবারও উইকেট এনে দেন দলকে। ১৩.২ ওভারে ঋদ্ধিমান সাহাকে ১৫৩ কিলোমিটার গতির ইয়র্কারে বোল্ড করেন তিনি।
নিজের শেষ ওভারে উমরান আর ২টি উইকেট তুলে নেন। ১৫.৫ ওভারে ১৪৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার বলে তিনি বোল্ড করেন ডেভিড মিলারকে।
১৫.৬ ওভারে ১৪৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার ডেলিভারিতে উমরান ছিটকে দেন অভিনব মনোহরের স্টাম্প। সব মিলিয়ে ৪ ওভার বল করে ২৫ রানের বিনিময়ে ৫টি উইকেট দখল করেন মালিক। চারজন ব্যাটসম্যানকে তিনি বোল্ড করেন, যার মধ্যে ঋদ্ধিমান সাহার উইকেটটি ছিল নিঃসন্দেহে সেরা।
যদিও উমরানের এমন দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সের পরেও সানরাইজার্স ম্যাচ হেরে বসে। ফলে ট্র্যাজিক হিরো হয়েই থেকে যেতে হয় তাকে।
জিততে না পারলেও গতি দিয়ে বাজিমাত করা উমরান জানান দিলেন, আগামীতে ১৫৫ কিলোমিটার গতিতেও বল করতে পারবেন তিনি। ম্যাচের পর উমরান বলেন, ‘টাইটানসকে আটকাতে যতটা সম্ভব দ্রুত গতির বল করতে চেয়েছিলাম। মাঠ কিছুটা ছোট। তাই স্ট্যাম্পে বল রাখতে চেয়েছিলাম। গতির সঙ্গে স্ট্যাম্প লক্ষ্য করে বল করার চেষ্টা করে গেছি (১৫৫ কিমি প্রতি ঘণ্টায় টার্গেট করে)। সৃষ্টিকর্তা চাইলে, একদিন আমি ১৫৫ কিলোমিটার গতিতেও বল করব। তবে এই মুহুর্তে আমি যা করতে চাই তা হল ভালো বোলিং।’