ঢাকা ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

১৫০ আসনে ইভিএমে ভোটের সিদ্ধান্তে প্রমাণ হয় ইসি সরকারের আজ্ঞাবহ: রিজভী

  • আপডেট সময় : ১২:২৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ অগাস্ট ২০২২
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল অনাস্থা জানালেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোটের সিদ্ধান্তের ঘোষণায় নির্বাচন কমিশনের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এই কমিশন যে শেখ হাসিনা সরকারের আজ্ঞাবহ এর মাধ্যমে তা আবারো প্রমাণ করল নির্বাচন কমিশন।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। চা শ্রমিকদের দাবিকৃত দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি, আবাসন, খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলন ও কর্মবিরতির প্রতি সংহতি জানিয়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। রিজভী বলেন, আমরা বলেছি এই নির্বাচন কমিশন শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহ। সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা এই নির্বাচন কমিশনের নেই। সেটা তিনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) নিজেই আবার প্রমাণ করলেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তিনি যে সংলাপ করেছিলেন সেখানে অধিকাংশ দল ইভিএমের বিপক্ষে কথা বলেছিল। কিন্তু গতকাল তিনি বললেন ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার হবে। তাহলে কিসের জন্য এই সংলাপ?
তিনি বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার কেন বিদেশিদের কাছে সহযোগিতা চাচ্ছেন। সেটা আবারও গতকাল প্রমাণ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথমেই আমরা বলেছি এই সরকার যেখানে যাকে নিয়োগ করবে তাদের পরিচয় যাহোক, তাদের অন্তর ছাত্রলীগ, যুবলীগ। যুবলীগ, ছাত্রলীগের অন্তর থাকার কারণে গণভবন থেকে যে নির্দেশনা আসবে তার বাইরে তারা যাবে না। চা শ্রমিকদের দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে দাবি বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ারও আহবান জানান রিজভী। তিনি বলেন, শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের গুরুদায়িত্ব আছে। কিন্তু সরকারের এখানে কোনো গুরুদায়িত্ব দেখতে পাচ্ছি না। এই মুহূর্তে ১২০ টাকা একজন শ্রমিক মজুরি পায়। অন্য সবকিছু বাদ দিলেও খাদ্যের যে দাম তাতে এই টাকা দিয়ে কি পেটভরে খাওয়ার সুযোগ আছে। আগে বলত গরিব মানুষ ভর্তা-ভাজি দিয়ে ভাত খায়। এখন ভর্তা- ভাজির দাম অনেক। ভর্তা করতে মরিচ লাগে, তার দাম আকাশ ছুঁইছুঁই করছে। এখন বলতে হবে কোনো রকম লবণ দিয়ে ভাত খাওয়া। কিন্তু সেই ভাত কেনারও সামর্থ্য নেই।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এই সরকার যে তাঁবেদার সরকার, নতজানু সরকার, অন্য দেশের মুখাপেক্ষী, এগুলো আমাদের নতুন করে আর বলতে হচ্ছে না। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা প্রমাণ করে দিচ্ছে তারা কাদের সরকার। কারণ ওরা তো জনগণের কাছে যেতে পারবে না। এত অবিচার, এত অন্যায়, এত গুম-খুন। জনগণের কাছে তারা যাবে কি করে? জনগণের মধ্যে ওনাদের কোনো ভিত্তি নাই। এজন্য ওরা বিদেশের ভিত্তি তৈরি করছে। দেশের স্বার্থ বিক্রি করে দিয়ে নিজেদের ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে বিদেশের কাছে ধরনা দিচ্ছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মাঝেমধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে। নিজেদের স্বার্থে দেশের নিরাপত্তা বিদেশের কাছে বিক্রি করে দেওয়াকে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে? ওরা আসলে মিথ্যার চেতনায় বিশ্বাস করে। মিথ্যার চেতনাকে ঢাকা দেওয়ার জন্যই তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে।
উপস্থিত সবার উদ্দেশে তিনি বলেন, আয়নাঘরের কথা শুনেছেন না? আয়নাঘর এখন ভূতের ঘর, আতঙ্কের ঘর হিসেবে সারা দেশের মানুষের মুখে মুখে। আমরা যারা বিরোধী দলের রাজনীতি করি, সরকারের অন্যায়, অবিচার, গুম, খুনের সমালোচনা করি তারা আতঙ্কে থাকি। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদেরকে ধরে নিয়েই অত্যাচার করা হয়। নির্যাতন করা হয়, নির্যাতনের মাত্রা বীভৎস। এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে আয়নাঘর হওয়ার কথা ছিল না। এই ঘরে তো বিরোধী দলীয় নেতাকে নিয়ে অত্যাচার করার কথা ছিল না। শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম, শ্রমিকদলের প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু প্রমুখ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

১৫০ আসনে ইভিএমে ভোটের সিদ্ধান্তে প্রমাণ হয় ইসি সরকারের আজ্ঞাবহ: রিজভী

আপডেট সময় : ১২:২৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল অনাস্থা জানালেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোটের সিদ্ধান্তের ঘোষণায় নির্বাচন কমিশনের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এই কমিশন যে শেখ হাসিনা সরকারের আজ্ঞাবহ এর মাধ্যমে তা আবারো প্রমাণ করল নির্বাচন কমিশন।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। চা শ্রমিকদের দাবিকৃত দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি, আবাসন, খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলন ও কর্মবিরতির প্রতি সংহতি জানিয়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। রিজভী বলেন, আমরা বলেছি এই নির্বাচন কমিশন শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহ। সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা এই নির্বাচন কমিশনের নেই। সেটা তিনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) নিজেই আবার প্রমাণ করলেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তিনি যে সংলাপ করেছিলেন সেখানে অধিকাংশ দল ইভিএমের বিপক্ষে কথা বলেছিল। কিন্তু গতকাল তিনি বললেন ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার হবে। তাহলে কিসের জন্য এই সংলাপ?
তিনি বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার কেন বিদেশিদের কাছে সহযোগিতা চাচ্ছেন। সেটা আবারও গতকাল প্রমাণ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথমেই আমরা বলেছি এই সরকার যেখানে যাকে নিয়োগ করবে তাদের পরিচয় যাহোক, তাদের অন্তর ছাত্রলীগ, যুবলীগ। যুবলীগ, ছাত্রলীগের অন্তর থাকার কারণে গণভবন থেকে যে নির্দেশনা আসবে তার বাইরে তারা যাবে না। চা শ্রমিকদের দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে দাবি বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ারও আহবান জানান রিজভী। তিনি বলেন, শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের গুরুদায়িত্ব আছে। কিন্তু সরকারের এখানে কোনো গুরুদায়িত্ব দেখতে পাচ্ছি না। এই মুহূর্তে ১২০ টাকা একজন শ্রমিক মজুরি পায়। অন্য সবকিছু বাদ দিলেও খাদ্যের যে দাম তাতে এই টাকা দিয়ে কি পেটভরে খাওয়ার সুযোগ আছে। আগে বলত গরিব মানুষ ভর্তা-ভাজি দিয়ে ভাত খায়। এখন ভর্তা- ভাজির দাম অনেক। ভর্তা করতে মরিচ লাগে, তার দাম আকাশ ছুঁইছুঁই করছে। এখন বলতে হবে কোনো রকম লবণ দিয়ে ভাত খাওয়া। কিন্তু সেই ভাত কেনারও সামর্থ্য নেই।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এই সরকার যে তাঁবেদার সরকার, নতজানু সরকার, অন্য দেশের মুখাপেক্ষী, এগুলো আমাদের নতুন করে আর বলতে হচ্ছে না। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা প্রমাণ করে দিচ্ছে তারা কাদের সরকার। কারণ ওরা তো জনগণের কাছে যেতে পারবে না। এত অবিচার, এত অন্যায়, এত গুম-খুন। জনগণের কাছে তারা যাবে কি করে? জনগণের মধ্যে ওনাদের কোনো ভিত্তি নাই। এজন্য ওরা বিদেশের ভিত্তি তৈরি করছে। দেশের স্বার্থ বিক্রি করে দিয়ে নিজেদের ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে বিদেশের কাছে ধরনা দিচ্ছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মাঝেমধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে। নিজেদের স্বার্থে দেশের নিরাপত্তা বিদেশের কাছে বিক্রি করে দেওয়াকে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে? ওরা আসলে মিথ্যার চেতনায় বিশ্বাস করে। মিথ্যার চেতনাকে ঢাকা দেওয়ার জন্যই তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে।
উপস্থিত সবার উদ্দেশে তিনি বলেন, আয়নাঘরের কথা শুনেছেন না? আয়নাঘর এখন ভূতের ঘর, আতঙ্কের ঘর হিসেবে সারা দেশের মানুষের মুখে মুখে। আমরা যারা বিরোধী দলের রাজনীতি করি, সরকারের অন্যায়, অবিচার, গুম, খুনের সমালোচনা করি তারা আতঙ্কে থাকি। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদেরকে ধরে নিয়েই অত্যাচার করা হয়। নির্যাতন করা হয়, নির্যাতনের মাত্রা বীভৎস। এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে আয়নাঘর হওয়ার কথা ছিল না। এই ঘরে তো বিরোধী দলীয় নেতাকে নিয়ে অত্যাচার করার কথা ছিল না। শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম, শ্রমিকদলের প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু প্রমুখ।