ঢাকা ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

১২ দিনে হাসপাতালে ভর্তি ৪২৫ ডেঙ্গু রোগী

  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১২৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হন। আর চলতি মাসের ১২ দিনে মোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪২৫ জন।
এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাই ৭০ জন। এসব রোগীদের মধ্যে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে আটজন ও বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ৬২ জন ভর্তি হয়েছেন।
বর্তমানে রাজধানীসহ সারাদেশে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২০৯ জন। তাদের মধ্যে ২০৮ জনই রাজধানী ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য তথ্য ইউনিটের (এমআইএস) সহকারী পরিচালক ও হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. কামরুল কিবরিয়া স্বাক্ষরিত ডেঙ্গু-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বমোট ৭৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তার মধ্যে জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে তিনজন, মে’তে ৪৩ জন, জুনে ২৭১ জন এবং ১২ জুলাই পর্যন্ত ৪২৫ জন রোগী ভর্তি হন। এছাড়া ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ইতোমধ্যে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৮৭ জন বলেও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।
ডেঙ্গুবিরোধী অভিযানে ৩ লাখ টাকা জরিমানা : ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বিস্তার রোধে ১৪টি মামলায় ২ লাখ ৯১ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
গতকাল সোমবার ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা এই অভিযান পরিচালনা করেন। ডিএনসিসির ১ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ৪টি মামলায় ৩১ হাজার ৫০০ টাকা, ২ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম সফিউল আজম পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ৫টি মামলায় ২ লাখ ৫ হাজার টাকা, ৩ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ২টি মামলায় ৩০ হাজার টাকা এবং ৬ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিন পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ৩টি মামলায় ২৫ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। মোট চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১৪টি মামলায় ২ লাখ ৯১ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এসময় মাইকিং করে জনসচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করা হয় বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি।
মশার কোনো বর্ডার নেই, সবাইকে সচেতন থাকতে হবে: মন্ত্রী : মশার কোনো বর্ডার বা সীমানা নেই। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে আরো বেশি সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। দু’একজন মানুষের দায়িত্বহীনতার কারণে শহর বা গোটা দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না বলেও জানান তিনি।
গতকাল সোমবার স্থানীয় সরকার বিভাগের আয়োজনে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন ও অন্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার ১০ম আন্তঃমন্ত্রণালয় অনলাইন সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা জানান। মন্ত্রী বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনে মশা মারলে দক্ষিণ সিটি হবে না অথবা দক্ষিণে মারলে উত্তর হবে না এমনটি ভাবা উচিত নয়। প্রতিষ্ঠান বা বাড়ি-ঘর যারই হোক, আমি-আপনি যেই হই না কেন আমরা সবাই এই শহর ও দেশের মানুষ। মশা নিধনে সবাইকে অর্পিত নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। সমন্বিত উদ্যোগে কাজ না করলে সুফল আসবে না।
জেল-জরিমানা করার পরও ওইসব বাসা-বাড়ি অথবা ভবনে পুনরায় মশার লার্ভা পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে এমন তথ্য জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করা গুরুতর অপরাধ। আর এই অপরাধের সঙ্গে কেউ সম্পৃক্ত হলে তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে এডিস মশার প্রজননের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে দুই সিটি করপোরেশনে চিরুনি অভিযানের অংশ হিসেবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। নির্মাণাধীন ভবনগুলোর বেজমেন্ট ও ছাদে বিভিন্ন জায়গায় জমা পানি থাকে। আর এখানেই এডিস মশার প্রজনন বেশি হয়। যারা ভবন নির্মাণ করছেন অথবা নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছেন বা যাদের পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে তাদের জমানো পানিতে লার্ভিসাইড অথবা সামান্য পরিমাণ কেরোসিন ঢেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। ডেঙ্গু নিয়ে এখনও আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এডিস মশা বিস্তার বা প্রজননের সব ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এডিস, অ্যানোফিলিস বা কিউলেক্স যে মশাই হোক না কেন এগুলো নিধনের জন্য কী করতে হবে তা সবারই জানা। করোনার মধ্যে যেন ডেঙ্গু মাথাব্যথার কারণ না হয় সেটি লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রত্যেক ওয়ার্ডকে দশটি সাব জোন ভাগ করে কাউন্সিলরের নেতৃত্বে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে গঠিত কমিটিকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ত্রাণ বিতরণ, মশা নিধন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও দুর্যোগ-দুর্বিপাকসহ যেকোনো সমস্যা দ্রুত সমাধানে এই কমিটিকে কাজে লাগানো সম্ভব।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা বা ঘাস কাটা বছরভিত্তিক অথবা কোয়ার্টারলি না করে নিয়মিত করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনসহ অন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধিক্ষেত্রে মশকের বিস্তার রোধে নিজ নিজ উদ্যোগে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ও মিশন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। এখানে কে কোন মন্ত্রণালয়ের, কে কোন পদে আছে সেটা বড় বিষয় নয়, আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা। সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধি অংশ নেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

১২ দিনে হাসপাতালে ভর্তি ৪২৫ ডেঙ্গু রোগী

আপডেট সময় : ০১:৫৮:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১২৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হন। আর চলতি মাসের ১২ দিনে মোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪২৫ জন।
এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাই ৭০ জন। এসব রোগীদের মধ্যে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে আটজন ও বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ৬২ জন ভর্তি হয়েছেন।
বর্তমানে রাজধানীসহ সারাদেশে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২০৯ জন। তাদের মধ্যে ২০৮ জনই রাজধানী ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য তথ্য ইউনিটের (এমআইএস) সহকারী পরিচালক ও হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. কামরুল কিবরিয়া স্বাক্ষরিত ডেঙ্গু-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বমোট ৭৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তার মধ্যে জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে তিনজন, মে’তে ৪৩ জন, জুনে ২৭১ জন এবং ১২ জুলাই পর্যন্ত ৪২৫ জন রোগী ভর্তি হন। এছাড়া ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ইতোমধ্যে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৮৭ জন বলেও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।
ডেঙ্গুবিরোধী অভিযানে ৩ লাখ টাকা জরিমানা : ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বিস্তার রোধে ১৪টি মামলায় ২ লাখ ৯১ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
গতকাল সোমবার ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা এই অভিযান পরিচালনা করেন। ডিএনসিসির ১ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ৪টি মামলায় ৩১ হাজার ৫০০ টাকা, ২ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম সফিউল আজম পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ৫টি মামলায় ২ লাখ ৫ হাজার টাকা, ৩ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ২টি মামলায় ৩০ হাজার টাকা এবং ৬ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিন পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ৩টি মামলায় ২৫ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। মোট চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১৪টি মামলায় ২ লাখ ৯১ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এসময় মাইকিং করে জনসচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করা হয় বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি।
মশার কোনো বর্ডার নেই, সবাইকে সচেতন থাকতে হবে: মন্ত্রী : মশার কোনো বর্ডার বা সীমানা নেই। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে আরো বেশি সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। দু’একজন মানুষের দায়িত্বহীনতার কারণে শহর বা গোটা দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না বলেও জানান তিনি।
গতকাল সোমবার স্থানীয় সরকার বিভাগের আয়োজনে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন ও অন্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার ১০ম আন্তঃমন্ত্রণালয় অনলাইন সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা জানান। মন্ত্রী বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনে মশা মারলে দক্ষিণ সিটি হবে না অথবা দক্ষিণে মারলে উত্তর হবে না এমনটি ভাবা উচিত নয়। প্রতিষ্ঠান বা বাড়ি-ঘর যারই হোক, আমি-আপনি যেই হই না কেন আমরা সবাই এই শহর ও দেশের মানুষ। মশা নিধনে সবাইকে অর্পিত নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। সমন্বিত উদ্যোগে কাজ না করলে সুফল আসবে না।
জেল-জরিমানা করার পরও ওইসব বাসা-বাড়ি অথবা ভবনে পুনরায় মশার লার্ভা পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে এমন তথ্য জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করা গুরুতর অপরাধ। আর এই অপরাধের সঙ্গে কেউ সম্পৃক্ত হলে তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে এডিস মশার প্রজননের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে দুই সিটি করপোরেশনে চিরুনি অভিযানের অংশ হিসেবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। নির্মাণাধীন ভবনগুলোর বেজমেন্ট ও ছাদে বিভিন্ন জায়গায় জমা পানি থাকে। আর এখানেই এডিস মশার প্রজনন বেশি হয়। যারা ভবন নির্মাণ করছেন অথবা নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছেন বা যাদের পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে তাদের জমানো পানিতে লার্ভিসাইড অথবা সামান্য পরিমাণ কেরোসিন ঢেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। ডেঙ্গু নিয়ে এখনও আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এডিস মশা বিস্তার বা প্রজননের সব ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এডিস, অ্যানোফিলিস বা কিউলেক্স যে মশাই হোক না কেন এগুলো নিধনের জন্য কী করতে হবে তা সবারই জানা। করোনার মধ্যে যেন ডেঙ্গু মাথাব্যথার কারণ না হয় সেটি লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রত্যেক ওয়ার্ডকে দশটি সাব জোন ভাগ করে কাউন্সিলরের নেতৃত্বে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে গঠিত কমিটিকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ত্রাণ বিতরণ, মশা নিধন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও দুর্যোগ-দুর্বিপাকসহ যেকোনো সমস্যা দ্রুত সমাধানে এই কমিটিকে কাজে লাগানো সম্ভব।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা বা ঘাস কাটা বছরভিত্তিক অথবা কোয়ার্টারলি না করে নিয়মিত করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনসহ অন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধিক্ষেত্রে মশকের বিস্তার রোধে নিজ নিজ উদ্যোগে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ও মিশন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। এখানে কে কোন মন্ত্রণালয়ের, কে কোন পদে আছে সেটা বড় বিষয় নয়, আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা। সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধি অংশ নেন।