নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জয় পেলে একশত দিনে কী করবেন, সে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন ছাত্রদল মনোনীত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামীম।
নির্বাচনের চার দিন আগে গতকাল শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে জুমার পরে তিনি এ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। হামীমের একশত দিনের পরিকল্পনায় ১৭টি বিষয় রয়েছে, যেগুলো বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
তার প্রতিশ্রুতিগুলো হচ্ছে-
১। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ‘লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা LMS চালু করে সেটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ‘স্কিল ও সার্টিফিকেশন’ (IELTS, GRE, Graphic Design, Computer Literacy ইত্যাদি) এর ‘ফ্রি কোর্স’ করানোর ব্যবস্থা করা হবে।
২। শিক্ষকদের পড়ানোর মান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ‘শিক্ষক মূল্যায়ন’ পদ্ধতি চালু করার ব্যাপারে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
৩। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘ক্যারিয়ার গাইডেন্স সেন্টার’ তৈরি করা হবে যেন শিক্ষার্থীরা স্নাতক পরবর্তী ‘ক্যারিয়ার’ সংক্রান্ত সব ধরণের সহায়তা পেতে পারে।
৪। নারী শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের সময়সীমা রাত ১২টায় উন্নীত করা এবং প্রযোজনে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আরো পরে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হবে।
৫। বিভিন্ন কারণে যারা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান, তাদের জন্য ‘ক্রেডিট ট্রান্সফার’ এর ব্যবস্থা চালু করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে।
কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরার পর নির্বাচন কমিশন নিয়ে অভিযোগ করে হামীম বলেছেন, আপনারা দেখছেন যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বেফাঁস মন্তব্য করে শঙ্কা তৈরি করেছে। সেক্ষেত্রে আমরা যারা প্রার্থী আছি, আমরা কোনো শঙ্কা তৈরি করিনি। সেটা আমাদের প্যানেল হোক বা অন্য কোন প্যানেল হোক। কিন্তু আমরা দেখছি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে আমাদের নির্বাচন ব্যাহত হচ্ছে।
এবার ডাকসু নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কেমন হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি এদেশের মানুষ দীর্ঘ ১৭ বছর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আমি মনে করি, এবার ডাকসু নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীরা সেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে আসবে।
৯ সেপ্টেম্বর উৎসবমুখর পরিবেশে ডাকসু নির্বাচন হবে, এমন প্রত্যাশা জানিয়ে ছাত্রদলের জিএস পদপ্রার্থী হামীম বলেন, এরই হাত ধরে আগামী ফেব্রুয়ারি যে জাতীয় নির্বাচন সেটার দিকে অগ্রযাত্রা শুরু হবে। আমরা আশা করছি, ভোটার উপস্থিতি শতভাগই হবে। তবে আমরা লক্ষ্য করছি, নানা প্রতিবন্ধকতা আছে। আপনারা দেখেছেন যে জাতীয় নির্বাচনেও শতভাগ ভোটারের উপস্থিতি থাকে না। কিন্তু আমরা প্রত্যাশা করছি, দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীরা ভোট দেয় নাই, তাই সিংহভাগ শিক্ষার্থী এবার ভোটে অংশগ্রহণ করবেন।
ডাকসু নির্বাচনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) জিএস পদপ্রার্থী আবু বাকের মজুমদারকে সমর্থন জানিয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি থেকে বহিষ্কৃত মাহিন সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ নিয়ে শঙ্কার কথা বলেছেন ছাত্রদলের এই জিএস প্রার্থী। গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি করে না বলে যে দাবি করে তা ঠিক নয় দাবি করে হামীম বলেন, এনসিপি তাদের ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিয়ে তাদের (গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের প্রার্থী) সমর্থন দিয়েছে। তিনি বলেন, এই রাষ্ট্রের একজন উপদেষ্টা, তিনিও কিন্তু ভিপি প্রার্থীকে সমর্থন জানাচ্ছেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে থেকে কীভাবে এটি করেন, তা নিয়ে আমাদের শঙ্কা আছে। তাই, আমি মনে করি তারা শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করেছে। এ প্রতারণার জবাব শিক্ষার্থীরা ৯ সেপ্টেম্বর ভোটের মধ্য দিয়ে দেবেন।
সানা/আপ্র/০৫/০৯/২০২৫




















