ঢাকা ০১:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

হেলিকপ্টারে ছড়ানো হলো পাঁচ লাখ বীজ

  • আপডেট সময় : ১২:৫৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ৭৫ বার পড়া হয়েছে

বান্দরবান সংবাদদাতা : বান্দরবানের সংরক্ষিত দুইটি প্রাকৃতিক বনে হেলিকপ্টারে করে বিরল ও বিলুপ্ত প্রায় ৩০ প্রজাতির গাছের পাঁচ লাখ বীজ ছড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বান্দরবান বন বিভাগের আয়োজনে সেনা ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে আলীকদম উপজেলার মাতামুহুরী এবং থানচি উপজেলার সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনে এ বীজ ছিটানো হয়। বীজ ছড়ানোর এ কর্মসূচি উদ্বোধন করে বান্দরবান সেনা রিজিয়নে রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক বলেন, “এখানকার জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে এবং স্থানীয় মানুষ প্রকৃতির সাথে মিশে থাকতে পারার জন্য এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। “এখানে পানির কৃত্রিম সংকট হচ্ছে এবং গাছপালা আস্তে আস্তে বিলীন হচ্ছে। গাছপালা বাড়লে পানি এবং জীববৈচিত্র্য আবারও বাড়বে। তাহলে বনজঙ্গলে যে প্রাণিগুলো আছে সেগুলো জনসম্মুখে আসবে না। তাদের জন্যও একটা আশ্রয়স্থল হবে। তখন বন বিভাগের এমন মহতি উদ্যোগ সফল হবে।” সেনা রিজিয়নের উদ্যোগেও বিভিন্ন পর্যায়ে স্থানীয়দের মাঝে ফলজ, বনজ এবং ঔষধি চারা বিতরণ করা হচ্ছে জানিয়ে প্রাকৃতিক বনে ছিটানো বীজের গাছ ভবিষ্যতে যাতে নিধন করা না হয়, কাটা না হয় সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান তিনি। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক আব্দুল আউয়াল সরকার বলেন, মাতামুহুরী এবং সাঙ্গু সংরক্ষিত দুটি বন দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক বন। এগুলো খুবই দুর্গম এলাকায়। বনে গাছপালা কমে গেছে। বনায়ন করা এখন খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কারণে সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনে সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে মাধ্যমে বিশ্বের স্বীকৃত সিডবলের (বিভিন্ন বীজ নিয়ে মাটি দিয়ে তৈরি বলের মত) মাধ্যমে ৩০টি প্রজাতির বীজ মিলে পাঁচ লাখ বীজ ছিটানো হচ্ছে বলেন তিনি। এখানকার বনাঞ্চলে এক সময় ছিল এমন বিরল ও বিলুপ্ত প্রায় চম্পা, চাপালিশ, বর্তা, হারগজা, গর্জনসহ ত্রিশটি প্রজাতির গাছের সীডবলের মাধ্যমে বনে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ছিটানো এসব বীজ থেকে আশি ভাগ অংঙ্কুরিত হবে আশা করছেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে এ বন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে ষাট থেকে সত্তর ভাগ বনে গাছ আছে বলে ধারণা করছেন। ব্রিটিশ আমলে ১৮৮০ সালে এক লাখ দুই হাজার একর আয়তন নিয়ে আলীকদম মাতামুহুরী সংরক্ষিত বন এবং ১৮৮১ সালে ৮২ হাজার একর আয়তন নিয়ে থানচির সংরক্ষিত বন গড়ে তোলা হয়। এ দুটি সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনে এখন পুরনো অনেক গাছ মারা গেছে। বন ফাঁকা হয়ে পড়েছে। বনের নিবিড়তা বাড়াতে বন বিভাগের উদ্যোগ বীজ ছিটানোর এমন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বীজ ছিটানোর উদ্বোধন শেষে আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়ায় আলীকদম-পোয়ামুরী সড়কে শোভাবর্ধনকারী গাছের চারা রোপন প্রকল্পও উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে বান্দরবান বন বিভাগের বন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল মিঞা, লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম কায়ছার, সহকারী বিভাগীয় বন কর্মকতা খন্দকার গিয়াস উদ্দিন, আলীকদম জোনের সেনা কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হেলিকপ্টারে ছড়ানো হলো পাঁচ লাখ বীজ

আপডেট সময় : ১২:৫৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১

বান্দরবান সংবাদদাতা : বান্দরবানের সংরক্ষিত দুইটি প্রাকৃতিক বনে হেলিকপ্টারে করে বিরল ও বিলুপ্ত প্রায় ৩০ প্রজাতির গাছের পাঁচ লাখ বীজ ছড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বান্দরবান বন বিভাগের আয়োজনে সেনা ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে আলীকদম উপজেলার মাতামুহুরী এবং থানচি উপজেলার সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনে এ বীজ ছিটানো হয়। বীজ ছড়ানোর এ কর্মসূচি উদ্বোধন করে বান্দরবান সেনা রিজিয়নে রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক বলেন, “এখানকার জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে এবং স্থানীয় মানুষ প্রকৃতির সাথে মিশে থাকতে পারার জন্য এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। “এখানে পানির কৃত্রিম সংকট হচ্ছে এবং গাছপালা আস্তে আস্তে বিলীন হচ্ছে। গাছপালা বাড়লে পানি এবং জীববৈচিত্র্য আবারও বাড়বে। তাহলে বনজঙ্গলে যে প্রাণিগুলো আছে সেগুলো জনসম্মুখে আসবে না। তাদের জন্যও একটা আশ্রয়স্থল হবে। তখন বন বিভাগের এমন মহতি উদ্যোগ সফল হবে।” সেনা রিজিয়নের উদ্যোগেও বিভিন্ন পর্যায়ে স্থানীয়দের মাঝে ফলজ, বনজ এবং ঔষধি চারা বিতরণ করা হচ্ছে জানিয়ে প্রাকৃতিক বনে ছিটানো বীজের গাছ ভবিষ্যতে যাতে নিধন করা না হয়, কাটা না হয় সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান তিনি। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক আব্দুল আউয়াল সরকার বলেন, মাতামুহুরী এবং সাঙ্গু সংরক্ষিত দুটি বন দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক বন। এগুলো খুবই দুর্গম এলাকায়। বনে গাছপালা কমে গেছে। বনায়ন করা এখন খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কারণে সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনে সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে মাধ্যমে বিশ্বের স্বীকৃত সিডবলের (বিভিন্ন বীজ নিয়ে মাটি দিয়ে তৈরি বলের মত) মাধ্যমে ৩০টি প্রজাতির বীজ মিলে পাঁচ লাখ বীজ ছিটানো হচ্ছে বলেন তিনি। এখানকার বনাঞ্চলে এক সময় ছিল এমন বিরল ও বিলুপ্ত প্রায় চম্পা, চাপালিশ, বর্তা, হারগজা, গর্জনসহ ত্রিশটি প্রজাতির গাছের সীডবলের মাধ্যমে বনে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ছিটানো এসব বীজ থেকে আশি ভাগ অংঙ্কুরিত হবে আশা করছেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে এ বন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে ষাট থেকে সত্তর ভাগ বনে গাছ আছে বলে ধারণা করছেন। ব্রিটিশ আমলে ১৮৮০ সালে এক লাখ দুই হাজার একর আয়তন নিয়ে আলীকদম মাতামুহুরী সংরক্ষিত বন এবং ১৮৮১ সালে ৮২ হাজার একর আয়তন নিয়ে থানচির সংরক্ষিত বন গড়ে তোলা হয়। এ দুটি সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনে এখন পুরনো অনেক গাছ মারা গেছে। বন ফাঁকা হয়ে পড়েছে। বনের নিবিড়তা বাড়াতে বন বিভাগের উদ্যোগ বীজ ছিটানোর এমন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বীজ ছিটানোর উদ্বোধন শেষে আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়ায় আলীকদম-পোয়ামুরী সড়কে শোভাবর্ধনকারী গাছের চারা রোপন প্রকল্পও উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে বান্দরবান বন বিভাগের বন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল মিঞা, লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম কায়ছার, সহকারী বিভাগীয় বন কর্মকতা খন্দকার গিয়াস উদ্দিন, আলীকদম জোনের সেনা কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।