ঢাকা ১০:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫

হেফাজত নেতাদের ১৭ প্রতিষ্ঠানের তথ্য দুদকের হাতে

  • আপডেট সময় : ০২:২৯:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১০৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : হেফাজত নেতাদের পরিচালিত ১৯টি প্রতিষ্ঠানে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে ১৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে আয়-ব্যয়ের তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের বিদায়ী সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
গতকাল বুধবার সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় সহিংসতা চালায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা। পরে হেফাজতের ডাকা হরতালে চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় থানা, রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়। কয়েকদিনের সহিংসতায় ১৭ জন মারা যান, পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ আহত হন। এ ঘটনায় হেফাজতের একাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আন্দোলনে কোনো সন্ত্রাসী অর্থায়ন হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে গত ৫ এপ্রিল হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, সাবেক মহাসচিব প্রয়াত নূর হুসাইন কাসেমী এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজত নেতা মামুনুল হকসহ ২৪ নেতার ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদকের গোয়েন্দাদের যাচাই-বাছাইয়ে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ মে দুদক পরিচালক মো. আকতার হোসেন আজাদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি টিম গঠিত হয়। পরে গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে প্রাথমিকভাবে হেফাজতের অর্ধশতাধিক নেতার সম্পদের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠায় দুদক। বিদায়ী সচিব বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সম্পদের অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিভিন্ন দপ্তর ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য পাঠানোর জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এখনো উল্লেখযোগ্য তথ্য হাতে আসেনি।’
তিনি বলেন, বিএফআইইউ, বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা বরাবর অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সম্পদ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে সংশ্লিষ্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলা রেজিস্ট্রার, জীবন বীমা করপোরেশন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রাজউক, রিহ্যাব, সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ অফিস, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, ডাক বিভাগ এবং বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও পটিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে হেফাজত নেতাদের ১৯টি মাদরাসাসহ সেগুলোর নামে ক্রয়কৃত জমির তথ্যাদি সরবরাহের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। সচিব বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মাওলানা মামনুল হকসহ কয়েকজনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকেও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহম্মেদ এবং মোহাম্মদ মহসিন ভূইয়ার আয়কর নথি পর্যালোচনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। হেফাজত নেতাদের ১৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭টি প্রতিষ্ঠানের ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আয়, সরকারি অনুদান, ব্যক্তিগত ও অন্যান্য দান ইত্যাদির তথ্য সংগ্রহসহ প্রতিষ্ঠানের অডিট প্রতিবেদন ও ক্যাশ বই সংগ্রহ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই, পর্যালোচনা অব্যাহত আছে বলেও উল্লেখ করেন সচিব।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

হেফাজত নেতাদের ১৭ প্রতিষ্ঠানের তথ্য দুদকের হাতে

আপডেট সময় : ০২:২৯:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : হেফাজত নেতাদের পরিচালিত ১৯টি প্রতিষ্ঠানে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে ১৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে আয়-ব্যয়ের তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের বিদায়ী সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
গতকাল বুধবার সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় সহিংসতা চালায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা। পরে হেফাজতের ডাকা হরতালে চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় থানা, রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়। কয়েকদিনের সহিংসতায় ১৭ জন মারা যান, পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ আহত হন। এ ঘটনায় হেফাজতের একাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আন্দোলনে কোনো সন্ত্রাসী অর্থায়ন হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে গত ৫ এপ্রিল হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, সাবেক মহাসচিব প্রয়াত নূর হুসাইন কাসেমী এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজত নেতা মামুনুল হকসহ ২৪ নেতার ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদকের গোয়েন্দাদের যাচাই-বাছাইয়ে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ মে দুদক পরিচালক মো. আকতার হোসেন আজাদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি টিম গঠিত হয়। পরে গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে প্রাথমিকভাবে হেফাজতের অর্ধশতাধিক নেতার সম্পদের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠায় দুদক। বিদায়ী সচিব বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সম্পদের অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিভিন্ন দপ্তর ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য পাঠানোর জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এখনো উল্লেখযোগ্য তথ্য হাতে আসেনি।’
তিনি বলেন, বিএফআইইউ, বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা বরাবর অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সম্পদ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে সংশ্লিষ্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলা রেজিস্ট্রার, জীবন বীমা করপোরেশন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রাজউক, রিহ্যাব, সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ অফিস, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, ডাক বিভাগ এবং বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও পটিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে হেফাজত নেতাদের ১৯টি মাদরাসাসহ সেগুলোর নামে ক্রয়কৃত জমির তথ্যাদি সরবরাহের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। সচিব বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মাওলানা মামনুল হকসহ কয়েকজনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকেও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহম্মেদ এবং মোহাম্মদ মহসিন ভূইয়ার আয়কর নথি পর্যালোচনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। হেফাজত নেতাদের ১৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭টি প্রতিষ্ঠানের ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আয়, সরকারি অনুদান, ব্যক্তিগত ও অন্যান্য দান ইত্যাদির তথ্য সংগ্রহসহ প্রতিষ্ঠানের অডিট প্রতিবেদন ও ক্যাশ বই সংগ্রহ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই, পর্যালোচনা অব্যাহত আছে বলেও উল্লেখ করেন সচিব।