ঢাকা ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

‘হেফাজতে’ যুবদল নেতার মৃত্যু দ্রুত তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

  • আপডেট সময় : ০৪:৫১:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটকের পর এক যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনা দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

অভিযোগ উঠেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে তৌহিদুল ইসলাম নামের ওই যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে।

হেফাজতে যেকোনো ধরনের নির্যাতন ও হত্যার কঠোর নিন্দাও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক বিবৃতিতে এ নির্দেশনার কথা জানিয়ে বলা হয়, কুমিল্লায় পুলিশ গত রাতে এক যুবক, তৌহিদুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী শুক্রবার ভোরে তার বাড়ি থেকে আটক করার পর তাকে নির্যাতন করে।

জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এই সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে সরকারে দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন বলেও জানানো হয়।

ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সংস্কারে কয়েকটি কমিশন গঠন করার কথা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, কমিশনগুলোর বেশিরভাগই তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

পুলিশি জেরা, অপরাধ ব্যবস্থাপনা ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেকোনো সম্ভাবনা দূর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব প্রতিবেদনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই সংস্কার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

তৌহিদুল ইসলাম নামের কুমিল্লার ওই যুবদল নেতাকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা আটক করেছিল বলে পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মাহিনুল ইসলাম জানিয়েছিলেন।

তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি সদরের পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন।

তৌহিদুল ইসলামের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ টিপু বলেছিলেন, বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে তৌহিদুলকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে পুলিশ তাদের ফোন করে জানায়, তৌহিদুল আহত অবস্থায় গোমতী নদীর পাড়ে পড়ে আছে, আপনারা হসপিটালে আসেন আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। সেখান থেকে পুলিশ প্রথমে তাকে সদর হাসপাতালে এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তৌহিদুলকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতালে গিয়ে আমার ভাইয়ের লাশ দেখতে পাই।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার তানভির আহমেদের ভাষ্য, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তৌহিদুল ইসলামকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেখা যায়, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় এক সেনা কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর- আইএসপিআর।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘হেফাজতে’ যুবদল নেতার মৃত্যু দ্রুত তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

আপডেট সময় : ০৪:৫১:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটকের পর এক যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনা দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

অভিযোগ উঠেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে তৌহিদুল ইসলাম নামের ওই যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে।

হেফাজতে যেকোনো ধরনের নির্যাতন ও হত্যার কঠোর নিন্দাও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক বিবৃতিতে এ নির্দেশনার কথা জানিয়ে বলা হয়, কুমিল্লায় পুলিশ গত রাতে এক যুবক, তৌহিদুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী শুক্রবার ভোরে তার বাড়ি থেকে আটক করার পর তাকে নির্যাতন করে।

জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এই সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে সরকারে দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন বলেও জানানো হয়।

ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সংস্কারে কয়েকটি কমিশন গঠন করার কথা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, কমিশনগুলোর বেশিরভাগই তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

পুলিশি জেরা, অপরাধ ব্যবস্থাপনা ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেকোনো সম্ভাবনা দূর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব প্রতিবেদনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই সংস্কার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

তৌহিদুল ইসলাম নামের কুমিল্লার ওই যুবদল নেতাকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা আটক করেছিল বলে পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মাহিনুল ইসলাম জানিয়েছিলেন।

তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি সদরের পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন।

তৌহিদুল ইসলামের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ টিপু বলেছিলেন, বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে তৌহিদুলকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে পুলিশ তাদের ফোন করে জানায়, তৌহিদুল আহত অবস্থায় গোমতী নদীর পাড়ে পড়ে আছে, আপনারা হসপিটালে আসেন আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। সেখান থেকে পুলিশ প্রথমে তাকে সদর হাসপাতালে এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তৌহিদুলকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতালে গিয়ে আমার ভাইয়ের লাশ দেখতে পাই।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার তানভির আহমেদের ভাষ্য, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তৌহিদুল ইসলামকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেখা যায়, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় এক সেনা কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর- আইএসপিআর।