নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেট ও মৌলভীবাজারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে দুই নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটি বলছে, এ ধরনের ঘটনা হেফাজতে থাকা নাগরিকের নিরাপত্তা ও অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিবৃতিতে আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে র্যাব-৯ এর হেফাজতে থাকা তানভীর চৌধুরীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৯ অফিসে নেওয়া হয়। সেখানে ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি গলায় কম্বল পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে র্যাবের দাবি। অপরদিকে, ১৫ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) হাজতখানায় মো. মকদ্দুছ মিয়া নামে এক আসামির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আসক জানায়, চলতি বছরের শুরু থেকে অন্তত সাতজন নাগরিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন— আগস্টে কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় দুর্জয় চৌধুরী, জুলাই মাসে ঢাকার ভাটারা থানায় ফিরোজা আশরাভী এবং জুনে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থানায় ফিরোজা বেগমের মৃত্যু।
বিবৃতিতে আসক বলেছে, হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনা সরাসরি মানবাধিকারের লঙ্ঘন ও রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জবাবদিহির ঘাটতির প্রতিফলন। এটি জনগণের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর আস্থা কমিয়ে দেয় এবং সংবিধান প্রদত্ত জীবন ও মানবিক মর্যাদার মৌলিক অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করে।
সংস্থাটি আরো বলেছে, হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় প্রমাণ সংগ্রহের যথাযথ প্রক্রিয়া নিশ্চিত হয় না। অনেক ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের দাবি, হাজতে সিসিটিভি নেই। এমন সংবেদনশীল স্থানে পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকা উদ্বেগজনক এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
আসক হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত, সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় এনে শাস্তি প্রদান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। সংস্থাটি পুনর্ব্যক্ত করেছে— কোনও অবস্থাতেই হেফাজতে মৃত্যু গ্রহণযোগ্য নয় এবং নাগরিকের জীবন ও মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ও মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা।
সানা/আপ্র/১৬/০৯/২০২৫