ঢাকা ০৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হেপাটাইটিস সি রোগীর সংখ্যায় শীর্ষস্থানে পাকিস্তান

  • আপডেট সময় : ০২:২২:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বর্তমানে পৃথিবীতে হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬ কোটির কিছু বেশি, এই রোগীদের মধ্যে ১ কোটি রোগীই পাকিস্তানের। হিসাব অনুযায়ী বর্তমান বিশ্বে একক দেশ হিসেবে হেপাটাইটিস সি রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানেই।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মালিক মুখতার আহমেদ ভারাথ রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজধানী ইসলামাবাদে আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য জানিয়েছেন। সেমিনারটি আয়োজন করেছিল হেপাটাইটিস নির্মূল বিষয়ক পাকিস্তানি সংস্থা হেলথ ফাউন্ডেশন অন হেপাটাইটিস এলিমিনেশন।

সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বে বর্তমানে হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে। তাই এ মুহূর্তে পৃথিবী থেকে রোগটি নির্মূলের ক্ষেত্রে নেতৃত্বও দিতে হবে পাকিস্তানকে।

এবং এ কাজটি আমাদের শুরু করতে হবে এখন থেকেই; কারণ যদি আমরা পদক্ষেপ না নিই, তাহলে আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে পাকিস্তানে হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে পৌঁছাবে ১ কোটি ১০ লাখে।

আর এই ১ কোটি ১০ লাখ রোগীর মধ্যে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হবে ৫ লাখের বেশি, লিভার ক্যানসারের রোগী থাকবে ১ লাখেরও বেশি এবং লিভার সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগে মৃত্যু হবে অন্তত ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের। প্রতি বছর এই রোগের কারণে আমাদের ২৮ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ লোকসান হচ্ছে।

হেপাটাইটিস সি মূলত জন্ডিস ঘরানার ভাইরাস, তবে এই ভাইরাসটি মানবদেহকে আক্রান্ত করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। অল্প কয়েকজনের ক্ষেত্রে জ্বর, হলুদ প্রশ্রাব, পেটব্যাথা এবং ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়, তবে এসব উপসর্গ এত মৃদু মাত্রায় থাকে যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি এগুলোকে ধর্তব্যে আনেন না। ফলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে এটিকে শনাক্ত করা খুবই কঠিন।

হেপাটাইটিস সি মূলত ঘাঁটি গাড়ে মানুষের যকৃৎ বা লিভারে এবং প্রায় কোনো প্রকার উপসর্গ প্রকাশ না করে নীরবে বংশবিস্তার করতে থাকে। এই বিস্তারের ফলাফল হলো লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যানসার কিংবা লিভার অকার্যকর হয়ে যাওয়া।

পাকিস্তানের ক্ষেত্রে আরও একটি বড় দুর্বলতা হলো দেশটির ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো। ডা. ভারাথ জানান, ২০২১ সালে পাকিস্তানের হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত রোগীদের মাত্র ১৬ শতাংশ চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পেরেছেন। তবে তিনি এ ও জানিয়েছেন যে আগামী ৩ বছরের মধ্যে পাকিস্তান থেকে হেপাটাইটিস সি নির্মূলের লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য মোট ৬ হাজার ৭৭৭ কোটি রুপি বরাদ্দও করা হয়েছে। বরাদ্দের এই অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ৪১৫ কোটি রুপি দেবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বাকি ৩ হাজার ৩৬১ কোটি রুপি দেবে দেশটির চার প্রদেশের প্রাদেশিক সরকার।

প্রকল্পের অর্থব্যয় দেখভাল করার জন্য ইতোমধ্যে ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি গ্রুপ নামের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন ডা. ভারাথ। সূত্র: ডন

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হেপাটাইটিস সি রোগীর সংখ্যায় শীর্ষস্থানে পাকিস্তান

আপডেট সময় : ০২:২২:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বর্তমানে পৃথিবীতে হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬ কোটির কিছু বেশি, এই রোগীদের মধ্যে ১ কোটি রোগীই পাকিস্তানের। হিসাব অনুযায়ী বর্তমান বিশ্বে একক দেশ হিসেবে হেপাটাইটিস সি রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানেই।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মালিক মুখতার আহমেদ ভারাথ রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজধানী ইসলামাবাদে আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য জানিয়েছেন। সেমিনারটি আয়োজন করেছিল হেপাটাইটিস নির্মূল বিষয়ক পাকিস্তানি সংস্থা হেলথ ফাউন্ডেশন অন হেপাটাইটিস এলিমিনেশন।

সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বে বর্তমানে হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে। তাই এ মুহূর্তে পৃথিবী থেকে রোগটি নির্মূলের ক্ষেত্রে নেতৃত্বও দিতে হবে পাকিস্তানকে।

এবং এ কাজটি আমাদের শুরু করতে হবে এখন থেকেই; কারণ যদি আমরা পদক্ষেপ না নিই, তাহলে আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে পাকিস্তানে হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে পৌঁছাবে ১ কোটি ১০ লাখে।

আর এই ১ কোটি ১০ লাখ রোগীর মধ্যে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হবে ৫ লাখের বেশি, লিভার ক্যানসারের রোগী থাকবে ১ লাখেরও বেশি এবং লিভার সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগে মৃত্যু হবে অন্তত ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের। প্রতি বছর এই রোগের কারণে আমাদের ২৮ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ লোকসান হচ্ছে।

হেপাটাইটিস সি মূলত জন্ডিস ঘরানার ভাইরাস, তবে এই ভাইরাসটি মানবদেহকে আক্রান্ত করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। অল্প কয়েকজনের ক্ষেত্রে জ্বর, হলুদ প্রশ্রাব, পেটব্যাথা এবং ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়, তবে এসব উপসর্গ এত মৃদু মাত্রায় থাকে যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি এগুলোকে ধর্তব্যে আনেন না। ফলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে এটিকে শনাক্ত করা খুবই কঠিন।

হেপাটাইটিস সি মূলত ঘাঁটি গাড়ে মানুষের যকৃৎ বা লিভারে এবং প্রায় কোনো প্রকার উপসর্গ প্রকাশ না করে নীরবে বংশবিস্তার করতে থাকে। এই বিস্তারের ফলাফল হলো লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যানসার কিংবা লিভার অকার্যকর হয়ে যাওয়া।

পাকিস্তানের ক্ষেত্রে আরও একটি বড় দুর্বলতা হলো দেশটির ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো। ডা. ভারাথ জানান, ২০২১ সালে পাকিস্তানের হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত রোগীদের মাত্র ১৬ শতাংশ চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পেরেছেন। তবে তিনি এ ও জানিয়েছেন যে আগামী ৩ বছরের মধ্যে পাকিস্তান থেকে হেপাটাইটিস সি নির্মূলের লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য মোট ৬ হাজার ৭৭৭ কোটি রুপি বরাদ্দও করা হয়েছে। বরাদ্দের এই অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ৪১৫ কোটি রুপি দেবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বাকি ৩ হাজার ৩৬১ কোটি রুপি দেবে দেশটির চার প্রদেশের প্রাদেশিক সরকার।

প্রকল্পের অর্থব্যয় দেখভাল করার জন্য ইতোমধ্যে ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি গ্রুপ নামের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন ডা. ভারাথ। সূত্র: ডন