ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হৃদরোগে নারীরা মরছেন অবহেলায়, দাবি বিশেষজ্ঞদের

  • আপডেট সময় : ০৭:২২:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৫৫ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : হৃদরোগে ‘অপ্রয়োজনে বা অবহেলায়’ মারা যাচ্ছেন নারীরা। কারণ নারীদের ক্ষেত্রে কার্ডিওভাসকুলার রোগ এখনও ‘আন্ডার ট্রিটেড পর্যায়ে আছে — সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনই দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্টের অবস্থা নারীদের মৃত্যুর জন্য ‘এক নম্বর কারণ’। তবে নারীদের ক্ষেত্রে হার্টের বিভিন্ন রোগকে ‘উপেক্ষিত’ হচ্ছে ও তাদের প্রতি এই ‘প্রতিরোধযোগ্য’ মৃত্যু বন্ধের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়।। একদল শীর্ষ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেছেন, কার্ডিওভাসকিউলার ডিজিজ (সিভিডি) ‘পুরুষের একটি রোগ’ এমন ধারণা ভুল। এই ‘ভুল ধারণা’টিই নারীদের প্রতি ‘হার্টের বিভিন্ন রোগকে গুরুত্ব দিতে ও চিকিৎসাহীন রয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে। এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘হার্ট’-এ, যেখানে শিক্ষাবিদরা বলেন, বেশিরভাগ হৃদরোগ ‘প্রতিরোধযোগ্য’ হওয়ায় ‘সিভিডিতে আক্রান্ত নারীদের ক্ষেত্রে পুরুষদের মতো যত্নের সমতা নিশ্চিত করতে’ আরও কিছু করা দরকার। এ গবেষণার প্রধান লেখক ও অধ্যাপক বিজয় কুনাডিয়ান বলেন, “হৃদরোগ এক ধরনের করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা ধমনীর রোগ, যা যুক্তরাজ্য ও গোটা বিশ্বের নারীদের জন্য এক নম্বর প্রাণঘাতি রোগ।”
“আমরা দেখতে পাচ্ছি, নারীদের বেলায় এ ধরনের লক্ষণ উপেক্ষা করার রেওয়াজ রয়েছে বা নারীদের বলা হচ্ছে, তাদের দেহে এ ধরনের কোনও সমস্যা নেই বা তাদেরকে অন্য কোনো রোগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে নারীরা হার্টের সমস্যায় ভোগেন। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, হার্টের রোগের ক্ষেত্রে নারীরা কম চিকিৎসা পান, যার ফলে তাদের হার্ট অ্যাটাকের পর মৃত্যুর হারও বেড়ে যায়, বলেন অধ্যাপক কুনাডিয়ান।
“এ বিষয়টিকে আর অবহেলা করতে পারি না আমরা। এ নিয়ে আমাদের কিছু করার সময় এসেছে। নারীরা উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে তাদের জীবন বাঁচানো যাবে।” যুক্তরাজ্যজুড়ে ৩৩ জন বিশেষজ্ঞের একটি দল ‘হার্ট’ জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায় লিখেছেন, বর্তমানে দেশটির ৩৬ লাখেরও বেশি নারী ‘ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ বা করোনারি হার্ট ডিজিজ’-এ ভুগছেন, যা প্রতি ১৪ জন নারীর মধ্যে একজনের মৃত্যুর জন্য দায়ী। ‘ব্রিটিশ কার্ডিওভাসকিউলার সোসাইটি’র সঙ্গে যুক্ত এ গবেষণা দলটি বলেছে, “হৃদরোগ কেবল পুরুষের রোগ এই ভুল ধারণাটিই নারীদের মধ্যে সিভিডি রোগের কম স্বীকৃতি ও কম চিকিৎসার জন্য দায়ী। রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীদের মধ্যে একটি ‘বৈষম্য’ও নির্দেশ করেছেন গবেষকরা, যেখানে পুরুষদের তুলনায় নারীদের নির্দিষ্ট কোনো রোগে চিকিৎসা বা ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা পাওয়ার বেলাতেও সম্ভাবনা কম থাকে। নারীদের “প্রায়ই হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য কম রেফার করা হয়, যা তাদের শারীরিক অবস্থাকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যায়,” বলেছে গবেষণা দলটি। এ গবেষণায় দলটি আরও তুলে ধরেছে, কার্ডিওভাসকিউলার রোগ সম্পর্কে ক্লিনিকাল গবেষণায় নারীদের ‘প্রতিনিধিত্ব কম’। ‘যুক্তরাজ্য ও গোটা বিশ্বে প্রতিরোধযোগ্য পরিস্থিতি থেকে অনেক নারীকে অকারণে প্রাণ হারানোর হাত থেকে বাঁচানোর’ লক্ষ্যে সুপারিশ উঠে এসেছে এ গবেষণায়।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

হৃদরোগে নারীরা মরছেন অবহেলায়, দাবি বিশেষজ্ঞদের

আপডেট সময় : ০৭:২২:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক : হৃদরোগে ‘অপ্রয়োজনে বা অবহেলায়’ মারা যাচ্ছেন নারীরা। কারণ নারীদের ক্ষেত্রে কার্ডিওভাসকুলার রোগ এখনও ‘আন্ডার ট্রিটেড পর্যায়ে আছে — সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনই দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্টের অবস্থা নারীদের মৃত্যুর জন্য ‘এক নম্বর কারণ’। তবে নারীদের ক্ষেত্রে হার্টের বিভিন্ন রোগকে ‘উপেক্ষিত’ হচ্ছে ও তাদের প্রতি এই ‘প্রতিরোধযোগ্য’ মৃত্যু বন্ধের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়।। একদল শীর্ষ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেছেন, কার্ডিওভাসকিউলার ডিজিজ (সিভিডি) ‘পুরুষের একটি রোগ’ এমন ধারণা ভুল। এই ‘ভুল ধারণা’টিই নারীদের প্রতি ‘হার্টের বিভিন্ন রোগকে গুরুত্ব দিতে ও চিকিৎসাহীন রয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে। এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘হার্ট’-এ, যেখানে শিক্ষাবিদরা বলেন, বেশিরভাগ হৃদরোগ ‘প্রতিরোধযোগ্য’ হওয়ায় ‘সিভিডিতে আক্রান্ত নারীদের ক্ষেত্রে পুরুষদের মতো যত্নের সমতা নিশ্চিত করতে’ আরও কিছু করা দরকার। এ গবেষণার প্রধান লেখক ও অধ্যাপক বিজয় কুনাডিয়ান বলেন, “হৃদরোগ এক ধরনের করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা ধমনীর রোগ, যা যুক্তরাজ্য ও গোটা বিশ্বের নারীদের জন্য এক নম্বর প্রাণঘাতি রোগ।”
“আমরা দেখতে পাচ্ছি, নারীদের বেলায় এ ধরনের লক্ষণ উপেক্ষা করার রেওয়াজ রয়েছে বা নারীদের বলা হচ্ছে, তাদের দেহে এ ধরনের কোনও সমস্যা নেই বা তাদেরকে অন্য কোনো রোগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে নারীরা হার্টের সমস্যায় ভোগেন। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, হার্টের রোগের ক্ষেত্রে নারীরা কম চিকিৎসা পান, যার ফলে তাদের হার্ট অ্যাটাকের পর মৃত্যুর হারও বেড়ে যায়, বলেন অধ্যাপক কুনাডিয়ান।
“এ বিষয়টিকে আর অবহেলা করতে পারি না আমরা। এ নিয়ে আমাদের কিছু করার সময় এসেছে। নারীরা উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে তাদের জীবন বাঁচানো যাবে।” যুক্তরাজ্যজুড়ে ৩৩ জন বিশেষজ্ঞের একটি দল ‘হার্ট’ জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায় লিখেছেন, বর্তমানে দেশটির ৩৬ লাখেরও বেশি নারী ‘ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ বা করোনারি হার্ট ডিজিজ’-এ ভুগছেন, যা প্রতি ১৪ জন নারীর মধ্যে একজনের মৃত্যুর জন্য দায়ী। ‘ব্রিটিশ কার্ডিওভাসকিউলার সোসাইটি’র সঙ্গে যুক্ত এ গবেষণা দলটি বলেছে, “হৃদরোগ কেবল পুরুষের রোগ এই ভুল ধারণাটিই নারীদের মধ্যে সিভিডি রোগের কম স্বীকৃতি ও কম চিকিৎসার জন্য দায়ী। রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীদের মধ্যে একটি ‘বৈষম্য’ও নির্দেশ করেছেন গবেষকরা, যেখানে পুরুষদের তুলনায় নারীদের নির্দিষ্ট কোনো রোগে চিকিৎসা বা ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা পাওয়ার বেলাতেও সম্ভাবনা কম থাকে। নারীদের “প্রায়ই হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য কম রেফার করা হয়, যা তাদের শারীরিক অবস্থাকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যায়,” বলেছে গবেষণা দলটি। এ গবেষণায় দলটি আরও তুলে ধরেছে, কার্ডিওভাসকিউলার রোগ সম্পর্কে ক্লিনিকাল গবেষণায় নারীদের ‘প্রতিনিধিত্ব কম’। ‘যুক্তরাজ্য ও গোটা বিশ্বে প্রতিরোধযোগ্য পরিস্থিতি থেকে অনেক নারীকে অকারণে প্রাণ হারানোর হাত থেকে বাঁচানোর’ লক্ষ্যে সুপারিশ উঠে এসেছে এ গবেষণায়।