ঢাকা ০৪:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে ট্রান্স ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা বাস্তবায়নের সুপারিশ

  • আপডেট সময় : ০৬:৪০:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩
  • ১১১ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: বাংলাদেশে খাদ্যে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটের কারণে হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি এবং মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এক ওয়েবিনারে। নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে বুধবার গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় এই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয় বলে প্রজ্ঞা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়। বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ফুড স্ট্যান্ডার্ডস সেভ লাইভস’। আর ওয়েবিনারের আলোচনার শিরোনাম ছিল- ‘খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট ও হৃদরোগ ঝুঁকি: আমাদের করণীয়’।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, “যত প্রতিবন্ধকতাই আসুক দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১ বাস্তবায়ন করে মানুষকে ট্রান্সফ্যাটঘটিত রোগ থেকে মুক্তি দিতে হবে।” ট্রান্স ফ্যাট এক ধরনের অসম্পৃক্ত চর্বি বা আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত এলডিএল (লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন) কোলেস্টেরল বাড়ায়, অন্যদিকে এইচডিএল (হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন) কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। উচ্চ মাত্রায় ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণ হৃদরোগজনিত মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায় বলে জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের হিসাব, বিশ্বে প্রতি বছর ১ কোটি ৭৯ লাখ মানুষ হৃদরোগে মারা যায়, যার মধ্যে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষের শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণের কারণে মৃত্যু হয়ে থাকে। ওয়েবিনারে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশনের (বিএসটিআই) উপ-পরিচালক (কৃষি ও খাদ্য- মান উইং) এনামুল হক জানান, প্রবিধানমালা অনুসারে খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ নির্ধারিত মাত্রায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বিএসটিআই ইতোমধ্যে মান নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে। খাবার থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূল করতে পারলে মানুষকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার আওতায় আনা সম্ভব হবে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যাবে বলে মনে করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
তিনি বলেন, এজন্য প্রবিধানমালা বাস্তবায়নটা জরুরি। ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল (পিএইচও), যা ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে পরিচিত। সাধারণত বেকারি পণ্য, প্রক্রিয়াজাত ও ভাজা পোড়া স্ন্যাক্স এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সড়কসংলগ্ন দোকানে খাবার তৈরিতে পিএইচও বা ডালডা ব্যবহৃত হয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল ট্রান্সফ্যাট এলিমিনেশন প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতসহ বিশ্বের ৪৩টি দেশ ইতোমধ্যে খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ‘সর্বোত্তম নীতি’ বাস্তবায়ন করলেও বাংলাদেশ এখনেও পিছিয়ে রয়েছে। ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে ট্রান্স ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা বাস্তবায়নের সুপারিশ

আপডেট সময় : ০৬:৪০:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: বাংলাদেশে খাদ্যে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটের কারণে হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি এবং মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এক ওয়েবিনারে। নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে বুধবার গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় এই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয় বলে প্রজ্ঞা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়। বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ফুড স্ট্যান্ডার্ডস সেভ লাইভস’। আর ওয়েবিনারের আলোচনার শিরোনাম ছিল- ‘খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট ও হৃদরোগ ঝুঁকি: আমাদের করণীয়’।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, “যত প্রতিবন্ধকতাই আসুক দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১ বাস্তবায়ন করে মানুষকে ট্রান্সফ্যাটঘটিত রোগ থেকে মুক্তি দিতে হবে।” ট্রান্স ফ্যাট এক ধরনের অসম্পৃক্ত চর্বি বা আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত এলডিএল (লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন) কোলেস্টেরল বাড়ায়, অন্যদিকে এইচডিএল (হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন) কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। উচ্চ মাত্রায় ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণ হৃদরোগজনিত মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায় বলে জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের হিসাব, বিশ্বে প্রতি বছর ১ কোটি ৭৯ লাখ মানুষ হৃদরোগে মারা যায়, যার মধ্যে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষের শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণের কারণে মৃত্যু হয়ে থাকে। ওয়েবিনারে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশনের (বিএসটিআই) উপ-পরিচালক (কৃষি ও খাদ্য- মান উইং) এনামুল হক জানান, প্রবিধানমালা অনুসারে খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ নির্ধারিত মাত্রায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বিএসটিআই ইতোমধ্যে মান নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে। খাবার থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূল করতে পারলে মানুষকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার আওতায় আনা সম্ভব হবে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যাবে বলে মনে করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
তিনি বলেন, এজন্য প্রবিধানমালা বাস্তবায়নটা জরুরি। ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল (পিএইচও), যা ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে পরিচিত। সাধারণত বেকারি পণ্য, প্রক্রিয়াজাত ও ভাজা পোড়া স্ন্যাক্স এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সড়কসংলগ্ন দোকানে খাবার তৈরিতে পিএইচও বা ডালডা ব্যবহৃত হয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল ট্রান্সফ্যাট এলিমিনেশন প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতসহ বিশ্বের ৪৩টি দেশ ইতোমধ্যে খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ‘সর্বোত্তম নীতি’ বাস্তবায়ন করলেও বাংলাদেশ এখনেও পিছিয়ে রয়েছে। ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা।