আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে আঘাত হেনেছে ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এতে বিমানবন্দরের একটি গাড়ি ও সড়ক অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হামলার জেরে বিমান চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
রোববার (৪ মে) সকালে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একাধিকবার চেষ্টার পরও ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়। এ ঘটনায় অন্তত আটজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্যারামেডিক কর্মীরা।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে হামলা চালিয়ে আসা ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরকে ‘আর নিরাপদ নয়’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
হামলার পর বিমানবন্দরের সব প্রবেশপথ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং বিমানবন্দরগামী ট্রেন চলাচলও স্থগিত করা হয়। আরো হামলার আশঙ্কায় কিছু ফ্লাইটকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। মধ্য ইসরায়েলজুড়ে বেড়ে ওঠে সাইরেন, প্রাণভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয় অনেক ইসরায়েলি।
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষেপণাস্ত্রটি বিমানবন্দরের একটি সংযোগ সড়কে আঘাত হানে এবং তার ধ্বংসাবশেষ আশপাশের রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দিয়ে বলেছেন, যারা আমাদের আক্রমণ করবে, আমরা তাদের সাতগুণ জবাব দেবো। ইসরায়েল রেজিলিয়েন্স পার্টির নেতা ও সাবেক যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ বলেন, হামলার জন্য ইরানকেই দায়ী করা উচিত। তিনি বলেন, ইসরায়েল রাষ্ট্রের ওপর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে ইরান, এবং তাদের এর দায় নিতে হবে। তবে তিনি এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি।
ইসরায়েলের বিরোধী নেতা ইয়াইর গোলান বলেছেন, লাখ মানুষ আবার আশ্রয়কেন্দ্রে, গাজায় বন্দি ইসরায়েলিরা মরছে, জীবনযাত্রার ব্যয় সাধারণ পরিবারকে চূর্ণ করছে এবং রিজার্ভ বাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধের ভারে ভেঙে পড়ছে। এগুলো নেতানিয়াহুর জন্য ভালো, সরকারের জন্য ভালো। কিন্তু আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে হবে, যুদ্ধের ইতি টানতে হবে।
এদিকে, প্রতিদিন ইয়েমেনজুড়ে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। হুথি-নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম আল মাসিরাহ টিভি জানিয়েছে, রোববার ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান আল-জাওফ প্রদেশের আল-হাজম জেলায় ১০টি এবং মারিব জেলায় তিনটি হামলা চালিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এসব হামলায় হতাহতের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। এর আগে, একই সপ্তাহে একটি অভিবাসী আটক কেন্দ্রে মার্কিন হামলায় বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে।