ঢাকা ০১:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন ‘মোটিভেটেড’: প্রেস সচিব

  • আপডেট সময় : ০৮:৩১:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ব্রিফিংয়ে কথা বলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাগুলো নিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন তৈরির প্রক্রিয়ায় ‘স্বচ্ছতা’ নেই বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

সংগঠনটির প্রতিবেদনকে ‘মোটিভেটেড’ বর্ণনা করে তিনি বলেছেন, মোটিভেটেড রিপোর্টের ওপরে বাংলাদেশকে অনেকেই পোর্ট্রেট করতে চাচ্ছে। সেখানে দেখাতে চাচ্ছে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হচ্ছে। প্রতিবেদনে এই ধরনের প্রজেকশনটা করে।

এর আগে আরো দুটো প্রতিবেদন তারা দিয়েছিল। সেগুলো নিয়ে পুলিশ ‘কেস টু কেস’ তদন্ত করে দেখে দুয়েকটা বাদে বাকিগুলোর ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক কারণ ছিল না।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ব্রিফিংয়ে কথা বলছিলেন প্রেস সচিব। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নিয়মিত অপরাধের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে তুলে ধরছে বলে সেখানে মন্তব্য করেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের ১১টি ঘটনার তদন্ত করেছে পুলিশ। তবে একটির সঙ্গেও ‘সাম্প্রদায়িক সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি’। তাদের প্রত্যেকটা প্রতিবেদন স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত করা হয়েছে। আমরা দেখছি সংগঠনটির প্রতিবেদন তৈরিতে স্বচ্ছতা নেই। তাদের প্রতিবেদন ধরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা হচ্ছে। আশা করব বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে তারা গঠনমূলক হবে।

বারবার তাদেরকে বলেছি প্রতিবেদন সংশোধন করার জন্য, কিন্তু তারা সেটা করেন নাই। তারা যে প্রতিবেদন তৈরি করে সেটা বিশ্বের অনেকেই টুইট করে। দেখা যাচ্ছে ইউএসএ সিনেটে বা ইউকে কমনসে এই প্রতিবেদনগুলো উদ্ধৃতি (সাইটেশন) করেন।

দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বা সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে কাজ করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। সহিংসতার ঘটনাগুলো নিয়ে তারা প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছেন। তবে নিয়মিত অপরাধের ঘটনাগুলোও সংগঠনটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে দেখাচ্ছে বলে মনে করেন প্রেস সচিব। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলোকেও সংগঠনটির প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করার আহ্বান জানান তিনি।

ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে’ সংগঠনটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আপাতত আমরা চাচ্ছি তারা গঠনমূলক রোল পালন করবে। দেশের মানবাধিকার নিয়ে সবাই রিপোর্ট করুক, সত্যটা উঠে আসুক।

সরকার সংগঠনটির সঙ্গে কোনো বৈঠক করবে কিনা- এ প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, ’তাদের প্রতিবেদন নিয়ে আমরা আপত্তি জানানোর পরেও তারা সংশোধন করছে না। এটা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বারবার জানাচ্ছি।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে যা গুরুত্ব পাবে: চার দিনের সফর আগামী ২৬ মার্চ চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে তার। ওই সফরে কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে, ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে তা জানতে চান সাংবাদিকরা।

জবাবে প্রেস সচিব বলেন, সফরের মূল ফোকাস হচ্ছে আগামী ২৮ মার্চ সকালে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক। এ ছাড়া চীনা বিনিয়োগকারী, উৎপাদনকারী কোম্পানি, এনার্জি কোম্পানিসহ দেশটির বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার অর্থনৈতিক কূটনীতির মূল কাজ হচ্ছে বাংলাদেশকে পুরো বিশ্বের কাছে তুলে ধরছেন, যাতে বাংলাদেশ যেন এ অঞ্চলের একটি বড় ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হয়। সে জন্য যত ধরনের পলিসি, সংস্কার নেওয়া দরকার তা নেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সংস্কার সরকার করছে। একইসঙ্গে বেসরকারি খাতে যাতে বিদেশি বিনিয়োগে কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য ‘ওয়ান স্টপ সার্পোট’ ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর ও ভারতকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত ও চীন আমাদের বন্ধু। আমাদের সঙ্গে ভারতের খুবই সুসম্পর্ক আছে। তাদের বাণিজ্য বাড়ছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তাদের সঙ্গে আরো ভালো সম্পর্ক করতে চান।

গ্রামীণ টেলিকম ও স্টারলিংকের চুক্তি নিয়ে জল্পনার প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, এটা অনুমান নির্ভর। স্টারলিংক বাংলাদেশে অপারেশন শুরু করেনি। তারা কার কার সঙ্গে চুক্তি করছে সে বিষয়টাও জানি না। বেসরকারি কোন কোম্পানির সঙ্গে কথা বলছে, সেটা স্টারলিংকের বিষয়।

চীন সফরে তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, সফরটি খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে আয়োজন করা হয়েছে। তাই সেখানে কী কী বিষয়ে আলাপ হবে তা নিয়ে এখনও আলোচনা হচ্ছে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন ‘মোটিভেটেড’: প্রেস সচিব

আপডেট সময় : ০৮:৩১:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাগুলো নিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন তৈরির প্রক্রিয়ায় ‘স্বচ্ছতা’ নেই বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

সংগঠনটির প্রতিবেদনকে ‘মোটিভেটেড’ বর্ণনা করে তিনি বলেছেন, মোটিভেটেড রিপোর্টের ওপরে বাংলাদেশকে অনেকেই পোর্ট্রেট করতে চাচ্ছে। সেখানে দেখাতে চাচ্ছে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হচ্ছে। প্রতিবেদনে এই ধরনের প্রজেকশনটা করে।

এর আগে আরো দুটো প্রতিবেদন তারা দিয়েছিল। সেগুলো নিয়ে পুলিশ ‘কেস টু কেস’ তদন্ত করে দেখে দুয়েকটা বাদে বাকিগুলোর ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক কারণ ছিল না।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ব্রিফিংয়ে কথা বলছিলেন প্রেস সচিব। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নিয়মিত অপরাধের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে তুলে ধরছে বলে সেখানে মন্তব্য করেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের ১১টি ঘটনার তদন্ত করেছে পুলিশ। তবে একটির সঙ্গেও ‘সাম্প্রদায়িক সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি’। তাদের প্রত্যেকটা প্রতিবেদন স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত করা হয়েছে। আমরা দেখছি সংগঠনটির প্রতিবেদন তৈরিতে স্বচ্ছতা নেই। তাদের প্রতিবেদন ধরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা হচ্ছে। আশা করব বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে তারা গঠনমূলক হবে।

বারবার তাদেরকে বলেছি প্রতিবেদন সংশোধন করার জন্য, কিন্তু তারা সেটা করেন নাই। তারা যে প্রতিবেদন তৈরি করে সেটা বিশ্বের অনেকেই টুইট করে। দেখা যাচ্ছে ইউএসএ সিনেটে বা ইউকে কমনসে এই প্রতিবেদনগুলো উদ্ধৃতি (সাইটেশন) করেন।

দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বা সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে কাজ করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। সহিংসতার ঘটনাগুলো নিয়ে তারা প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছেন। তবে নিয়মিত অপরাধের ঘটনাগুলোও সংগঠনটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে দেখাচ্ছে বলে মনে করেন প্রেস সচিব। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলোকেও সংগঠনটির প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করার আহ্বান জানান তিনি।

ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে’ সংগঠনটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আপাতত আমরা চাচ্ছি তারা গঠনমূলক রোল পালন করবে। দেশের মানবাধিকার নিয়ে সবাই রিপোর্ট করুক, সত্যটা উঠে আসুক।

সরকার সংগঠনটির সঙ্গে কোনো বৈঠক করবে কিনা- এ প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, ’তাদের প্রতিবেদন নিয়ে আমরা আপত্তি জানানোর পরেও তারা সংশোধন করছে না। এটা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বারবার জানাচ্ছি।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে যা গুরুত্ব পাবে: চার দিনের সফর আগামী ২৬ মার্চ চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে তার। ওই সফরে কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে, ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে তা জানতে চান সাংবাদিকরা।

জবাবে প্রেস সচিব বলেন, সফরের মূল ফোকাস হচ্ছে আগামী ২৮ মার্চ সকালে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক। এ ছাড়া চীনা বিনিয়োগকারী, উৎপাদনকারী কোম্পানি, এনার্জি কোম্পানিসহ দেশটির বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার অর্থনৈতিক কূটনীতির মূল কাজ হচ্ছে বাংলাদেশকে পুরো বিশ্বের কাছে তুলে ধরছেন, যাতে বাংলাদেশ যেন এ অঞ্চলের একটি বড় ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হয়। সে জন্য যত ধরনের পলিসি, সংস্কার নেওয়া দরকার তা নেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সংস্কার সরকার করছে। একইসঙ্গে বেসরকারি খাতে যাতে বিদেশি বিনিয়োগে কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য ‘ওয়ান স্টপ সার্পোট’ ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর ও ভারতকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত ও চীন আমাদের বন্ধু। আমাদের সঙ্গে ভারতের খুবই সুসম্পর্ক আছে। তাদের বাণিজ্য বাড়ছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তাদের সঙ্গে আরো ভালো সম্পর্ক করতে চান।

গ্রামীণ টেলিকম ও স্টারলিংকের চুক্তি নিয়ে জল্পনার প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, এটা অনুমান নির্ভর। স্টারলিংক বাংলাদেশে অপারেশন শুরু করেনি। তারা কার কার সঙ্গে চুক্তি করছে সে বিষয়টাও জানি না। বেসরকারি কোন কোম্পানির সঙ্গে কথা বলছে, সেটা স্টারলিংকের বিষয়।

চীন সফরে তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, সফরটি খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে আয়োজন করা হয়েছে। তাই সেখানে কী কী বিষয়ে আলাপ হবে তা নিয়ে এখনও আলোচনা হচ্ছে।