ঢাকা ১০:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিজাব অমান্যকারী নারীদের ‘মানসিক রোগী’ ঘোষণা

  • আপডেট সময় : ০৫:০৭:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক: হিজাব আইন অমান্যকারীদের মানসিক রোগী হিসেবে বিবেচনার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। এমন নারীদের জন্য ‘মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্র’ চালুর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। ইরানের নারী ও পরিবার বিভাগের নীতি ও অনৈতিকতা প্রতিরোধ দপ্তরের প্রধান মেহরি তালেবি দারেস্তানি এ ঘোষণা দেন।
মেহরি তালেবিকে উদ্ধৃত করে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ক্লিনিকে ‘বৈজ্ঞানিক ও মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা’ প্রদান করা হবে। তবে এই ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইরানের নারী এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
এ উদ্যোগকে ‘লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মৃত্যুর হুমকির মুখে থাকা যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইরানি সাংবাদিক সিমা সাবেত। তিনি বলেন, চিকিৎসাকেন্দ্র চালু করে হিজাব আইন অমান্যকারী নারীদের ‘সুস্থ’ করার ধারণা ভয়ানক। যারা শাসকদের আইন মানবেন না, তারা সমাজ থেকে আলাদা হয়ে যাবেন।
ইরানের মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী হোসেইন রাইসি বলেছেন, ‘হিজাব আইন অমান্যকারী নারীদের জন্য চিকিৎসাকেন্দ্র চালুর চিন্তা ইসলামসম্মত নয় এবং ইরানি আইন অনুযায়ীও এটি সঠিক নয়। আর এই ভীতিকর উদ্যোগের ঘোষণা এসেছে তেহরান সদর দপ্তরের নারী ও পরিবার বিভাগ থেকে, যা সরাসরি সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনির অধীনে।’
এ সংবাদটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘নারী, নারীর জীবন ও স্বাধীনতা’ নিয়ে আন্দোলনকারী এবং মহিলা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমনই একজন ইরানি তরুণী বলেন, ‘এটি চিকিৎসা কেন্দ্র নয়, এটি হবে একটি কারাগার। আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য সংগ্রাম করছি, দেশে বিদ্যুৎ সংকট চলছে। অথচ এক টুকরো কাপড়ের জন্য এই রাষ্ট্রের কত উদ্বেগ! এখনই আমাদের রাস্তায় নামতে হবে, নইলে তারা আমাদের সবাইকে আবদ্ধ করে ফেলবে।’
সম্প্রতি ইরানের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে গ্রেপ্তার নিয়ে খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। তেহরানে হিজাব আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে নিরাপত্তা রক্ষীরা ওই ছাত্রীকে হেনস্তা করেন। এর প্রতিবাদস্বরূপ ওই ছাত্রী অন্তর্বাস পড়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। পরে তাকে একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনার পর হিজাব আইন অমান্যকারীদের জন্য ‘মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্র’ চালুর ঘোষণায় দেশটির নারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইরানে বাধ্যতামূলক পোশাকবিধি অমান্যকারী নারীদের ওপর ক্রমবর্ধমান দমনপীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, সম্প্রতি একাধিক গ্রেপ্তার, জোরপূর্বক গুম এমনকি নারীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করার ঘটনাও ঘটেছে।
গত সপ্তাহে ২৫ বছর বয়সী রোশনাক মোলাই আলিশাহ নামে এক নারীর ঘটনা প্রকাশ করে ইরানের একটি মানবাধিকার সংস্থা। হিজাব নিয়ে হয়রানি করা এক ব্যক্তির সঙ্গে তর্ক করায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, ওই নারীর বর্তমান অবস্থান তারা জানেন না।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হিজাব অমান্যকারী নারীদের ‘মানসিক রোগী’ ঘোষণা

আপডেট সময় : ০৫:০৭:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

নারী ও শিশু ডেস্ক: হিজাব আইন অমান্যকারীদের মানসিক রোগী হিসেবে বিবেচনার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। এমন নারীদের জন্য ‘মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্র’ চালুর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। ইরানের নারী ও পরিবার বিভাগের নীতি ও অনৈতিকতা প্রতিরোধ দপ্তরের প্রধান মেহরি তালেবি দারেস্তানি এ ঘোষণা দেন।
মেহরি তালেবিকে উদ্ধৃত করে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ক্লিনিকে ‘বৈজ্ঞানিক ও মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা’ প্রদান করা হবে। তবে এই ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইরানের নারী এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
এ উদ্যোগকে ‘লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মৃত্যুর হুমকির মুখে থাকা যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইরানি সাংবাদিক সিমা সাবেত। তিনি বলেন, চিকিৎসাকেন্দ্র চালু করে হিজাব আইন অমান্যকারী নারীদের ‘সুস্থ’ করার ধারণা ভয়ানক। যারা শাসকদের আইন মানবেন না, তারা সমাজ থেকে আলাদা হয়ে যাবেন।
ইরানের মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী হোসেইন রাইসি বলেছেন, ‘হিজাব আইন অমান্যকারী নারীদের জন্য চিকিৎসাকেন্দ্র চালুর চিন্তা ইসলামসম্মত নয় এবং ইরানি আইন অনুযায়ীও এটি সঠিক নয়। আর এই ভীতিকর উদ্যোগের ঘোষণা এসেছে তেহরান সদর দপ্তরের নারী ও পরিবার বিভাগ থেকে, যা সরাসরি সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনির অধীনে।’
এ সংবাদটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘নারী, নারীর জীবন ও স্বাধীনতা’ নিয়ে আন্দোলনকারী এবং মহিলা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমনই একজন ইরানি তরুণী বলেন, ‘এটি চিকিৎসা কেন্দ্র নয়, এটি হবে একটি কারাগার। আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য সংগ্রাম করছি, দেশে বিদ্যুৎ সংকট চলছে। অথচ এক টুকরো কাপড়ের জন্য এই রাষ্ট্রের কত উদ্বেগ! এখনই আমাদের রাস্তায় নামতে হবে, নইলে তারা আমাদের সবাইকে আবদ্ধ করে ফেলবে।’
সম্প্রতি ইরানের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে গ্রেপ্তার নিয়ে খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। তেহরানে হিজাব আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে নিরাপত্তা রক্ষীরা ওই ছাত্রীকে হেনস্তা করেন। এর প্রতিবাদস্বরূপ ওই ছাত্রী অন্তর্বাস পড়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। পরে তাকে একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনার পর হিজাব আইন অমান্যকারীদের জন্য ‘মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্র’ চালুর ঘোষণায় দেশটির নারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইরানে বাধ্যতামূলক পোশাকবিধি অমান্যকারী নারীদের ওপর ক্রমবর্ধমান দমনপীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, সম্প্রতি একাধিক গ্রেপ্তার, জোরপূর্বক গুম এমনকি নারীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করার ঘটনাও ঘটেছে।
গত সপ্তাহে ২৫ বছর বয়সী রোশনাক মোলাই আলিশাহ নামে এক নারীর ঘটনা প্রকাশ করে ইরানের একটি মানবাধিকার সংস্থা। হিজাব নিয়ে হয়রানি করা এক ব্যক্তির সঙ্গে তর্ক করায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, ওই নারীর বর্তমান অবস্থান তারা জানেন না।