ঢাকা ০২:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

বাসায় ফিরেছেন তামিম ইকবাল

  • আপডেট সময় : ০৯:০৫:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
  • ৪৯ বার পড়া হয়েছে

তামিম ইকবাল -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: তামিম ইকবালের শারীরিক অবস্থা কী, তিনি বাসায় ফিরবেন কখন- এসব নিয়ে ছিল নানার জল্পনা-কল্পনা। তবে সেসব অনিশ্চয়তা আর উৎকণ্ঠার অবসান হয়েছে। সবাইকে কিছুটা আশ্বস্থ করে বাসায় ফিরেছেন তামিম।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) পবিত্র জুমার নামাজের পরপরই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে রাজধানীর বনানীর ডিওএইচএসের বাসায় ফিরে গেছেন তামিম। সেখানেই পারিবারিকভাবে তার চিকিৎসা চলমান থাকবে।

তামিমের বাসায় ফেরার সংবাদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ভক্তদের কাছে? কারণটা জটিল নয়, প্রিয় তারকা বাসায় গেছেন মানেই হলো সংকট কেটে গেছে। এখন শুধু ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠার পালা।

এর আগে গত সোমবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে হার্ট অ্যাটাক হয় মোহামেহান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক তামিমের। পরিস্থিতি জটিল হলে দ্রুত তাকে স্থানীয় কেপিজে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ওই হাসপাতালেই তামিমের এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি এবং স্টেন্টিং করানো হয়। স্টেন্টিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত ব্লক পড়া ধমনীতে রিং পরানো হয়। এরপর আস্তে আস্তে শঙ্কা কাটতে শুরু করে। ওইদিন বিকালের দিকে হাসপাতালের ডাক্তাররা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, তামিম ইকবাল পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নন। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।

পরদিন মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) তামিমকে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনদিন সেখানে থাকার পর আজ বাসায় ফিরলেন দেশসেরা ওপেনার।

ধূমপানের কথা প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেন দুই চিকিৎসক: তামিম ইকবালের চিকিৎসা নিয়ে সবাই সন্তুষ্ট, হোক সেটি কেপিজে হাসপাতাল কিংবা এভারকেয়ার হাসপাতাল। দেশবরেণ্য ক্রিকেটার তামিমের চিকিৎসার কোনোই ত্রুটি হয়নি। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারকে সুস্থ করে তুলতে সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছেন। সৃষ্টিকর্তার দয়া ও চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তামিম এখন ভালোর দিকে।

এরই মধ্যে জানা হয়ে গেছে, তামিম এভারকেয়ার হাসপাতালে ৭২ ঘণ্টা থাকার পর আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বনানী ডিওএইচএসে নিজ বাসায় ফিরে গেছেন।

কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে এভারকেয়ার হাসাপাতালের দুই জন সিনিয়র ও নামী চিকিৎসকের অপেশাদার ও অদূরদর্শী আচরণ নিয়ে দেশব্যাপী একটা অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। তাদের আচরণ অনেকেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি।

কী করে নেবেন? এভারকেয়ার হাসপাতালের দুই জন সিনিয়র চিকিৎসক সাহাবউদ্দীন তালুকদার ও আরিফ রহমান যে সংবাদ সম্মেলনে এসে জানিয়ে দিয়েছেন, তামিম ধূমপান করেন এবং তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে এসেও ধূমপান করতে চেয়েছেন।

দুই জন নামী, দক্ষ, অভিজ্ঞ ও সিনিয়র চিকিৎসকের এমন অপেশদার আচরণকে অনেকেই ভালো চোখে দেখেননি।

অনেকের মত, দেশের অন্যতম হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর সাহাবউদ্দীন তালুকদার ও এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর আরিফ রহমানের মতো দায়িত্বশীল চিকিৎসকের মুখে ‘তামিম ধূমপান করেন, এভারকেয়ারে এসেও ধূমপান করতে চেয়েছেন, বলার পরও ধূমপান ছাড়তে অনীহা’- এমন কথা শুনে বিরাগভাজন হয়েছেন।

দেশের অগণিত তামিমভক্ত, ক্রিকেট ও ক্রীড়া অনুরাগীরা মনে করেন, চিকিৎসকরা অপেশাদার মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তামিমের মতো একজন ক্রিকেটারের পারিবারিক, সামাজিক ও পেশাগত জীবনের কথা চিন্তা করে ধূমপানের প্রসঙ্গ সরাসরি না বললেই ভালো হতো।

অবশেষে ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ওই দুই চিকিৎসক সংবাদ সম্মেলনে এসে তামিমের ধূমপানের বিষয়টি প্রকাশের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে এভারকেয়ার হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে প্রফেসর সাহাবউদ্দীন তালুকদার ও আরিফ রহমান দুঃখ প্রকাশ করেন।

প্রফেসর সাহাবউদ্দীন তালুকদার বলেন, ‘তামিমের শারিরীক অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে ধূমপানের প্রসঙ্গ চলে আসে। ধূমপান যে হৃদরোগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, তা জানাতে গিয়ে ভুলবশত তামিমকে সম্পৃক্ত করার জন্য দুঃখিত। আমি আসলে ধূমপানটা হৃদরোগীদের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ বলে বোঝাতে গিয়ে তামিমকে জড়িয়ে ফেলেছিলাম। সেজন্য দুঃখিত।

এভারকেয়ার মেডিকেল ডিরেক্টর আরিফ রহমান বলেন, ‘ধূমপানের বিষয়টি সামনে এনে আমরা বুঝতে পেরেছি, দেশবরেণ্য ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব তামিম ইকবাল ভাইয়ের ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক, সামাজিক জীবন ও গোটা ক্যারিয়ারের জন্য একটা নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে। বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলেছে। আমি ও স্যার সাহাবউদ্দীন তালুকদার আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমরা তামিম ভাই এবং তার পরিবারের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই তামিম ভাই যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে খেলায় ফিরে আসেন।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাসায় ফিরেছেন তামিম ইকবাল

আপডেট সময় : ০৯:০৫:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: তামিম ইকবালের শারীরিক অবস্থা কী, তিনি বাসায় ফিরবেন কখন- এসব নিয়ে ছিল নানার জল্পনা-কল্পনা। তবে সেসব অনিশ্চয়তা আর উৎকণ্ঠার অবসান হয়েছে। সবাইকে কিছুটা আশ্বস্থ করে বাসায় ফিরেছেন তামিম।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) পবিত্র জুমার নামাজের পরপরই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে রাজধানীর বনানীর ডিওএইচএসের বাসায় ফিরে গেছেন তামিম। সেখানেই পারিবারিকভাবে তার চিকিৎসা চলমান থাকবে।

তামিমের বাসায় ফেরার সংবাদ কেন গুরুত্বপূর্ণ ভক্তদের কাছে? কারণটা জটিল নয়, প্রিয় তারকা বাসায় গেছেন মানেই হলো সংকট কেটে গেছে। এখন শুধু ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠার পালা।

এর আগে গত সোমবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে হার্ট অ্যাটাক হয় মোহামেহান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক তামিমের। পরিস্থিতি জটিল হলে দ্রুত তাকে স্থানীয় কেপিজে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ওই হাসপাতালেই তামিমের এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি এবং স্টেন্টিং করানো হয়। স্টেন্টিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত ব্লক পড়া ধমনীতে রিং পরানো হয়। এরপর আস্তে আস্তে শঙ্কা কাটতে শুরু করে। ওইদিন বিকালের দিকে হাসপাতালের ডাক্তাররা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, তামিম ইকবাল পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নন। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।

পরদিন মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) তামিমকে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনদিন সেখানে থাকার পর আজ বাসায় ফিরলেন দেশসেরা ওপেনার।

ধূমপানের কথা প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেন দুই চিকিৎসক: তামিম ইকবালের চিকিৎসা নিয়ে সবাই সন্তুষ্ট, হোক সেটি কেপিজে হাসপাতাল কিংবা এভারকেয়ার হাসপাতাল। দেশবরেণ্য ক্রিকেটার তামিমের চিকিৎসার কোনোই ত্রুটি হয়নি। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারকে সুস্থ করে তুলতে সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছেন। সৃষ্টিকর্তার দয়া ও চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তামিম এখন ভালোর দিকে।

এরই মধ্যে জানা হয়ে গেছে, তামিম এভারকেয়ার হাসপাতালে ৭২ ঘণ্টা থাকার পর আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বনানী ডিওএইচএসে নিজ বাসায় ফিরে গেছেন।

কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে এভারকেয়ার হাসাপাতালের দুই জন সিনিয়র ও নামী চিকিৎসকের অপেশাদার ও অদূরদর্শী আচরণ নিয়ে দেশব্যাপী একটা অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। তাদের আচরণ অনেকেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি।

কী করে নেবেন? এভারকেয়ার হাসপাতালের দুই জন সিনিয়র চিকিৎসক সাহাবউদ্দীন তালুকদার ও আরিফ রহমান যে সংবাদ সম্মেলনে এসে জানিয়ে দিয়েছেন, তামিম ধূমপান করেন এবং তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে এসেও ধূমপান করতে চেয়েছেন।

দুই জন নামী, দক্ষ, অভিজ্ঞ ও সিনিয়র চিকিৎসকের এমন অপেশদার আচরণকে অনেকেই ভালো চোখে দেখেননি।

অনেকের মত, দেশের অন্যতম হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর সাহাবউদ্দীন তালুকদার ও এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর আরিফ রহমানের মতো দায়িত্বশীল চিকিৎসকের মুখে ‘তামিম ধূমপান করেন, এভারকেয়ারে এসেও ধূমপান করতে চেয়েছেন, বলার পরও ধূমপান ছাড়তে অনীহা’- এমন কথা শুনে বিরাগভাজন হয়েছেন।

দেশের অগণিত তামিমভক্ত, ক্রিকেট ও ক্রীড়া অনুরাগীরা মনে করেন, চিকিৎসকরা অপেশাদার মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তামিমের মতো একজন ক্রিকেটারের পারিবারিক, সামাজিক ও পেশাগত জীবনের কথা চিন্তা করে ধূমপানের প্রসঙ্গ সরাসরি না বললেই ভালো হতো।

অবশেষে ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ওই দুই চিকিৎসক সংবাদ সম্মেলনে এসে তামিমের ধূমপানের বিষয়টি প্রকাশের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে এভারকেয়ার হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে প্রফেসর সাহাবউদ্দীন তালুকদার ও আরিফ রহমান দুঃখ প্রকাশ করেন।

প্রফেসর সাহাবউদ্দীন তালুকদার বলেন, ‘তামিমের শারিরীক অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে ধূমপানের প্রসঙ্গ চলে আসে। ধূমপান যে হৃদরোগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, তা জানাতে গিয়ে ভুলবশত তামিমকে সম্পৃক্ত করার জন্য দুঃখিত। আমি আসলে ধূমপানটা হৃদরোগীদের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ বলে বোঝাতে গিয়ে তামিমকে জড়িয়ে ফেলেছিলাম। সেজন্য দুঃখিত।

এভারকেয়ার মেডিকেল ডিরেক্টর আরিফ রহমান বলেন, ‘ধূমপানের বিষয়টি সামনে এনে আমরা বুঝতে পেরেছি, দেশবরেণ্য ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব তামিম ইকবাল ভাইয়ের ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক, সামাজিক জীবন ও গোটা ক্যারিয়ারের জন্য একটা নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে। বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলেছে। আমি ও স্যার সাহাবউদ্দীন তালুকদার আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমরা তামিম ভাই এবং তার পরিবারের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই তামিম ভাই যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে খেলায় ফিরে আসেন।’