চট্টগ্রামন প্রতিনিধি : ভুয়া স্মারক নম্বর বসিয়ে বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার একটি বিল ছাড়াতে গিয়ে আটক হয়েছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ফোরকান। আর সেই হিসাব রক্ষককে নিজ জিম্মায় থানা থেকে ছাড়িয়ে নেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
গত মঙ্গলবার বিকালে নগরীর দুই নম্বর গেটের বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক ভবনে এ ঘটনা ঘটে। বিভাগীয় হিসাব বিভাগ অভিযুক্ত ফোরকানকে পাঁচলাইশ থানার পুলিশের হেফাজতে তুলে দিলেও পরবর্তীতে হাসপাতালের ভুয়া স্মারকে ৫ কোটি টাকার বিল ছাড়াতে গিয়ে ধরা হিসাবরক্ষকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি এসে নিজ হেফাজতে নেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকায় আটটি আইসিইউ বেড ও অন্যান্য সামগ্রী কেনায় অনিয়ম হয়। এ ঘটনায় দুদকের মামলা থাকায় ওই বিলটি আটকে যায়। কিন্তু সেই বিল ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ছাড়াতে নানা তোড়জোড় চালানো হয়। যা নিয়ে চলতি বছরের ১৭ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গঠিত একটি তদন্ত কমিটিও চট্টগ্রামে আসেন তদন্তের জন্য। কিন্তু এত কিছুর পরও আলোচিত সেই বিল ছাড়াতে চেষ্টা চালানো হয়।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের একটি বিলের স্বারক নম্বর জেনারেল হাসপাতালের নামে আরেকটি বিলের কাগজে বসিয়ে জাল কাগজ তৈরি করে ফোরকান। সে জাল কাগজটিতে হিসাব রক্ষক ফোরকান প্রথমে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক থেকে স্বাক্ষর করে দুপুরেই হাতে হাতে নিয়ে যান বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক অফিসে। সেখানে সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তার বিষয়টি সন্দেহ হলে পরবর্তীতে অফিস প্রধানকে অবহিত করা হয়। পরে তারা (বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেও বলা হয়, বিলটি ছাড় করানোর জন্য একটি চক্র উঠে পড়ে লেগেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর ফোরকানকে হিসাব নিয়ন্ত্রক অফিসে আটকে রাখা হয়। পরে পাঁচলাইশ থানায় সোপর্দ করা হলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফোরকানকে নিজ জিম্মায় ছাড়িয়ে আনেন। বিষয়টি জানতে বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক এস এম মনজুর আহমেদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বিল জালিয়াতির কথা স্বীকার করলেও হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ফোরকানের জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ নিয়ে কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির বলেন, সাধারণ ডায়েরি করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে। বুধবার (২৯ জুন) সকালে আসার কথা থাকলেও কেউ এখনো আসেননি।
হাসপাতালে ভুয়া স্মারকে ৫ কোটি টাকার বিল ছাড়ানোর চেষ্টা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ