বিদেশের খবর ডেস্ক : গাজার উত্তরাঞ্চলের হাসপাতালে অভিযান চালানোর পক্ষে সাফাই গেয়েছে ইসরায়েল। দেশটির এসব কর্মকাণ্ডে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রধানের সমালোচনা ও হাসপাতালের পরিচালককে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আহ্বানের পর শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) এক চিঠিতে এই দাবি করেছে ইসরায়েল। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুক্রবার প্রেরিত একটি চিঠির ছবি প্রকাশ করেছেন জেনেভায় জাতিসংঘের ইসরায়েলি প্রতিনিধি ড্যানিয়েল মেরন। ডব্লিউএইচও এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার কর্মকর্তা ভলকার টুর্কের কাছে এই চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। চিঠিতে দাবি করা হয়, কামাল আদওয়ান হাসপাতালে হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর সদস্যদের আনাগোনা রয়েছে- এমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতেই তারা অভিযান চালিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, বেসামরিক জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাড়তি সতর্কতা বজায় রেখে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতেই কাজ করেছে সেনাবাহিনী। নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলি অভিযানের সমালোচনা করে টুর্ক বলেছেন, দাবির স্বপক্ষে যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করেনি ইসরায়েল। অনেক ক্ষেত্রে সেগুলো অস্পষ্ট ও জনসাধারণের কাছে বিদ্যমান তথ্যের সাথে সাংঘর্ষিক। হাসপাতাল, চিকিৎসা অবকাঠামো ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলা বন্ধ করে এসব স্থাপনার অপব্যবহার সংক্রান্ত অভিযোগের স্বতন্ত্র, বিস্তারিত ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, জাতিসংঘে ইসরায়েলের উপ-প্রতিনিধি জোনাথন মিলার দাবি করেছেন, অভিযানের সময় ২৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের মধ্যে ১৫ জন ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবরের হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। হাসপাতালের পরিচালক হুসসাম আবু সাফিয়াকেও গ্রেপ্তার করা হয়। মিলার দাবি করেন, আবু সাফিয়া হামাসের একজন সক্রিয় সদস্য ও হাসপাতালে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। বর্তমানে তাকে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আটকের পর থেকে আবু সাফিয়ার কোনও খোঁজ না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ডব্লিউএইচও প্রতিনিধি রিচার্ড পিইপারকর্ন বলেছেন, অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে।
নিরাপত্তা পরিষদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি রিয়াদ মানসুর। ২০২৩ সালের নভেম্বরে নিহত আল-আওদা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের শেষ কথাগুলো তুলে ধরেন তিনি। ওই চিকিৎসক হাসপাতালের একটি বোর্ডে লিখে গিয়েছিলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমতো করেছি। আমাদের মনে রেখো।