ঢাকা ০১:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘হার ই-ট্রেড’ অনলাইনে নারী উদ্যোক্তা

  • আপডেট সময় : ০১:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১১৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : কয়েকবছরে দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে ক্ষুদ্র ব্যবসার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। এই উদ্যোক্তাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ নারী। নতুন এই উদ্যোক্তাদের ব্যবসা প্রসারের বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয়ে সহযোগিতা করার প্ল্যাটফর্মও দাঁড়িয়েছে বেশ কয়েকটি। তার মধ্যে পরিচিত একটি নাম ‘হার ই-ট্রেড’। এই প্ল্যাটফর্ম সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এর সঙ্গে যুক্ত আছেন প্রায় ৩৩ হাজার নারী। যারা ফেসবুক গ্রুপ ও পেজের মাধ্যমে নিজেদের তৈরি পণ্য বা ইউনিক পণ্য নিয়ে হাজির হচ্ছেন নিয়মিতই। তবে স্বল্পপুঁজির এই ব্যবসাতে সংগ্রাম করেই টিকে থাকতে হচ্ছে তাদের। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরাও এখন পড়ালেখা কিংবা চাকরির পাশাপাশি এই প্ল্যাটফর্মে নিজেদের পণ্য নিয়ে হাজির হচ্ছেন। আর এখানে সবার যোগাযোগটাও অত্যন্ত সুশৃংখল। ৩৩ হাজার সদস্যের এই প্ল্যাটফর্মে কোনও নেতিবাচক কথার চর্চা হয় না, নেই রাজনৈতিক আলোচনা, নেই অন্য কোনও গ্রুপের সদস্যদের নিয়ে কোনও নেতিবাচক আলাপ। ‘হার ই-ট্রেড’ এর প্রেসিডেন্ট প্রীতি ওয়ারেছা জানান, আমাদের শুরু থেকেই উদ্দেশ্য ছিল যে, গ্রুপটাতে পজিটিভিটির চর্চা হবে; যেখানে ট্রেড করবে শুধু নারী, সর্বোপরি হার ই-ট্রেড হবে নারীর প্রতি বিদ্বেষহীন একটা গ্রুপ; এটাই শুরুর পেছনের গল্প। ছোট-বড় মিলিয়ে দেশে এখন কয়েক শ’ ফেসবুক গ্রুপভিত্তিক বিজনেস প্ল্যাটফর্ম আছে বলেও জানান প্রীতি ওয়ারেছা। তার কথায়, ফেসবুকের কল্যাণে যে কেউ এখন চাইলেই গ্রুপ খুলে ফেলতে পারেন। এই বিজনেস প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিষয়ভিত্তিক কমন কিছু কার্যক্রম থাকে। যেমন: ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীগণ নিজেরদের পণ্য প্রদর্শন করে, একে অন্যের সঙ্গে নিজেদের বিজনেস পেইজ শেয়ার করে, গ্রুপ ব্যবস্থাপক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে ট্রেইনিং প্রোগ্রাম পরিচালনা করে, মেলাসহ বিভিন্ন আয়োজন করে। আর এসব গ্রুপে ক্রেতা-বিক্রেতার পারস্পরিক যোগাযোগের বিষয়টা অর্থাৎ নেটওয়ার্কিং অসাধারণভাবে হয়; যেটা উদ্যোক্তার নিজস্ব বিজনেস পেইজে সম্ভব হয় না। তাই গ্রুপভিত্তিক এই নেটওয়ার্কিং কার্যক্রম বিজনেস মার্কেটিংয়ে খুবই ফলপ্রসু। তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তারা একারণে বিভিন্ন গ্রুপের সাথে সংযুক্ত হয়ে নিজেদের পণ্যের প্রচারণা করে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপে ভিন্ন ভিন্ন কমিউনিটির লোকের সমাগম থাকে সুতরাং নিজেকে সঠিকভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে বিজনেসকে তরান্বিত করার সুযোগও এখানে অনেক বেশি। ফেসবুকে অনেক বড় বড় গ্রুপ রয়েছে। তবে সবগুলোর কার্যক্রমের কোয়ালিটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এই উদ্যোক্তার। তার কথায়, কোয়ান্টিটিতে না, কিছু সংখ্যক কোয়ালিটিফুল মানুষের হাত ধরে বড় হয় একটা সংগঠন। আর ফোকাস যদি ঠিক থাকে তবে সংগঠন শাখা প্রশাখা ছড়ায়, একসময় ব্যক্তি ও সামষ্টিক উন্নয়নের অংশীদার হয়। হার ই-ট্রেড মাত্র দেড় বছরের মধ্যে নিজেকে তার কার্যক্রমের মাধ্যমে অনেকটাই প্রমাণ করেছে। গ্রুপে প্রচুর সংখ্যক সৃজনশীল মানুষ আছেন যারা মেধা ও শ্রম দিয়ে অনলাইন বিজনেস করে যাচ্ছেন। গ্রুপের সদস্য সংখ্যা প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৩৩ হাজার, যেটা হতে পারতো ৫ লাখ। পেইজ, পেইজের ফেসবুক আইডি, ফেইক নামের আইডি, নিউ আইডি এসব কিছুই এই গ্রুপে অ্যাপ্রুভ করা হয় না। এখানে সদস্য হতে গেলে যে কোনও আইডির একটা নির্দিষ্ট বয়স থাকতে হয়। গ্রুপে সদস্য সংখ্যার চেয়ে সমমানসিকতার মানুষের সমাবেশ চেয়েছি এবং সেটা অনেকখানিই সম্ভব হয়েছে মান নিয়ন্ত্রণজনিত নীতিমালার কঠিন বাস্তবায়নের কারণে। তিনি বলেন, হার ই-ট্রেড পরিচালনা ও সদস্যদের মধ্যে প্রফেশনালিজম তৈরির জন্য বিভিন্ন ইস্যুতে নীতিমালা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়নের জন্য আমাকে কখনও-কখনও খানিকটা কঠিন হতে হয়েছে। আর এতে সদস্যরা গ্রুপের নিয়মাবলিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। নিজেদের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে এই উদ্যোক্তা বলেন, ‘কোভিডকালে যখন মেইন্সট্রিম বিজনেস মুখ থুবড়ে পড়ল ঠিক সেসময় হার ই-ট্রেড প্রতি মাসে তিন দিনব্যাপী অনলাইন এক্সিবিশন আয়োজন করে এসেছে। সেই এক্সিবিশন অভাবনীয় সাফল্যও পেয়েছে। এরপর অফলাইন এক্সিবিশন হয় গত ডিসেম্বরে। সেখানও সাফল্য আসে। মাত্র দুই দিনের এক্সিবিশনে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়েছে। আগামী ৮ এবং ৯ এপ্রিল আবারও অফলাইন এক্সিবিশনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান প্রীতি ওয়ারেছা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শাহবাগে একই মঞ্চে ৩০ রাজনৈতিক দলের নেতারা

‘হার ই-ট্রেড’ অনলাইনে নারী উদ্যোক্তা

আপডেট সময় : ০১:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : কয়েকবছরে দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে ক্ষুদ্র ব্যবসার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। এই উদ্যোক্তাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ নারী। নতুন এই উদ্যোক্তাদের ব্যবসা প্রসারের বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয়ে সহযোগিতা করার প্ল্যাটফর্মও দাঁড়িয়েছে বেশ কয়েকটি। তার মধ্যে পরিচিত একটি নাম ‘হার ই-ট্রেড’। এই প্ল্যাটফর্ম সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এর সঙ্গে যুক্ত আছেন প্রায় ৩৩ হাজার নারী। যারা ফেসবুক গ্রুপ ও পেজের মাধ্যমে নিজেদের তৈরি পণ্য বা ইউনিক পণ্য নিয়ে হাজির হচ্ছেন নিয়মিতই। তবে স্বল্পপুঁজির এই ব্যবসাতে সংগ্রাম করেই টিকে থাকতে হচ্ছে তাদের। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরাও এখন পড়ালেখা কিংবা চাকরির পাশাপাশি এই প্ল্যাটফর্মে নিজেদের পণ্য নিয়ে হাজির হচ্ছেন। আর এখানে সবার যোগাযোগটাও অত্যন্ত সুশৃংখল। ৩৩ হাজার সদস্যের এই প্ল্যাটফর্মে কোনও নেতিবাচক কথার চর্চা হয় না, নেই রাজনৈতিক আলোচনা, নেই অন্য কোনও গ্রুপের সদস্যদের নিয়ে কোনও নেতিবাচক আলাপ। ‘হার ই-ট্রেড’ এর প্রেসিডেন্ট প্রীতি ওয়ারেছা জানান, আমাদের শুরু থেকেই উদ্দেশ্য ছিল যে, গ্রুপটাতে পজিটিভিটির চর্চা হবে; যেখানে ট্রেড করবে শুধু নারী, সর্বোপরি হার ই-ট্রেড হবে নারীর প্রতি বিদ্বেষহীন একটা গ্রুপ; এটাই শুরুর পেছনের গল্প। ছোট-বড় মিলিয়ে দেশে এখন কয়েক শ’ ফেসবুক গ্রুপভিত্তিক বিজনেস প্ল্যাটফর্ম আছে বলেও জানান প্রীতি ওয়ারেছা। তার কথায়, ফেসবুকের কল্যাণে যে কেউ এখন চাইলেই গ্রুপ খুলে ফেলতে পারেন। এই বিজনেস প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিষয়ভিত্তিক কমন কিছু কার্যক্রম থাকে। যেমন: ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীগণ নিজেরদের পণ্য প্রদর্শন করে, একে অন্যের সঙ্গে নিজেদের বিজনেস পেইজ শেয়ার করে, গ্রুপ ব্যবস্থাপক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে ট্রেইনিং প্রোগ্রাম পরিচালনা করে, মেলাসহ বিভিন্ন আয়োজন করে। আর এসব গ্রুপে ক্রেতা-বিক্রেতার পারস্পরিক যোগাযোগের বিষয়টা অর্থাৎ নেটওয়ার্কিং অসাধারণভাবে হয়; যেটা উদ্যোক্তার নিজস্ব বিজনেস পেইজে সম্ভব হয় না। তাই গ্রুপভিত্তিক এই নেটওয়ার্কিং কার্যক্রম বিজনেস মার্কেটিংয়ে খুবই ফলপ্রসু। তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তারা একারণে বিভিন্ন গ্রুপের সাথে সংযুক্ত হয়ে নিজেদের পণ্যের প্রচারণা করে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপে ভিন্ন ভিন্ন কমিউনিটির লোকের সমাগম থাকে সুতরাং নিজেকে সঠিকভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে বিজনেসকে তরান্বিত করার সুযোগও এখানে অনেক বেশি। ফেসবুকে অনেক বড় বড় গ্রুপ রয়েছে। তবে সবগুলোর কার্যক্রমের কোয়ালিটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এই উদ্যোক্তার। তার কথায়, কোয়ান্টিটিতে না, কিছু সংখ্যক কোয়ালিটিফুল মানুষের হাত ধরে বড় হয় একটা সংগঠন। আর ফোকাস যদি ঠিক থাকে তবে সংগঠন শাখা প্রশাখা ছড়ায়, একসময় ব্যক্তি ও সামষ্টিক উন্নয়নের অংশীদার হয়। হার ই-ট্রেড মাত্র দেড় বছরের মধ্যে নিজেকে তার কার্যক্রমের মাধ্যমে অনেকটাই প্রমাণ করেছে। গ্রুপে প্রচুর সংখ্যক সৃজনশীল মানুষ আছেন যারা মেধা ও শ্রম দিয়ে অনলাইন বিজনেস করে যাচ্ছেন। গ্রুপের সদস্য সংখ্যা প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৩৩ হাজার, যেটা হতে পারতো ৫ লাখ। পেইজ, পেইজের ফেসবুক আইডি, ফেইক নামের আইডি, নিউ আইডি এসব কিছুই এই গ্রুপে অ্যাপ্রুভ করা হয় না। এখানে সদস্য হতে গেলে যে কোনও আইডির একটা নির্দিষ্ট বয়স থাকতে হয়। গ্রুপে সদস্য সংখ্যার চেয়ে সমমানসিকতার মানুষের সমাবেশ চেয়েছি এবং সেটা অনেকখানিই সম্ভব হয়েছে মান নিয়ন্ত্রণজনিত নীতিমালার কঠিন বাস্তবায়নের কারণে। তিনি বলেন, হার ই-ট্রেড পরিচালনা ও সদস্যদের মধ্যে প্রফেশনালিজম তৈরির জন্য বিভিন্ন ইস্যুতে নীতিমালা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়নের জন্য আমাকে কখনও-কখনও খানিকটা কঠিন হতে হয়েছে। আর এতে সদস্যরা গ্রুপের নিয়মাবলিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। নিজেদের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে এই উদ্যোক্তা বলেন, ‘কোভিডকালে যখন মেইন্সট্রিম বিজনেস মুখ থুবড়ে পড়ল ঠিক সেসময় হার ই-ট্রেড প্রতি মাসে তিন দিনব্যাপী অনলাইন এক্সিবিশন আয়োজন করে এসেছে। সেই এক্সিবিশন অভাবনীয় সাফল্যও পেয়েছে। এরপর অফলাইন এক্সিবিশন হয় গত ডিসেম্বরে। সেখানও সাফল্য আসে। মাত্র দুই দিনের এক্সিবিশনে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়েছে। আগামী ৮ এবং ৯ এপ্রিল আবারও অফলাইন এক্সিবিশনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান প্রীতি ওয়ারেছা।