ঢাকা ১২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

হারানোর ভয়কে হারিয়ে ছুটছেন রনি

  • আপডেট সময় : ০২:১৭:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩
  • ৬৪ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া প্রতিবেদক : প্রায় ৮ বছর বিরতির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে প্রথম বলটি খেলার সময় কেমন লাগে! রোমাঞ্চ, শঙ্কা, উত্তেজনাৃ সবকিছু মিলিয়ে পেটে প্রজাপতির নাচন! কিছুটা অস্বস্তি বা জড়তাও অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু রনি তালুকদার ফেরার পর প্রথম বলেই মারলেন চার! স্যাম কারানের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি এক্সট্রা কাভার দিয়ে সীমানায়। তিন সপ্তাহ আগে ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায়ে সেই যে ছুটতে শুরু করলেন, এখন তিনি আরও অপ্রতিরোধ্য। ক্যারিয়ারের অনেক বাঁক পেরিয়ে এই রনি যে আর হারানোর ভয় করেন না!
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে রনির পরিচায় ২০১৫ সালে। তবে কিছু বুঝে ওঠার আগেই থমকে যেতে হয় স্রেফ এক ম্যাচ খেলে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওই টি-টোয়েন্টিতে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন তিনি। পরের ম্যাচ খেলার জন্য তার অপেক্ষা ৭ বছর ২৪৫ দিনের। মাঝে বাংলাদেশ খেলে ফেলে ১০০টি বিশ ওভারের ম্যাচ। প্রবাদে আছে, অপেক্ষার ফল মধুর। সেই স্বাদই যেন এখন উপভোগ করছেন রনি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অধ্যায়ে এখন পর্যন্ত খেলা পাঁচ টি-টোয়েন্টিতে ৩৩ গড়ে ১৬৫ রান করেছেন তিনি। স্ট্রাইক রেট ১৪৮.৬৪! পাঁচ ম্যাচে ১৮টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৫ ছক্কা। চলতি মাসের শুরুতে ইংল্যান্ড সিরিজে রনির ব্যাটে ছিল ভালো কিছু করার আভাস। যা বাস্তব রূপ পেয়েছে আইরিশদের বিপক্ষে সিরিজের দুই টি-টোয়েন্টিতেই। প্রথম ম্যাচে ১৭৬.৩১ স্ট্রাইক রেটে ৩৮ বলে ৬৭ রানের পর দ্বিতীয়টিতে তার সংগ্রহ ২৩ বলে ৪৪ রান। স্ট্রাইক রেট ১৯১.৩০! সবশেষ বিপিএলেও ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে দারুণ শুরু এনে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন রনি। রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১৩ ইনিংসে ১২৯.১৭ স্ট্রাইক রেটে আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২৫ রান করেন তিনি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে আসরের প্রথম ম্যাচে স্রেফ ১৯ বলের ফিফটিতে করেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বিপিএলে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড।
বিপিএলের পারফরম্যান্সের সৌজন্য প্রায় ৮ বছর পর রনির জন্য খুলে যায় জাতীয় দলের দুয়ার। দীর্ঘ দিন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফিরলেও নিজের মানসিকতায় কোনো পরিবর্তন আনেননি রনি। জায়গা পোক্ত করতে ধরে খেলার পথেও হাঁটেননি তিনি। প্রথমবার স্রেফ এক ম্যাচ খেলে বাদ পড়লেও এবার সেই ভয় পাচ্ছেন না তিনি। চট্টগ্রামে বুধবার টিম হোটেলে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি ৩২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান জানালেন, ভয়ডরহীন খেলার অনুমতিপত্র পেয়ে গেছেন তিনি দল থেকে। “আমার এখানে হারানোর কিছু নেই। আমি ৮ বছর আগেও যেমন খেলা খেলেছি… শুরু থেকেই আমার খেলার ধরনটা এমন ছিল। কারণ আমি ইতিবাচক ইন্টেন্ট নিয়ে মাঠে নামি। টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে যে ইয়েটা (বার্তা) দিয়েছে যে, আমার খেলার ধরন অনুযায়ী আমাকে খেলতে বলছে। ইংল্যান্ড সিরিজের আগে আমাকেও বলল, ‘তুমি বিপিএলে যে কাজটা করছ, এখানেও সে জিনিসটাই করবে।” “এখন এই (বাদ পড়ে যাওয়ার) ভয় কাজ করে না। কারণ টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে ওই সাহসটা দিয়েছে।” দলের পক্ষ থেকে রনিকে এই সাহস জোগানো সহজ হয়েছে হয়তো গোটা দলের ভাবনা এখন এরকম বলেই। গোটা দলই এখন উজ্জীবিত আগ্রাসনের মন্ত্রে। “আমাদের একটা পরিকল্পনা থাকে। টিম ম্যানেজমেন্ট আমাদের একটা পরিকল্পনা দিয়ে দেয়। আমরা সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা কাজটা করার চেষ্টা করি। মূল পরিকল্পনাটা হলো ইতিবাচক থাকার। আমরা যেন এখানে ইতিবাচক ইন্টেন্ট দেখাতে পারি। টিম ম্যানেজমেন্ট যারা… ড্রেসিং রুমে আমরা একটা জিনিসই করার চেষ্টা করছি, সবাই যেন ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারি আমরা। এটাই আমাদের মূল কাজ।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বজ্রপাতে একদিনে ১০ জনের মৃত্যু

হারানোর ভয়কে হারিয়ে ছুটছেন রনি

আপডেট সময় : ০২:১৭:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

ক্রীড়া প্রতিবেদক : প্রায় ৮ বছর বিরতির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে প্রথম বলটি খেলার সময় কেমন লাগে! রোমাঞ্চ, শঙ্কা, উত্তেজনাৃ সবকিছু মিলিয়ে পেটে প্রজাপতির নাচন! কিছুটা অস্বস্তি বা জড়তাও অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু রনি তালুকদার ফেরার পর প্রথম বলেই মারলেন চার! স্যাম কারানের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি এক্সট্রা কাভার দিয়ে সীমানায়। তিন সপ্তাহ আগে ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায়ে সেই যে ছুটতে শুরু করলেন, এখন তিনি আরও অপ্রতিরোধ্য। ক্যারিয়ারের অনেক বাঁক পেরিয়ে এই রনি যে আর হারানোর ভয় করেন না!
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে রনির পরিচায় ২০১৫ সালে। তবে কিছু বুঝে ওঠার আগেই থমকে যেতে হয় স্রেফ এক ম্যাচ খেলে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওই টি-টোয়েন্টিতে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন তিনি। পরের ম্যাচ খেলার জন্য তার অপেক্ষা ৭ বছর ২৪৫ দিনের। মাঝে বাংলাদেশ খেলে ফেলে ১০০টি বিশ ওভারের ম্যাচ। প্রবাদে আছে, অপেক্ষার ফল মধুর। সেই স্বাদই যেন এখন উপভোগ করছেন রনি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অধ্যায়ে এখন পর্যন্ত খেলা পাঁচ টি-টোয়েন্টিতে ৩৩ গড়ে ১৬৫ রান করেছেন তিনি। স্ট্রাইক রেট ১৪৮.৬৪! পাঁচ ম্যাচে ১৮টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৫ ছক্কা। চলতি মাসের শুরুতে ইংল্যান্ড সিরিজে রনির ব্যাটে ছিল ভালো কিছু করার আভাস। যা বাস্তব রূপ পেয়েছে আইরিশদের বিপক্ষে সিরিজের দুই টি-টোয়েন্টিতেই। প্রথম ম্যাচে ১৭৬.৩১ স্ট্রাইক রেটে ৩৮ বলে ৬৭ রানের পর দ্বিতীয়টিতে তার সংগ্রহ ২৩ বলে ৪৪ রান। স্ট্রাইক রেট ১৯১.৩০! সবশেষ বিপিএলেও ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে দারুণ শুরু এনে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন রনি। রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১৩ ইনিংসে ১২৯.১৭ স্ট্রাইক রেটে আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২৫ রান করেন তিনি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে আসরের প্রথম ম্যাচে স্রেফ ১৯ বলের ফিফটিতে করেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বিপিএলে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড।
বিপিএলের পারফরম্যান্সের সৌজন্য প্রায় ৮ বছর পর রনির জন্য খুলে যায় জাতীয় দলের দুয়ার। দীর্ঘ দিন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফিরলেও নিজের মানসিকতায় কোনো পরিবর্তন আনেননি রনি। জায়গা পোক্ত করতে ধরে খেলার পথেও হাঁটেননি তিনি। প্রথমবার স্রেফ এক ম্যাচ খেলে বাদ পড়লেও এবার সেই ভয় পাচ্ছেন না তিনি। চট্টগ্রামে বুধবার টিম হোটেলে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি ৩২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান জানালেন, ভয়ডরহীন খেলার অনুমতিপত্র পেয়ে গেছেন তিনি দল থেকে। “আমার এখানে হারানোর কিছু নেই। আমি ৮ বছর আগেও যেমন খেলা খেলেছি… শুরু থেকেই আমার খেলার ধরনটা এমন ছিল। কারণ আমি ইতিবাচক ইন্টেন্ট নিয়ে মাঠে নামি। টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে যে ইয়েটা (বার্তা) দিয়েছে যে, আমার খেলার ধরন অনুযায়ী আমাকে খেলতে বলছে। ইংল্যান্ড সিরিজের আগে আমাকেও বলল, ‘তুমি বিপিএলে যে কাজটা করছ, এখানেও সে জিনিসটাই করবে।” “এখন এই (বাদ পড়ে যাওয়ার) ভয় কাজ করে না। কারণ টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে ওই সাহসটা দিয়েছে।” দলের পক্ষ থেকে রনিকে এই সাহস জোগানো সহজ হয়েছে হয়তো গোটা দলের ভাবনা এখন এরকম বলেই। গোটা দলই এখন উজ্জীবিত আগ্রাসনের মন্ত্রে। “আমাদের একটা পরিকল্পনা থাকে। টিম ম্যানেজমেন্ট আমাদের একটা পরিকল্পনা দিয়ে দেয়। আমরা সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা কাজটা করার চেষ্টা করি। মূল পরিকল্পনাটা হলো ইতিবাচক থাকার। আমরা যেন এখানে ইতিবাচক ইন্টেন্ট দেখাতে পারি। টিম ম্যানেজমেন্ট যারা… ড্রেসিং রুমে আমরা একটা জিনিসই করার চেষ্টা করছি, সবাই যেন ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারি আমরা। এটাই আমাদের মূল কাজ।”