প্রত্যাশা ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়ার পর যৌনকর্মে বাধ্য করা এক কিশোরীকে ভারতের হায়দরাবাদ পুলিশ উদ্ধার করার ঘটনা দুই দেশে সক্রিয় মানব পাচারকারী সিন্ডিকেটগুলোর দৌরাত্ম নতুন করে সামনে এনেছে।
শহরটির খয়রাতাবাদ, চাদেরঘাট ও বান্দলাগুডার যৌনপল্লিগুলো থেকে বাংলাদেশি নারী উদ্ধারের এটি চতুর্থ ঘটনা, জানিয়েছে হায়দরাবাদভিত্তিক সংবাদমাধ্যম তেলেঙ্গানা টুডে।
তারা লিখেছে, হায়দরাবাদের যৌনপল্লি থেকে বাংলাদেশি নারী উদ্ধারের ঘটনা নতুন নয়।
চলতি শতকের শূন্য দশকের শুরু থেকেই পুলিশ সুসংগঠিত মাফিয়া চক্রের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত যৌনপল্লিগুলো থেকে নারীদের উদ্ধার করছে।
উজবেকিস্তান, রাশিয়া, ইউক্রেইন, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে নারী পাচার করে তাদের যৌনপল্লিতে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করায় এ মাফিয়া চক্রগুলো।
“বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, দালালের সহযোগিতায় নারীদের স্থল বা সমুদ্রপথ দিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পার করা হয়। বাংলাদেশ ও ভারতে এ চক্রের নেটওয়ার্ক বেশ শক্তিশালী, দালাল ও অন্যদের অর্থেরও ব্যবস্থা করে তারা,” তেলেঙ্গানা টুডেকে এমনটাই বলেছেন ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এক কর্মকর্তা।
‘চাকরির প্রস্তাব ও ভালো বেতনের’ কথা বলে নারীদের আকৃষ্ট করে তারা তাদের ভারতে নিয়ে আসে।
“বাংলাদেশের কিছু এলাকায় দারিদ্র্য খুব বেশি। এ অবস্থার সুযোগ নিতে দালালরা কৌশল খাটায়, তারা অভাবী নারী ও মেয়েদের ভালো জীবনের লোভ দেখিয়ে সীমান্ত পার করে ভারতে নিয়ে আসে। এরপর তাদের জন্য স্থানীয় পরিচয়পত্র বানানো হয়, তারপর ওই নারীদের অন্য শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়,” বলেছেন ওই কর্মকর্তা।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলছেন, দারিদ্র্যের কারণে নারীরা ছাড়াও অনেক পুরুষ ও শিশুও সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করে এবং ধরা পড়ার আগ পর্যন্ত ‘বাঙালি’ পরিচয়ে কাজ করে যায়।
ভারতের কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ বোর্ডের (সিএসডব্লিউবি) এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে বাণিজ্যিক যৌন শোষণের শিকার হওয়াদের মধ্যে ২ দশমিক ৭ শতাংশই বাংলাদেশি নাগরিক। বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারের পরে কলকাতা, দিল্লি, হায়দরাবাদ, মুম্বাইসহ বিভিন্ন শহরের দালালদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
এসি/