যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক, গুপ্তচর ও দূতাবাস কর্মীদের ‘হাভানা সিনড্রোমজনিত’ অসুস্থতার পেছনে ‘বিদেশি শত্রুদের’ থাকার সম্ভাবনা খুবই কম বলে এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে চালানো মার্কিন গোয়েন্দাদের তদন্তে ধারণা দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত মূল্যায়ন গোপন ছিল, বুধবার তা প্রকাশ করা হয়েছে। ২০১৬ সালে প্রথম কিউবার রাজধানী হাভানার যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা দূতাবাসের কর্মীরা মাথা ঘোরা, ভারসাম্যহীনতা, কানে কম শোনা, স্মৃতি হারানো ও দুশ্চিন্তার মতো লক্ষণের কথা জানিয়েছিলেন। পরে এ ধরনের আরও ঘটনার খবর মেলে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা ও মন্ত্রণালয় ‘হাভানা সিনড্রোমে’ আক্রান্ত হওয়ার দেড় হাজার ঘটনার কথা জানতে পারে, তাদের মধ্যে কিছু ঘটনার কথা জানা গেছে এ বছরই। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮টি গোয়েন্দা সংস্থার ৭টি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশে অনুসন্ধান চালায়। এফবিআই্ও এই ‘হাভানা সিনড্রোম’ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তদন্তে নামে। ‘হাভানা সিনড্রোমের’ পেছনে মহাজাগতিক কিছু দায়ী কিনা তাও খতিয়ে দেখেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, যদিও পরে ওই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন মার্কিন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা। “গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বেশিরভাগই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, বিদেশি শত্রুরা (হাভানা সিনড্রোমের জন্য) দায়ী, এটা হওয়ার সম্ভাবনা ‘খুবই কম’,” বলা হয়েছে বুধবার প্রকাশিত মূল্যায়নে। যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুরা তড়িতচৌম্বকীয় শক্তি তরঙ্গ নির্গমনকারী যন্ত্রের মতো কোনো অস্ত্র বা তথ্য সংগ্রহ যন্ত্র ব্যবহার করেছে, এর কোনো ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণও’ পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের ভেতরের-বাইরের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত একটি পরামর্শক গোষ্ঠী গত বছর উপসর্গধারী অনেকে তড়িতচৌম্বকীয় শক্তি তরঙ্গ নির্গমনকারী যন্ত্রের টার্গেটের শিকার হতে পারেন বলে ধারণা দিয়েছিলেন। “গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পর্যালোচনা বলছে, মার্কিন কর্মকর্তাদের অসুস্থতা সম্ভবত আগের সমস্যা, সাধারণ অসুখ ও পরিবেশজনিত এমন সব কারণে হয়েছে, যার সঙ্গে বিদেশি শত্রুরা জড়িত নয়,” বলা হয়েছে ওই মূল্যায়নে। চিকিৎসা, পরিবেশগত ও সামাজিক নানান কারণ ‘হাভানা সিনড্রোমের’ অনেক উপসর্গের ব্যাখ্যা দিতে পারে, এটা বেরিয়ে আসায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পর্যালোচনা শক্ত ভিত্তিও পেয়েছে, বলা হয়েছে মূল্যায়নে। “কোনো ঘটনার সঙ্গেই আমরা বিদেশি প্রতিপক্ষদের জড়াতে পারছি না,” বলেছেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করা ২ মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তার একজন। ২০১৬ সালের আগে একই ধরনের যেসব উপসর্গের খবর পাওয়া গেছে, সেসব ঘটনার বিস্তারিত তথ্য না থাকলেও সেগুলোও খতিয়ে দেখা হয়েছে।
তদন্তের সময় যোগাযোগ করা বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কেউই এ ধরনের কোনো ঘটনার কথাও জানায়নি, বলেছেন ওই কর্মকর্তা।
‘হাভানা সিনড্রোম’ বিদেশি শত্রুদের সৃষ্ট নয়: মার্কিন তদন্ত দল
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ