ঢাকা ০৭:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫

হাতি হত্যায় কারা?

  • আপডেট সময় : ০২:০৩:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি : দিনে দিনে মানুষের হাতে বন্যপ্রাণী মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ছে। এর মধ্যে বেশি মারা পড়ছে বন্যহাতি। গত এক বছরে দেশজুড়ে মানুষের হাতে ৩৫টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ছায়া তদন্ত করেছে ৩৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের জোট ‘বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)’। ওই তদন্ত শেষে বন্যপ্রাণী রক্ষায় সরকারের প্রতি ১১ দফা সুপারিশ করেছে বিএনসিএ।
গতকাল মঙ্গলবার স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির অডিটরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন জোটের আহ্বায়ক পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, গত ২৮ নভেম্বর বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে জোট নেতাদের আলোচনায় বন, বনভূমি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বন বিভাগের নানান সীমাবদ্ধতার কথা উঠে আসে। তারই প্রেক্ষাপটে ২ ডিসেম্বর জোটের আহবায়ক কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, হাতি হত্যার ছায়া তদন্ত করার। পরে কক্সবাজারের রামু এবং শেরপুরের শ্রীবর্দীতে হাতি হত্যার ঘটনার ছায়া তদন্ত করে বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোটের গঠিত তদন্ত দল এবং সাম্প্রতিক ও ৪ মাস আগের একটি হাতি হত্যার ঘটনাকে ঘিরে ছায়া তদন্ত পরিচলনা করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, কক্সাবাজারে ছায়া তদন্তে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের পানেরছড়া ও ধোয়াপালং রেঞ্জের ১৩ হাজার ৬৫ একর বনভূমির মধ্যে অর্ধেকের বেশি অবৈধ দখলে চলে গেছে। যদিও বন বিভাগ বনভূমি বেদখলের পরিমাণ উল্লেখ করছে ১২০২ একর। এর ওপর চারপাশে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা বনভূমির ওপর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনায় হাতি চলাচলের পথ (করিডোর) ও আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ায় আনুমানিক ১০০ একর জায়গায় প্রায় ৪০টি মতো হাতি আটকে পড়েছে। বনভূমিতে অবৈধ বসতবাড়ি, পানের বরজ, বিভিন্ন খেতখামার, ঘের, বিদ্যুৎ সংযোগসহ বিভিন্ন কর্মকা-ে হাতিসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর জন্য চরম হুমকি তৈরি করেছে। সেখানেও হাতির নিরাপদ আবাস, খাদ্য ও পানির সংকট তীব্র হওয়ায় এসব হাতি একপ্রকার উপায়হীন হয়ে মানুষের বসতবাড়ি ও ক্ষেতখামারে প্রায় প্রতিদিন হানা দিচ্ছে। এতে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে হাতি হত্যার মতো ঘটনায় জড়িয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, গত বছরের ৩১ আগস্ট ধোয়াপালং রেঞ্জের খুনিয়াপালং বন বিট এলাকায় একটি হাতিকে বিদ্যুতায়িত করে খ- খ- করে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হয়ে হাতি হত্যার ঘটনা অকপটে স্বীকার করেছেন। এটি একটি বড় উদাহরণ। ওই ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে মামলা করে বন বিভাগ। অপরদিকে ধোয়াপালং ও পানেরছড়া রেঞ্জের ১৩ হাজার ৬৫ একর বনভূমি সুরক্ষা, নিয়মিত টহল, বনায়ন সৃজন, অফিসিয়াল দৈনন্দিন কার্য সম্পাদনসহ বিভিন্ন কর্মকা- পরিচালনায় পর্যাপ্ত লোক নেই। যে কারণে বন্যপ্রাণী সুরক্ষার সক্ষমতার ব্যাপক ঘাটতি দেখা যায়। এছাড়া এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) সদস্যদের কোনো সম্মানির ব্যবস্থা না থাকায় তাদেরও সঠিক সময়ে সাড়া পাওয়া যায় না।
বন্যপ্রাণী হত্যার সাজায় আইনি দুর্বলতা রয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, এর বড় উদাহারণ, ধোয়াপালং-এর ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করে মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল বন বিভাগ। পরে ৩ জন আদালতে জামিন চাইলে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। সেই আসামিরা মাত্র ১৬ দিন পরই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আরও ৪ জন আসামি জেল না খেটেই আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন এখন পর্যন্ত ৪ জন আসামি পলাতক রয়েছেন।
এ সময় ছায়া তদন্তের আলোকে সমস্যা সমাধানে ১১ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সুপারিশগুলো হলো: ১. বন বিভাগ বন, বনভূমি এবং বন্যপ্রাণীর সুরক্ষা দিতে সুস্পষ্টভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার কারণ যাচাইয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
২. বিচারের আওতায় না আসা হাতি হত্যার ঘটনাগুলো সিআইডি বা পিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করিয়ে দোষীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. হাতি হত্যায় বনে অবৈধ দখলদারদের সম্পৃক্ততা সুষ্পষ্ট। বনভূমি থেকে অবৈধ দখলদারদের সরাতে হবে। প্রয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানান্তর করতে হবে।
৪. বন-বন্যপ্রাণী রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনিক বডিগুলোর সমন্বয়হীনতা রয়েছে। প্রয়োজনে জাতীয় কমিশন গঠন করে সরকারের সব বিভাগকে বন-বন্যপ্রাণী রক্ষায় যুক্ত করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
৫. বাণিজ্যমুখী বনায়নে বন্যপ্রাণীরা হুমকিতে পড়েছে। বাণিজ্য ছেড়ে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল রক্ষা বন বিভাগের মূল ম্যান্ডেট নিধারণ করতে হবে।
৬. প্রকল্পভিত্তিক সংরক্ষণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিতে ফেলেছে বন-বন্যপ্রাণীকে। প্রকল্প দিয়ে নয়, বন্যপ্রাণী রক্ষায় বন বিভাগকে নিয়মিত বাজেটে বরাদ্দ দিতে হবে।
৭. বন্যপ্রাণী রক্ষায় জনসচেতনতার যথেষ্ট সংকট রয়েছে। গণমাধ্যমকে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করে জনচেতনতা বাড়াতে হবে।
৮. সংরক্ষিত বন ও হাতির কোরিডোরের ভেতর বিদ্যুৎ লাইন, সড়ক, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণে বরাদ্দ বন্ধ করতে হবে। অতীতে দেওয়া সড়ক ও বিদ্যুৎ সংযোগ দ্রুত বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
৯. হাতি হত্যার আসামিদের জামিন বন্ধ করে এবং সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
১০. বন বিভাগে দ্রুত পর্যাপ্ত জনবলসহ সব প্রয়োজনীয় সুবিধা যুক্ত করতে হবে। অ্যালিফেন্ট রেস্পন্স টিমকে বেতনভুক্ত করে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
১১. সংরক্ষিত বনকে আর কোনো সরকারি, বেসরকারি সংস্থা বা ব্যক্তির জন্য বরাদ্দ দেওয়া যাবে না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

হাতি হত্যায় কারা?

আপডেট সময় : ০২:০৩:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধি : দিনে দিনে মানুষের হাতে বন্যপ্রাণী মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ছে। এর মধ্যে বেশি মারা পড়ছে বন্যহাতি। গত এক বছরে দেশজুড়ে মানুষের হাতে ৩৫টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ছায়া তদন্ত করেছে ৩৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের জোট ‘বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)’। ওই তদন্ত শেষে বন্যপ্রাণী রক্ষায় সরকারের প্রতি ১১ দফা সুপারিশ করেছে বিএনসিএ।
গতকাল মঙ্গলবার স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির অডিটরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন জোটের আহ্বায়ক পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, গত ২৮ নভেম্বর বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে জোট নেতাদের আলোচনায় বন, বনভূমি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বন বিভাগের নানান সীমাবদ্ধতার কথা উঠে আসে। তারই প্রেক্ষাপটে ২ ডিসেম্বর জোটের আহবায়ক কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, হাতি হত্যার ছায়া তদন্ত করার। পরে কক্সবাজারের রামু এবং শেরপুরের শ্রীবর্দীতে হাতি হত্যার ঘটনার ছায়া তদন্ত করে বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোটের গঠিত তদন্ত দল এবং সাম্প্রতিক ও ৪ মাস আগের একটি হাতি হত্যার ঘটনাকে ঘিরে ছায়া তদন্ত পরিচলনা করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, কক্সাবাজারে ছায়া তদন্তে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের পানেরছড়া ও ধোয়াপালং রেঞ্জের ১৩ হাজার ৬৫ একর বনভূমির মধ্যে অর্ধেকের বেশি অবৈধ দখলে চলে গেছে। যদিও বন বিভাগ বনভূমি বেদখলের পরিমাণ উল্লেখ করছে ১২০২ একর। এর ওপর চারপাশে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা বনভূমির ওপর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনায় হাতি চলাচলের পথ (করিডোর) ও আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ায় আনুমানিক ১০০ একর জায়গায় প্রায় ৪০টি মতো হাতি আটকে পড়েছে। বনভূমিতে অবৈধ বসতবাড়ি, পানের বরজ, বিভিন্ন খেতখামার, ঘের, বিদ্যুৎ সংযোগসহ বিভিন্ন কর্মকা-ে হাতিসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর জন্য চরম হুমকি তৈরি করেছে। সেখানেও হাতির নিরাপদ আবাস, খাদ্য ও পানির সংকট তীব্র হওয়ায় এসব হাতি একপ্রকার উপায়হীন হয়ে মানুষের বসতবাড়ি ও ক্ষেতখামারে প্রায় প্রতিদিন হানা দিচ্ছে। এতে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে হাতি হত্যার মতো ঘটনায় জড়িয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, গত বছরের ৩১ আগস্ট ধোয়াপালং রেঞ্জের খুনিয়াপালং বন বিট এলাকায় একটি হাতিকে বিদ্যুতায়িত করে খ- খ- করে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হয়ে হাতি হত্যার ঘটনা অকপটে স্বীকার করেছেন। এটি একটি বড় উদাহরণ। ওই ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে মামলা করে বন বিভাগ। অপরদিকে ধোয়াপালং ও পানেরছড়া রেঞ্জের ১৩ হাজার ৬৫ একর বনভূমি সুরক্ষা, নিয়মিত টহল, বনায়ন সৃজন, অফিসিয়াল দৈনন্দিন কার্য সম্পাদনসহ বিভিন্ন কর্মকা- পরিচালনায় পর্যাপ্ত লোক নেই। যে কারণে বন্যপ্রাণী সুরক্ষার সক্ষমতার ব্যাপক ঘাটতি দেখা যায়। এছাড়া এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) সদস্যদের কোনো সম্মানির ব্যবস্থা না থাকায় তাদেরও সঠিক সময়ে সাড়া পাওয়া যায় না।
বন্যপ্রাণী হত্যার সাজায় আইনি দুর্বলতা রয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, এর বড় উদাহারণ, ধোয়াপালং-এর ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করে মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল বন বিভাগ। পরে ৩ জন আদালতে জামিন চাইলে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। সেই আসামিরা মাত্র ১৬ দিন পরই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আরও ৪ জন আসামি জেল না খেটেই আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন এখন পর্যন্ত ৪ জন আসামি পলাতক রয়েছেন।
এ সময় ছায়া তদন্তের আলোকে সমস্যা সমাধানে ১১ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সুপারিশগুলো হলো: ১. বন বিভাগ বন, বনভূমি এবং বন্যপ্রাণীর সুরক্ষা দিতে সুস্পষ্টভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার কারণ যাচাইয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
২. বিচারের আওতায় না আসা হাতি হত্যার ঘটনাগুলো সিআইডি বা পিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করিয়ে দোষীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. হাতি হত্যায় বনে অবৈধ দখলদারদের সম্পৃক্ততা সুষ্পষ্ট। বনভূমি থেকে অবৈধ দখলদারদের সরাতে হবে। প্রয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানান্তর করতে হবে।
৪. বন-বন্যপ্রাণী রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনিক বডিগুলোর সমন্বয়হীনতা রয়েছে। প্রয়োজনে জাতীয় কমিশন গঠন করে সরকারের সব বিভাগকে বন-বন্যপ্রাণী রক্ষায় যুক্ত করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
৫. বাণিজ্যমুখী বনায়নে বন্যপ্রাণীরা হুমকিতে পড়েছে। বাণিজ্য ছেড়ে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল রক্ষা বন বিভাগের মূল ম্যান্ডেট নিধারণ করতে হবে।
৬. প্রকল্পভিত্তিক সংরক্ষণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিতে ফেলেছে বন-বন্যপ্রাণীকে। প্রকল্প দিয়ে নয়, বন্যপ্রাণী রক্ষায় বন বিভাগকে নিয়মিত বাজেটে বরাদ্দ দিতে হবে।
৭. বন্যপ্রাণী রক্ষায় জনসচেতনতার যথেষ্ট সংকট রয়েছে। গণমাধ্যমকে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করে জনচেতনতা বাড়াতে হবে।
৮. সংরক্ষিত বন ও হাতির কোরিডোরের ভেতর বিদ্যুৎ লাইন, সড়ক, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণে বরাদ্দ বন্ধ করতে হবে। অতীতে দেওয়া সড়ক ও বিদ্যুৎ সংযোগ দ্রুত বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
৯. হাতি হত্যার আসামিদের জামিন বন্ধ করে এবং সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
১০. বন বিভাগে দ্রুত পর্যাপ্ত জনবলসহ সব প্রয়োজনীয় সুবিধা যুক্ত করতে হবে। অ্যালিফেন্ট রেস্পন্স টিমকে বেতনভুক্ত করে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
১১. সংরক্ষিত বনকে আর কোনো সরকারি, বেসরকারি সংস্থা বা ব্যক্তির জন্য বরাদ্দ দেওয়া যাবে না।