ঢাকা ০৯:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

হাতিরঝিল থানার ওসিসহ ৭ জনের নামে গণধর্ষণ-অপহরণের অভিযোগ

  • আপডেট সময় : ০২:৩৪:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৭৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর হাতিলঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রশিদ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ইন্সপেক্টর গোলাম মোক্তার আশরাফ উদ্দিনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ তুলে একটি মামলা দায়েরের আবেদন করা হয়েছে। ঢাকার ৩ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক জুলফিকার হায়াতের আদালতে এক সন্তানের মা ভুক্তভোগী ওই নারী (৩৩) এ মামলার আবেদন করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার আদালত সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এদিন আদালত বাদিনীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো আদেশ হয়নি বলে নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটরই মাহমুদা আক্তার। মামলার অপর আসামিরা হলেন- তানীম রেজা বাপ্পি, সাজিদা তানীম, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামাল ও সাইফুল ইসলাম। মামলায় বলা হয়, বাদিনী একজন ছেলে সন্তানের জননী। গত ১ মার্চ ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে আসামি তানীম রেজা বাপ্পি, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামাল ও ওসি আব্দুর রশিদসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা করেন। ট্রাইব্যুনাল ওসি আব্দুর রশিদকে বাদ দিয়ে তানীম রেজা বাপ্পি, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামালসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানা ঢাকাকে মামলাটি এজাহার হিসাবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ী হাতিরঝিল থানা ৫২ (০৩) ২০২২ এজাহার নেয়। বর্তমানে ওই মামলাটি পিবিআইয়ের তদন্তাধীন। এই মামলা হওয়ার পর আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা মামলাটি তুলে নিতে এবং আসামি তানীম রেজা বাপ্পি ও জাবেল হোসেন পাপনকে জামিন করে আনতে চাপ দেন। না হলে বাদিনীর নাবালক ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান। এরপর ২৩ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আসামি তানীম রেজা বাপ্পি, মো. জামাল ও সাইফুল ইসলাম বাদিনীর বাসায় এসে বাদিনীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বলে। বাদিনী তা অস্বীকার করিলে আসামি মো. জামাল বাদিনীর ছেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখেন এবং তানীম রেজা বাপ্পি ও সাইফুল ইসলাম অস্ত্রের মুখে বাদিনীকে ধর্ষণ করেন। একইভাবে চলতি বছর ৩১ মে রাতে তারা আরও অনেক বার বদিনীকে ধর্ষণ করেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ৫ জুন সকাল সাড়ে ৮দিকে বাদিনীর বাসায় এসে আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা বাদিনীকে জোরপূর্বক পিবিআই অফিসে নিয়ে যায় এবং আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিন বাদিনীর কাছ থেকে জোরপূর্বক কয়েকটি সাদা কাগজ ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন ও তাদের শিখিয়ে দেওয়া মনগড়া বক্তব্য অডিও রেকর্ড করেন এবং লিখিত নেন। এরপর গত ২১ জুলাই বাদিনী শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করলে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারে তিনি সাত সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। বাদিনী নিরূপায় হয়ে গত ২৬ জুলাই পুলিশ হেডকোয়াটার্সে আইজিপি বরাবর ঘটনা তুলে ধরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বাদিনীর অভিযোগের বিষয়ে আসামিরা জানতে পেরে আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা গত ২৮ জুলাই বিকালে বাদিনীকে অস্ত্রের মুখে বাসা হতে তুলে নিয়ে খিলগাঁও থানার দক্ষিণ গোড়ান ছাপড়া মসজিদ এলাকায় নগর উন্নয়ন সমাজ সেবা সংস্থায় (সাবেক সালেহা মেডিকেল সেন্টার) নিয়ে নার্স ও সেখানকার চিকিৎসক দিয়ে তার অ্যাবরশন করান। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আসামিরা বাদিকে পতিতা বানানোর হুমকি এবং সোস্যাল মিডিয়াই অপপ্রচার চালিয়ে বাদিনীকে হেয় প্রতিপন্ন করাসহ হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হাতিরঝিল থানার ওসিসহ ৭ জনের নামে গণধর্ষণ-অপহরণের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০২:৩৪:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর হাতিলঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রশিদ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ইন্সপেক্টর গোলাম মোক্তার আশরাফ উদ্দিনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ তুলে একটি মামলা দায়েরের আবেদন করা হয়েছে। ঢাকার ৩ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক জুলফিকার হায়াতের আদালতে এক সন্তানের মা ভুক্তভোগী ওই নারী (৩৩) এ মামলার আবেদন করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার আদালত সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এদিন আদালত বাদিনীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো আদেশ হয়নি বলে নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটরই মাহমুদা আক্তার। মামলার অপর আসামিরা হলেন- তানীম রেজা বাপ্পি, সাজিদা তানীম, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামাল ও সাইফুল ইসলাম। মামলায় বলা হয়, বাদিনী একজন ছেলে সন্তানের জননী। গত ১ মার্চ ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে আসামি তানীম রেজা বাপ্পি, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামাল ও ওসি আব্দুর রশিদসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা করেন। ট্রাইব্যুনাল ওসি আব্দুর রশিদকে বাদ দিয়ে তানীম রেজা বাপ্পি, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামালসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানা ঢাকাকে মামলাটি এজাহার হিসাবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ী হাতিরঝিল থানা ৫২ (০৩) ২০২২ এজাহার নেয়। বর্তমানে ওই মামলাটি পিবিআইয়ের তদন্তাধীন। এই মামলা হওয়ার পর আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা মামলাটি তুলে নিতে এবং আসামি তানীম রেজা বাপ্পি ও জাবেল হোসেন পাপনকে জামিন করে আনতে চাপ দেন। না হলে বাদিনীর নাবালক ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান। এরপর ২৩ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আসামি তানীম রেজা বাপ্পি, মো. জামাল ও সাইফুল ইসলাম বাদিনীর বাসায় এসে বাদিনীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বলে। বাদিনী তা অস্বীকার করিলে আসামি মো. জামাল বাদিনীর ছেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখেন এবং তানীম রেজা বাপ্পি ও সাইফুল ইসলাম অস্ত্রের মুখে বাদিনীকে ধর্ষণ করেন। একইভাবে চলতি বছর ৩১ মে রাতে তারা আরও অনেক বার বদিনীকে ধর্ষণ করেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ৫ জুন সকাল সাড়ে ৮দিকে বাদিনীর বাসায় এসে আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা বাদিনীকে জোরপূর্বক পিবিআই অফিসে নিয়ে যায় এবং আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিন বাদিনীর কাছ থেকে জোরপূর্বক কয়েকটি সাদা কাগজ ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন ও তাদের শিখিয়ে দেওয়া মনগড়া বক্তব্য অডিও রেকর্ড করেন এবং লিখিত নেন। এরপর গত ২১ জুলাই বাদিনী শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করলে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারে তিনি সাত সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। বাদিনী নিরূপায় হয়ে গত ২৬ জুলাই পুলিশ হেডকোয়াটার্সে আইজিপি বরাবর ঘটনা তুলে ধরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বাদিনীর অভিযোগের বিষয়ে আসামিরা জানতে পেরে আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা গত ২৮ জুলাই বিকালে বাদিনীকে অস্ত্রের মুখে বাসা হতে তুলে নিয়ে খিলগাঁও থানার দক্ষিণ গোড়ান ছাপড়া মসজিদ এলাকায় নগর উন্নয়ন সমাজ সেবা সংস্থায় (সাবেক সালেহা মেডিকেল সেন্টার) নিয়ে নার্স ও সেখানকার চিকিৎসক দিয়ে তার অ্যাবরশন করান। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আসামিরা বাদিকে পতিতা বানানোর হুমকি এবং সোস্যাল মিডিয়াই অপপ্রচার চালিয়ে বাদিনীকে হেয় প্রতিপন্ন করাসহ হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেন।