ঢাকা ০৯:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত, রোজায় স্কুল খোলা

  • আপডেট সময় : ০১:৩৪:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোজায় দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়। সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে রোজার মধ্যে দেশের সব স্কুল খোলা থাকবে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম। রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ। সঙ্গে ছিলেন রিটকারী অ্যাডভোকেট মাহমুদা খানম। শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল রোজায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন মসলিম দেশের উদাহরণ তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের কপি আদালতে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সৌদি আরবে ২৮ মার্চের আগ পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। ২৮ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ইরানে বন্ধ থাকবে মাত্র দুদিন। এছাড়া তিনি তুরস্ক, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মালয়েশিয়াসহ আরও কয়েকটি রাষ্ট্রের উদাহরণ দেন। এরপর শুনানিতে অ্যাডভোকেট এ কে এম ফয়েজ এলে তাকে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কী কারণে তারা বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে চান। আইনজীবী ফয়েজ বলেন, “আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিত ভিন্ন। আমাদের দেশে শিশুদের সঙ্গে অভিভাবকরাও জড়িত। তাদেরও ভোগান্তি হয়।” তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, “কেন? মায়েরা তো শাড়ি পরে ঘুরে বেড়ান।” এরপর তিনি হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।
বিতর্ক যেভাবে আদালতে: আগের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও রমজান মাস বিদ্যালয়ের ছুটির তালিকায় ছিল। রোজায় স্কুল বন্ধ রাখতে এ বছরের ছুটির তালিকায় ১০ মার্চ থেকে মাধ্যমিক ও নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশনা ছিল। আর ১১ মার্চ থেকে ছুটি শুরু হওয়ার কথা ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তবে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ করতে ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি আংশিক সংশোধন করে রোজায় বিদ্যালয়ে ক্লাস চালুর রাখার সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ করতে রোজার প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখা হবে। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, আগামী ১১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালু থাকবে। তাদের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী মাহমুদা খানম। সেই আবেদনের ওপর রোববার শুনানি করে রোজায় স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয় বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ। রিটকারী অ্যাডভোকেট মাহমুদা খানম সেদিন সাংবাদিকদের বলেন, রমজানে স্কুলের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলে যেতে এবং বাড়ি ফিরতে যানজটসহ নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই তাদের পক্ষে রোজায় বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করা কষ্টকর।
“বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পর আদালত সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রথম রোজা থেকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে দুই মাসের রুল জারি করেছেন।”
এরপর হাই কোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার বিষয়টি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাই কোর্টের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ না দিয়ে বিষয়টি মঙ্গলবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রাখেন। আইনজীবী ফয়েজ সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “হাই কোর্টের আদেশ আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আগামীকাল নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে।” তাহলে মঙ্গলবার রোজার প্রথম দিন স্কুল খোলা থাকবে না বন্ধ, সেই প্রশ্নে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “হাই কোর্টের আদেশ যেহেতু স্থগিত হয়নি, সেহেতু স্কুল বন্ধ থাকবে।” আদালতের এমন আদেশের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না আসায় বিভ্রান্তিতে পড়েন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা। শেষ মুহূর্তে বার্তা পাঠিয়ে মঙ্গলবার ঢাকার কোনো কোনো স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানায় কোনো কোনো স্কুল। আবার স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্ত না পেয়ে সকাল বেলায় ঠিকই ক্লাসে যেতে হয় কোনো কোনো স্কুলের শিক্ষার্থীদের। সব মিলিয়ে রোজার প্রথম দিন এমন ভোগান্তিতে পড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবকরা। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিষয়টি নিয়ে শুনানির পর স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত আসে।
স্কুল কতদিন খোলা: আপিল বিভাগের আদেশের পর আবার রমজানে স্কুল খোলা রাখার সময়সূচি জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা থাকবে আগামী ১৪ রমজান (২৫ মার্চ) পর্যন্ত। আর ১০ রমজান (২১ মার্চ) পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রেখে পাঠদান চালু রাখতে হবে।
অন্যদিকে পবিত্র রমজান মাসে ডাবল শিফট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রমের সময়সূচি পরিবর্তন বা সমন্বয় করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ নির্দেশনা দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়, গত সোমবার (১১ মার্চ) থেকে আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৫ দিন সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এরপর যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডাবল শিফট চালু রয়েছে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা প্রভাতী ও দিবা শিফটে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নিজেদের সুবিধাজনক উপায়ে সময়সূচি নির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবেন বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনার বিষয়ে নতুন করে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে আগের নির্দেশনা অনুযায়ী মাদ্রাসাগুলো পুরো রমজান মাস জুড়েই বন্ধ থাকবে।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত, রোজায় স্কুল খোলা

আপডেট সময় : ০১:৩৪:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোজায় দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়। সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে রোজার মধ্যে দেশের সব স্কুল খোলা থাকবে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম। রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ। সঙ্গে ছিলেন রিটকারী অ্যাডভোকেট মাহমুদা খানম। শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল রোজায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন মসলিম দেশের উদাহরণ তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের কপি আদালতে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সৌদি আরবে ২৮ মার্চের আগ পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। ২৮ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ইরানে বন্ধ থাকবে মাত্র দুদিন। এছাড়া তিনি তুরস্ক, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মালয়েশিয়াসহ আরও কয়েকটি রাষ্ট্রের উদাহরণ দেন। এরপর শুনানিতে অ্যাডভোকেট এ কে এম ফয়েজ এলে তাকে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কী কারণে তারা বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে চান। আইনজীবী ফয়েজ বলেন, “আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিত ভিন্ন। আমাদের দেশে শিশুদের সঙ্গে অভিভাবকরাও জড়িত। তাদেরও ভোগান্তি হয়।” তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, “কেন? মায়েরা তো শাড়ি পরে ঘুরে বেড়ান।” এরপর তিনি হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।
বিতর্ক যেভাবে আদালতে: আগের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও রমজান মাস বিদ্যালয়ের ছুটির তালিকায় ছিল। রোজায় স্কুল বন্ধ রাখতে এ বছরের ছুটির তালিকায় ১০ মার্চ থেকে মাধ্যমিক ও নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশনা ছিল। আর ১১ মার্চ থেকে ছুটি শুরু হওয়ার কথা ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তবে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ করতে ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি আংশিক সংশোধন করে রোজায় বিদ্যালয়ে ক্লাস চালুর রাখার সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ করতে রোজার প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখা হবে। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, আগামী ১১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালু থাকবে। তাদের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী মাহমুদা খানম। সেই আবেদনের ওপর রোববার শুনানি করে রোজায় স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয় বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ। রিটকারী অ্যাডভোকেট মাহমুদা খানম সেদিন সাংবাদিকদের বলেন, রমজানে স্কুলের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলে যেতে এবং বাড়ি ফিরতে যানজটসহ নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই তাদের পক্ষে রোজায় বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করা কষ্টকর।
“বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পর আদালত সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রথম রোজা থেকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে দুই মাসের রুল জারি করেছেন।”
এরপর হাই কোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার বিষয়টি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাই কোর্টের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ না দিয়ে বিষয়টি মঙ্গলবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রাখেন। আইনজীবী ফয়েজ সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “হাই কোর্টের আদেশ আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আগামীকাল নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে।” তাহলে মঙ্গলবার রোজার প্রথম দিন স্কুল খোলা থাকবে না বন্ধ, সেই প্রশ্নে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “হাই কোর্টের আদেশ যেহেতু স্থগিত হয়নি, সেহেতু স্কুল বন্ধ থাকবে।” আদালতের এমন আদেশের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না আসায় বিভ্রান্তিতে পড়েন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা। শেষ মুহূর্তে বার্তা পাঠিয়ে মঙ্গলবার ঢাকার কোনো কোনো স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানায় কোনো কোনো স্কুল। আবার স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্ত না পেয়ে সকাল বেলায় ঠিকই ক্লাসে যেতে হয় কোনো কোনো স্কুলের শিক্ষার্থীদের। সব মিলিয়ে রোজার প্রথম দিন এমন ভোগান্তিতে পড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবকরা। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিষয়টি নিয়ে শুনানির পর স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত আসে।
স্কুল কতদিন খোলা: আপিল বিভাগের আদেশের পর আবার রমজানে স্কুল খোলা রাখার সময়সূচি জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা থাকবে আগামী ১৪ রমজান (২৫ মার্চ) পর্যন্ত। আর ১০ রমজান (২১ মার্চ) পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রেখে পাঠদান চালু রাখতে হবে।
অন্যদিকে পবিত্র রমজান মাসে ডাবল শিফট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রমের সময়সূচি পরিবর্তন বা সমন্বয় করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ নির্দেশনা দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়, গত সোমবার (১১ মার্চ) থেকে আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৫ দিন সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এরপর যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডাবল শিফট চালু রয়েছে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা প্রভাতী ও দিবা শিফটে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নিজেদের সুবিধাজনক উপায়ে সময়সূচি নির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবেন বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনার বিষয়ে নতুন করে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে আগের নির্দেশনা অনুযায়ী মাদ্রাসাগুলো পুরো রমজান মাস জুড়েই বন্ধ থাকবে।