হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের শায়েস্তানগরে সংঘর্ষ ও মারামারির ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা। মামলায় বিএনপির ৮৭ নেতার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দেড়শ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পাঁচদিন পর শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহি বাদী হয়ে মামলাটি করেন বলে জানান হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বদিউজ্জামান। এই মামলায় জেলা যুবদলের নেতা কারাগারে থাকলেও তাকে আসামি করা হয়েছে বলে বিএনপি অভিযোগ করেছে। ২০ আগস্ট বিকালে হবিগঞ্জ শহরে বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে জেলা আওয়ামী লীগ। এ সময় তাদের বিক্ষোভ মিছিলটি শায়েস্তানগর এলাকায় পৌঁছালে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সেই ঘটনাতেই শুক্রবার রাতে মামলা করেছেন ছাত্রলীগ নেতা। এর আগের দিন ১৯ অগাস্টও বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সেদিন বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে। এ সময় শায়েস্তানগর এলাকায় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে ৩৫ পুলিশ সদস্যসহ বিএনপির প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। ওইদিন পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জেলা যুবদলের সহসভাপতি তৌফিকুল ইসলাম রুবেলকে আটক করে। পরদিন ২০ আগস্ট তাকে ৫৪ ধারায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ওই ঘটনায় দুদিন পরে ২১ অগাস্ট পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। সেই মামলায় ৮০ নম্বর আসামি করা হয় তৌফিকুল ইসলাম রুবেলকে। ৫৪ ধারা মামলায় তার জামিন হলেও পুলিশের দায়ের করা হামলা ও বিস্ফোরক আইনের দুটি মামলায় তিনি এক সপ্তাহ ধরে হবিগঞ্জ কারাগারে রয়েছেন। ২০ অগাস্ট যখন বিএনপি আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে তখন যুবদল নেতা তৌফিকুল ইসলাম রুবেল কারাগারে ছিলেন। কিন্তু শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগ নেতার করা মামলাও আসামি হয়েছেন তিনি। মামলায় ৩৭ নম্বর আসামি হিসেবে তার নাম রয়েছে। জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক জালাল আহমেদ বলেন, “তৌফিকুল ইসলাম রুবেলকে ১৯ অগাস্ট পুলিশ আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। যখন তিনি কারাগারে ছিলেন, তখনকার একটি ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে।” এ বিষয়ে মামলার বাদী মহিবুর রহমান মাহী বলেন, “ঘটনার দিন একসঙ্গে বিএনপির শত শত নেতা-কর্মী আমাদের ওপর হামলা চালায়। যে কারণে হয়তবা ভুল হতে পারে।” হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বদিউজ্জামান বলেন, “তৌফিকুল ইসলামকে ১৯ অগাস্ট আটক করে ২০ তারিখ কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে মহিবুর রহমান মাহির মামলায় কাকে আসামি করা হয়েছে সেটি বাদীই বলতে পারবেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় কাউকে আসামি করে থাকলে তা পুলিশের তদন্তে বের হয়ে আসবে।”
হবিগঞ্জে সংঘর্ষ: কারাগারে থেকেও আসামি যুবদল নেতা
জনপ্রিয় সংবাদ


























